শেষ আপডেট: 15th January 2025 12:26
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মালদহে তৃণমূল কাউন্সিলর খুন হওয়া নিয়ে মুখ খুললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। ফলতার সেবাশ্রয় শিবির থেকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বললেন, ‘দল বড় হলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব স্বাভাবিক।’
এদিন সেবাশ্রয় শিবিরের সাফল্য নিয়ে তাঁর ভাললাগার কথা জানিয়েছেন অভিষেক। দাবি করেছেন, এই স্বাস্থ্যক্যাম্পে হাজার হাজার মানুষ যে পরিষেবা পেয়েছে, তা অভূতপূর্ব। পাশাপাশি, মেদিনীপুরের স্যালাইন কাণ্ড নিয়েও অবস্থান স্পষ্ট করে বলেছেন, দোষীদের চিহ্নিত করে কঠোরতম শাস্তি দেওয়া উচিত।
এর পরেই দলীয় ভাগাভাগি, মারামারি এবং পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন করা হয় তাঁর কাছে। তিনি বলেন, ‘একটা দল যখন বড় হয়, তখন গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব স্বাভাবিক। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কি বিজেপিতে নেই? গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কি সিপিএমে ছিল না? একটা পরিবারে ৬ জন থাকলেও ৪ জনের ঝগড়া থাকে। সেখানে একটা নির্বাচিত দল, যার লক্ষের উপর পদাধিকারী, এত বড় পরিবার, দু-চারজনের মতভেদ খুব স্বাভাবিক।’
তাঁর কথায়, ‘একটা অফিসে ১০০ জন চাকরি করলে সেখানেও সমস্যা হয়। এটা সংসারের রীতি। তাই বলে এই নয়, আমি যা ইচ্ছে করব। দলকে দুর্বল করার কেউ কোনও চেষ্টা করলে, তার বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা কমিটি পদক্ষেপ করবে। কেউ নিজেকে কেউকেটা ভাবতে শুরু করলে তৃণমূলের দরজা তাঁর জন্য বন্ধ হয়ে যাবে”।
মালদহ কাণ্ডে তৃণমূলের এক নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিষেক এদিন সে প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, অন্যায় দেখলে তৃণমূল সরকারই তো নিজের দলের নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। শম্ভুনাথ কাউ, আরাবুল ইসলামকে এই সরকারই তো গ্রেফতার করেছে।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন আরও বলেন, ‘সরকার কোনও গনৎকার বা জ্যোতিষ নয়, যে আগে থেকে জেনে আটকানো যাবে। একটা ঘটনা ঘটার পরে রাজ্য প্রশাসন কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। মালদহে দুলাল সরকার খুনের পরে দোষীরা ধরা পড়েছে।’
রাজ্য প্রশাসনের কড়া অবস্থান প্রসঙ্গে আরজি কর তদন্তের তুলনাও টেনে আনেন অভিষেক। বলেন, ‘আরজি কর কাণ্ডে যে সঞ্জয় রায়কে কলকাতা পুলিশ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করেছিল, সেই সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করতেই সিবিআইয়ের ৫ মাস লেগেছে। এই প্রশ্ন তো আপনাদের করা উচিত!’
দলে সবরকম মানুষই থাকবে, কিন্তু অপরাধকে অপরাধের চোখেই দেখা হবে—একথা স্পষ্ট করতে গিয়ে তিনি বিজেপি এবং সিপিএমের নানা রকম অপরাধমূলক কাজের কথাও উল্লেখ করেন। বলেন, ‘দলে যেমন ভাল লোক থাকে, তেমনি খারাপ লোকও থাকে। প্রতিটা ঘরে থাকে। সবাই যদি ভাল হয়ে যেত, তাহলে তো অপরাধশূন্য হয়ে যেত সমাজটা। স্বর্গ হয়ে যেত সবকিছু। তা তো নয়। কিন্তু সমাজে খারাপের থেকে ভাল লোক বেশি।’
তাঁর কথায়, ‘অপরাধ তো অনেক জায়গায় হয়। বিজেপির কত লোক তো কত কিছু করেছে। বিজেপি নেতার ছেলে কৃষকদের গাড়ি চাপা দেওয়ার পরেও বাবা টিকিট পেয়েছে। উন্নাওয়ের এমএলএ ধর্ষণ করেও দলে ছিলেন। ব্রিজভূষণ সিং শ্লীলতাহানি করেছেন, বিজেপি আড়াল করেছে। ভুলে যাচ্ছেন সিপিএমের অত্যাচার? বানতলা, নেতাই, সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম—ভুলে যাচ্ছেন? কিন্তু আমরা অপরাধের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স। দলীয় শৃঙ্খলার ঊর্ধ্বে কেউ নয়। নিচুতলার কর্মী বা আমি—সবাই একই নিয়ম মেনে চলি। তাই বলছি, সবাইকে বিনয়ী হতে হবে। মানুষের কাছে যেতে হবে। অহঙ্কারের কোনও জায়গা নেই।'