শেষ আপডেট: 2nd September 2023 17:18
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের ইস্তেহারেও 'এক দেশ, এক ভোট' ব্যবস্থা চালু করার কথা বলেছিল বিজেপি। এবার ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগেই এই ব্যবস্থা চালু করার জন্য প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে ইতিমধ্যেই কমিটি গঠন করে ফেলেছে গেরুয়া শিবির। শনিবার সেই কমিটির ৮ জন সদস্যের নাম ঘোষণা করল কেন্দ্রীয় সরকার (One nation One election committee)। তাতেই দেখা গেল, সেই কমিটিতে ঠাঁই পেয়েছেন কংগ্রেসের লোকসভার সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury)।
কমিটিতে রয়েছেন বিজেপি নেতা তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ, প্রাক্তন মুখ্য ভিজিলেন্স কমিশনার সঞ্জয় কোঠারি, আইনজীবী হরিশ সালভে, এবং ডঃ সুভাষ সি কাশ্যপ, যিনি লোকসভার প্রাক্তন সেক্রেটারি জেনারেল।
https://twitter.com/ANI/status/1697953394965832076?ref_src=twsrc%5Etfw%7Ctwcamp%5Etweetembed%7Ctwterm%5E1697953394965832076%7Ctwgr%5Eec73212a2f0f851c5996440585abad90ff6ac505%7Ctwcon%5Es1_&ref_url=https%3A%2F%2Ftv9bangla.com%2Findia%2Fcentre-s-one-nation-one-election-panel-consists-of-amit-shah-adhir-chowdhury-azad-895181.html
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একাধিকবার 'এক দেশ, এক ভোট' ব্যবস্থা চালু করার কথা বলেছেন। পদ্ম শিবিরের নথিপত্রেও ঘুরেফিরে বিষয়টি এসেছে। তবে আসন্ন লোকসভা ভোটের আগে এই বিষয়টি নিয়ে সংসদে বিল পাস করানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছে কেন্দ্রের মোদী সরকার।
সংসদে বিল পাশ করানোর পর দেশের দুই তৃতীয়াংশ অর্থাৎ ২০টি বিধানসভায় সেটি অনুমোদন করাতে হবে। বিজেপি এখন ১৪টি রাজ্যে একক অথবা জোট সরকার চালাচ্ছে। তাছাড়া, নয়া ব্যবস্থা চালুর জন্য শুধু সংবিধান সংশোধন করলেই চলবে না, জনপ্রতিনিধিত্ব আইন এবং সংসদীয় ব্যবস্থাতেও অনেক পরিবর্তন আনতে হবে। যদিও এই সময় সংশোধনী পাশ করানো বিজেপি সরকারের কাছে জলভাত। তবে এতকিছু প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও অনেকেই মনে করছেন, সরকার নিশ্চয়ই বিকল্প কিছু রাস্তা বের করে রেখেছে। যদি ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গেই যৌথ ভোট কার্যকরের ভাবনা না থাকত তাহলে এখন তড়িঘড়ি কেন কমিটি গড়া হল আর কেনই বা এক মাসের ব্যবধানে সরকার ফের সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডেকেছে।
তবে রাজনৈতিক মহলের অন্য একটি ব্যাখ্যা হল, ২০২৪-এ লোকসভার সঙ্গে যদি বিধানসভার ভোট নাও করানো হয়, তাহলেও বিজেপি লাভবান হতে পারে। অন্তত পদ্ম শিবির তেমনই মনে করছে। তারা নয়া ব্যবস্থার ভাল দিকগুলি মানুষের কাছে প্রচার করে ডবল ইঞ্জিন সরকার গড়ার কথা আরও জোরালো ভাবে বলবে।
এখন প্রশ্ন হল, ‘এক দেশ এক ভোট’ ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর কোনও রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকারে যদি রাজনৈতিক বা সাংবিধানিক সংকট দেখা দেয় তখন কী হবে? তখন কি মধ্যবর্তী নির্বাচন হবে? বিশেষজ্ঞদের অভিমত, কেন্দ্র ও রাজ্য, দুই ক্ষেত্রেই বিকল্প সরকার গঠনের চেষ্টা করা হবে। যদি তা সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি শাসন কায়েম হবে। তবে বিধানসভা চালু থাকবে। পাঁচ বছর পরই বিধানসভার ভোট হবে। কেন্দ্রীয় সরকারে যেহেতু রাষ্ট্রপতি শাসনের সুযোগ নেই, সেখানে বিকল্প সরকার গঠনই একমাত্র পথ।
‘এক দেশ এক ভোট’ ব্যবস্থার সুবিধাগুলি কী কী?
