শেষ আপডেট: 15th December 2022 12:52
দ্য ওয়াল ব্যুরো: চিন (China) নিয়ে সংসদে বৃহস্পতিবারও আলোচনার সুযোগ দিল না সরকার (Government)। বুধবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সংসদের উভয় কক্ষে অরুণাচল সীমান্তে দুই দেশের সেনার সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে বিবৃতি দেন। বলেন, চিনা সেনাদের উপযুক্ত জবাব দিয়েছে ভারতীয় জওয়ানেরা। আমাদের কোনও ক্ষতি করতে পারেনি চিনের আর্মি।
কিন্তু বিরোধীরা চায় চিন সীমান্ত নিয়ে বিশদে আলোচনা হোক সংসদে। আজ রাজ্যসভায় কংগ্রেসের দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গে আলোচনার দাবি জানিয়ে বলেন, ‘সরকার কেন আলোচনা করতে দিতে চায় না? আসলে সরকার চিনের চশমা দিয়ে চিনকে দেখছে।’
রাজ্যসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury) বলেন, ১৯৬২ সালে চিন-ভারত যুদ্ধের সময় প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ১৬৫ জন সাংসদকে সংসদে বলার সুযোগ দিয়েছিলেন। প্রসঙ্গত, কংগ্রেস গতকালও চিন সীমান্ত নিয়ে আলোচনার দাবি জানিয়েছিল। বস্তুত অরুণাচলের গত শুক্রবারের সংঘাতের খবর জানাজানি হওয়ার আগেই সংসদ নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকে কংগ্রেস সহ সব বিরোধী দল চিন নিয়ে অধিবেশনে আলোচনা করার দাবি জানায়। কয়েকটি দলের অভিযোগ, পূর্ব লাদাখে চিন ভারতের অনেকটা জমি দখল করে রেখেছে।
গতকাল চিন নিয়েই লোকসভায় সনিয়া গান্ধী তাঁর আসনে বসে অধীর চৌধুরী এবং আরও কয়েকজন সাংসদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। সেই সময় লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতির উদ্দেশে বলেন, ‘ম্যাডাম, অধিবেশন কক্ষের আসনে বসে বৈঠক করার অনুমতি নেই। বৈঠক করার পৃথক ব্যবস্থা অধিবেশন কক্ষের বাইরে আছে।’
স্পিকারের এই মন্তব্যকে কংগ্রেস শুধু নয়, অন্য বিরোধী দলগুলিও আপত্তিজনক বলে মনে করে। সনিয়া দীর্ঘদিনের সংসদ সদস্য এবং কংগ্রেসের সংসদীয় দলের নেত্রী। তিনি দলের সাংসদদের সঙ্গে কৌশল নিয়ে কিছু সময় আসনে বসে কথা বলায় কী এমন মহাভারত অশুদ্ধ হয়েছে! ১৮টি বিরোধী দল স্পিকারের মন্তব্যের প্রতিবাদে অধিবেশন কক্ষ ত্যাগ করে গতকাল। সাম্প্রতিককালে সংসদে বিরোধীদের এমন ঐক্যও অভূতপূর্ব।
আজ মোদী সরকারকে নিশানা করতে গিয়ে চিন নিয়ে নেহরুর প্রসঙ্গ টানেন অধীর। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কথায় কথায় প্রথম প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনায় মুখর হন। কাশ্মীর নীতি, ধর্মনিরপেক্ষতা থেকে চিনের সঙ্গে সম্পর্কের প্রশ্নে নেহরুর ভূমিকাকে পদে পদে কাঠগড়ায় তুলেছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।
আজ অধীর তাই চিনের সঙ্গে সীমানা বিরোধের থেকেও বড় বিষয়, ১৯৬২-র যুদ্ধের সময় নেহরুর সংসদের সামনে গোটা পরিস্থিতির বর্ণনা এবং সাংসদদের বলতে দেওয়ার দৃষ্টান্ত মোদী সরকারকে স্মরণ করিয়ে দেন। কিন্তু স্পিকার ওম বিড়লা আজও তাঁর দাবি খারিজ করে দেন।
অধীর বলেন, ‘আমরা ভারত-চিন সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার দাবি জানিয়ে আসছি। ১৯৬২ সালে, যখন ভারত-চিন যুদ্ধ হয়েছিল, তখন জওহরলাল নেহেরু এই হাউসে ১৬৫ জন সাংসদকে কথা বলার সুযোগ দিয়েছিলেন এবং তারপরে দেশের কী করণীয় সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।’
তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দোপাধ্যায়ও ভারত-চিন সীমান্ত অচলাবস্থা নিয়ে আলোচনা চেয়ে উঠে দাঁড়ান এবং অন্যান্য দলের সাংসদের সঙ্গে ওয়াক আউট করেন।
গত শুক্রবার অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং-এ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারতীয় ও চিনা সৈন্যদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে আজও বিরোধীরা গলা চড়ায়। সরকারও ততোধিক জোরের সঙ্গে দাবি অস্বীকার করে। সরকার পক্ষের বক্তব্য, এই বিষয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সরকারের বক্তব্য জানিয়ে দিয়েছেন। কংগ্রেস সভাপতি খাড়্গের দাবি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর বিবৃতিতে সীমান্তে চিনের সামরিক নির্মাণ বিষয়ে কোনও কথা নেই। ওই বিবৃতি অসম্পূর্ণ।
গোধরা: ইট ছোড়ার অভিযোগে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তের জামিন মিলল ১৭ বছর পর