শেষ আপডেট: 5th January 2025 15:18
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আজও মমতাকে (Mamata Banerjee) বহিষ্কারের প্রায়শ্চিত্ত করতে হচ্ছে। প্রায় তিন দশক পেরিয়ে গেলেও আফসোস যাচ্ছেই না কংগ্রেস নেতাদের। শনিবার বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য বলছিলেন, 'সেদিন মমতাকে বহিষ্কার করা ঠিক হয়নি। আজও প্রায়শ্চিত্ত করতে হচ্ছে কংগ্রেসকে (Congress)।' স্বাভাবিকভাবেই এই মন্তব্যের পর রাজ্য-রাজনীতি তোলপাড়। তৃণমূলও সুযোগ পেয়ে আসরে নেমেছে।
কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) তো রোববার সকালেও স্পষ্ট জানিয়েছেন, কংগ্রেস মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াইয়ের স্পিরিটকে মর্যাদা না দিলেও মানুষ তাঁকে মর্যাদা দিয়েছে। তিনি নতুন দল প্রতিষ্ঠা করে লড়াই করেছেন। মানুষ স্বীকৃতি দিয়েছে। বলেন, 'যদি কংগ্রেস রাজনীতিতেও দেখেন, অপ্রিয় সত্যি এই যে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুও (Netaji Subhas Chandra Boase) কিন্তু আলাদা দল নিয়ে দলীয় রাজনীতিতে সফল হয়তে পারেননি। তিনি একজন ঐতিহাসিক বিপ্লবী। স্বাধীনতা সংগ্রামী। কিন্তু সংসদীয় রাজনীতিতে দল গড়ে ব্যর্থ হয়েছেন। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একমাত্র সফল। যিনি দল প্রতিষ্ঠা করে বাম জমানার পতন ঘটিয়েছেন।'
তৃণমূল নেতার এহেন মন্তব্যকে হেসেই উড়িয়ে দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury)। তাচ্ছিল্যের সুরে বলেছেন, 'পাগলে কী না বলে, ছাগলে কী না খায়। এটুকুই মন্তব্য করতে পারি।' শুধু তাই নয়, প্রদীপ ভট্টাচার্যের 'প্রায়শ্চিত্ত' মন্তব্যের প্রসঙ্গে পরিষ্কার করে জানান, 'ওঁর ব্যাপারে আলাদা করে কিছু বলতে পারব না। উনি বরিষ্ঠ নেতা। তাঁর আমলেই মমতা বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। তখন তো আমরা কংগ্রেস দলের সেই জায়গায় ছিলাম না। তাই তাঁরাই ভাল বলতে পারবেন।'
ইতিহাস ঘেঁটে বোঝানোর সুরে অধীর আরও বলেন, 'আমার অভিজ্ঞতায় যতটুকু দেখেছি, সনিয়া গান্ধী ২০১১ সালে এই তৃণমূলের সঙ্গে যখন জোটের কথা হচ্ছে, তখন আমাদের জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। আমরা বলেছিলাম যে হ্যাঁ জোট করা দরকার। সেই নির্বাচনে দু'একটা নির্বাচনী ক্ষেত্রে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই হয়েছিল। কিন্তু গোটা বাংলা জুড়ে সেদিন সোনিয়া গান্ধীর ব্যক্তিগত নির্দেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের সঙ্গে কংগ্রেসের সমঝোতা হয়েছিল। তখন মমতার প্রচারের জন্য কংগ্রেস থেকে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছিল। হেলিকপ্টার বরাদ্দ করা হয়েছিল। সেই মমতাই '১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর কংগ্রেসের নিধনযজ্ঞে অবতীর্ণ হলেন। রাজীব গান্ধী না থাকলে মমতা, মমতা হতেন না। সনিয়া গান্ধী না থাকলে মুখ্যমন্ত্রী হতেন না।'
অধীরের কথায়, 'সামনে রজ্যসভার ভোট আছে। আজ অনেকের আফসোস হতে পারে। কিন্তু আগামী দিনে ইতিহাস প্রমাণ করবে, মমতা শুধু কংগ্রেস নয়, গোটা বাংলার শিক্ষা, সভ্যতা, সংস্কৃতির নিধনযজ্ঞে নেমে বর্বরদের প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন।'