সাধারণভাবে খরচকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যেমন ইনস্টিটিউট অফ মিডিয়া রিসার্চের রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে রাজনৈতিক দল এবং সরকার ও নির্বাচন কমিশন মিলিয়ে আনুমানিক ৬০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। একত্রে ভোট হলে খরচ অনেক কমে যাবে। বিশেষ করে লোকবল, যানবাহন, নিরাপত্তা ইত্যাদি খাতে খরচে অনেকটাই লাগাম দেওয়া যাবে।
‘এক দেশ এক ভোট’-এর সমর্থকদের আরও মত হল, শুধু খরচই নয়। আলাদা নির্বাচন মানে প্রতি ক্ষেত্রে বিপুল সংখ্যায় জনবল অর্থাৎ কর্মী-অফিসারদের কাজে লাগাতে হয়। ফলে সরকারি কাজ ব্যহত হয়। এছাড়াও আদর্শ আচরণবিধি প্রয়োগের ফলেও সরকারি কাজ থমতে থাকে। এক সঙ্গে ভোট হলে পাঁচ বছরে একবার মাস দেড়েকের জন্য আদর্শ আচরণ বিধি চালু থাকবে।
‘এক দেশ এক ভোট’ ব্যবস্থার অসুবিধাগুলি কী কী?
প্রস্তাবিত ব্যবস্থার অনেক সমস্যাও আছে। প্রধান সমস্যা হল, ‘এক দেশ এক ভোট’ ব্যবস্থা চালু হলে সবচেয়ে বিপাকে পড়বে আঞ্চলিক দলগুলি। তারা রাজ্য ভোটের জন্য যে পৃথক নির্বাচনী ইস্যু প্রকাশ করবে, তা জাতীয় ইস্যুর চাদরে ঢাকা পড়ে যাবে। প্রচারেও বিরাট ধাক্কা খাবে আঞ্চলিক দলগুলি। তুলনায় জাতীয় দলগুলি প্রচারে অনেক বেশি সুবিধা পেয়ে যাবে। তাতে রাজ্যবাসীর প্রত্যাশাও অপূরণীয় থাকবে। কারণ যৌথ ভোটে সর্বদা জাতীয় ইস্যুই প্রাধান্য পেয়ে থাকে। একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যৌথ ভোটে যে দল ৭০ শতাংশের সমর্থন পেয়েছে পৃথক ভোটে সেই দলই ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ভোট কম পেয়েছে।
মোদী সরকারের আগ্রহের কারণ
মনে করা হচ্ছে, নরেন্দ্র মোদী সরকার আসলে ‘এক দেশ এক দল’ শাসন ব্যবস্থা কায়েমের লক্ষ্যেই ‘এক দেশ এক ভোট’ চালু করতে চাইছে। কারণ, তারা মনে করছে, যৌথ ভোট হলে জাতীয় ইস্যুকে সামনে রেখে বিধানসভা ভোটেও বাজিমাৎ করতে পারবে পদ্ম শিবির। কারণ, সর্ব ভারতীয় দল হিসাবে কংগ্রেস এখনও অত্যন্ত দুর্বল। এই সুযোগে আঞ্চলিক দলগুলিকে ক্ষমতাচ্যুত করে দুই তৃতীয়াংশের বেশি আসনে ক্ষমতা দখল সম্ভব।
Read more at: https://www.thewall.in/news/narendra-modi-one-country-one-election/
লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের ১৬টি ফাইলের ফরেন্সিক রিপোর্ট চাইল হাইকোর্ট, তারপরই রায় অভিষেকের মামলার