শোভন চট্টোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
শেষ আপডেট: 22nd July 2024 11:51
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দেড় মাস আগের ঘটনা। চিকিৎসার কারণে তখন সাংগঠনিক কাজ থেকে সাময়িক বিরতি নিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময়ে দেখা যায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দূত হয়ে প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন কুণাল ঘোষ। হকার সমস্যা, বেআইনি জবরদখলের ব্যাপারে ঘটনাচক্রে সেই সময় দৃশ্যত কলকাতা পুরসভার উপর রেগে রয়েছেন। ফলে দুয়ে দুয়ে চার করা শুরু হয়ে গেছিল। অনেকে এও ধারণা করতে শুরু করেন যে শোভনের ঘরওয়াপসি এখন সময়ের অপেক্ষামাত্র।
শোভনের ঘরওয়াপসির জন্য একুশে জুলাইয়ের মঞ্চটাই আদর্শ হতে পারত। কিন্তু রবিবার তাঁকে তো সেখানে দেখা গেলই না। বরং অনেকে মনে করছেন, ওই মঞ্চে দাঁড়িয়েই গোটা আলোচনায় বালতি বালতি জল ঢেলে দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
রবিবার ধর্মতলার মঞ্চে দাঁড়িয়ে অভিষেক তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বলেন, “আমি এক কথার ছেলে। কথা দিয়ে কথা রাখি। তৃণমূলে নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা হচ্ছে বা দমবন্ধ লাগছে বলে যাঁরা দল ছেড়ে গেছিলেন, তাঁদের কেউ কেউ দলে ফিরে এসেছেন। ২০২১ সালের ২১ জুলাই আমি বলেছিলাম, ৩ বছর এঁদের তৃণমূলের কোনও কর্মীর উপর ছড়ি ঘোরাতে দেব না। তিন বছরে তাঁরা তা করতে পারেনি।”
একুশের ভোটের আগে শুভেন্দু অধিকারীর মতো তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সব্যসাচী দত্ত, প্রবীর ঘোষালরা। এঁরা ফিরলেও এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও গুরুত্ব পাননি। সব্যসাচীকে বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান করা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু সেই পদ একেবারে আলঙ্কারিক।
তৃণমূলে কালীঘাট ঘনিষ্ঠ অনেক নেতা মনে করছেন, একুশের মঞ্চে এ কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া কৌশলগত। হতে পারে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ঘর ওয়াপসির প্রশ্নেই কড়া বার্তা দিয়ে রাখতে চাইলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং তা হল, শোভন দলে ফিরলেও এখনই তাঁকে কোনও পদ বা গুরুত্ব দেওয়ার প্রশ্ন নেই। তিনি এক কথার ছেলে। এক যাত্রায় পৃথক ফল হতে দেবেন না।
তৃণমূলের মধ্যে বহুদিন ধরে এই আলোচনা রয়েছে যে অভিষেক শোভন চট্টোপাধ্যায়কে পছন্দ করেন না। ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটের পর শোভনকে যেভাবে কলকাতার মেয়র পদে রাখার পাশাপাশি তিনটি দফতরের মন্ত্রী করা হয়েছিল তা নিয়ে আপত্তি ছিল অভিষেকের। আবার বর্তমান মেয়র ফিরহাদ হাকিমও যে অভিষেকের খুব পছন্দের সেই ধারণাও রাজ্য রাজনীতিতে বিশেষ নেই।
তবে কালীঘাট ঘনিষ্ঠরা মনে করছেন, অভিষেকের এই একটা কথায় ফিরহাদ হাকিমও স্বস্তির অক্সিজেন পেলেন। মাস খানেক ধরে যে সংশয়ের মেঘ জমেছিল তা হয়তো এবার কেটে যেতে চলেছে।