শেষ আপডেট: 10th January 2024 20:49
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গত অগস্টে ‘ব্যোমকেশ’ হয়েছিলেন দেব। সেবার দূর্গরহস্যের কিনারা করলেও ঘাটাল রহস্যের সমাধান করেননি এই সদা হাস্যময় অভিনেতা। শুধু ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে বলেছিলেন, “সত্যি বলতে কি ব্যাপারটা নিয়ে এখনও ভাবিনি।”
লোকসভা ভোটের আগে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় সাংগঠনিক প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে বুধবার বৈঠক ডেকেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকে হাজির ছিলেন ঘাটালের সাংসদ দেব তথা দীপক অধিকারী।
ঘাটালের দু’বারের তৃণমূল সাংসদ দেব। তৃতীয় বার অর্থাৎ ২০২৪ সালে ফের তিনি ঘাটালে প্রার্থী হবেন কিনা মূল রহস্য তা নিয়েই। কারণ, দলের মধ্যে অনেকে মনে করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দেবের ভূমিকায় খুব একটা প্রীত নন। কেননা দেব তাঁর নির্বাচন কেন্দ্রে বিশেষ সময় দেন না।
দেব নিজেও বলেছিলেন, “দশ বছরে ঘাটালের মানুষের থেকে অনেক ভালবাসা পেয়েছি। ভাল করার চেষ্টাও করেছি। তবে এটা ঠিক যে সংসদে আমার উপস্থিতির হার ছিল খুব খারাপ।”
কিন্তু কালীঘাট ঘনিষ্ঠ জোড়াফুলের কেউ কেউ মনে করেন, মমতা চান দেবই ফের প্রার্থী হোক। এ ব্যাপারে সাম্প্রতিক একটা ঘটনা তাৎপর্যপূর্ণ বলে তাঁরা মনে করেন। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কালীপুজোয় দেখা যায়, দধিকর্মার দিন দেব দিদির বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছেন। তারপর মমতা তাঁর বাড়ির অফিসে দেবের সঙ্গে আলাদা করে প্রায় কুড়ি মিনিটের মতো কথা বলেন।
চিড়ের সঙ্গে দই মাখলে নরম হয়। ওই বৈঠকের পর দেবও সম্মত হয়েছেন বলে দলের উপরতলার কেউ কেউ মনে করছেন। তাঁদের মতে, সেই কারণে বুধবারের বৈঠকে দেবের উপস্থিতি প্রাসঙ্গিক।
সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দেব একটা ভাল ছেলে। শিল্পী মানুষ। দেব আমাদের দলের সম্পদ।
এর পরই নাকি ঘাটালের স্থানীয় নেতাদের উদ্দেশে কিছু অসন্তোষ প্রকাশ করে মমতা বলেন, তোমাদের জন্যই দেব আর দাঁড়াতে চাইছে না। কেন এমন হবে? কী করছ তোমরা?
পরে দেবকেও বলার সুযোগ দেওয়া হয়। দেব বলেন, “আমার কিছু বলার নেই। দল যা নির্দেশ দেবে তা পালন করব।”
তবে তৃণমূলের অনেকে এও মনে করছেন, ঘাটালে এবারের লড়াই সহজ নয়। একে তো টানা দু’বার জেতার পর স্বাভাবিক নিয়মে এক প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা রয়েছে। সেই সঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ঘাটাল লোকসভার দায়িত্ব নিয়েছেন। শুধু সভা সমিতিতে ঘোষণা করা নয়, সম্প্রতি অমিত শাহর সঙ্গে বৈঠকে শুভেন্দু প্রত্যয়ের সঙ্গে বলেছেন, চারটি আসন জেতানোর দায়িত্ব নিচ্ছেন তিনি। কাঁথি, তমলুক, ঘাটাল ও আরামবাগ।
শুভেন্দু এমন বলছেন মানেই বিজেপি ঘাটালে জিততে চলেছে এমন নয়। তবে এটা ধরে নেওয়া হতে পারে ঘাটালের জন্য পরিশ্রম করবে বিজেপি। অর্থাৎ লড়াই আগের মতো মসৃণ নাও হতে পারে।
তবে এদিনের বৈঠকের পর শাসক দলের অনেকে মনে করতে শুরু করেছেন, শেষ মুহূর্তে কোনও নাটকীয় পরিবর্তন না হলে দেব পুনরায় প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারটা ইতিবাচক। সেটা ঘাটালে না মেদিনীপুরে সেটা সময় বলবে।