শেষ আপডেট: 3rd September 2024 21:24
দ্য ওয়াল ব্যুরো: নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের শুনানির সময়ে তৎকালীন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের চোখা চোখা সব পর্যবেক্ষণের কথা মনে পড়ে?
প্রাইমারি ও উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ কেলেঙ্কারি নিয়ে বিচারপতি যেরকম নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছিলেন সরকারকে তাতে তাঁকে প্রায় ভগবানের স্থানে বসিয়েছিলেন অনেকে। বামপন্থীরা অনেকেই ইশ্বর বিশ্বাসী নন। কিন্তু অভিজিৎকে নিয়ে সর্বাগ্রে আগ্রহ ও উচ্ছ্বাস ছিল তাঁদের। সম্ভবত তাঁর একটা বড় কারণ ছিল সিপিএম নেতা তথা প্রবীণ আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের সঙ্গে অভিজিতের বন্ধু সম্পর্ক। বামেদের বন্ধু ছিলেন অধীর চৌধুরী। তিনি আবার বলে বসেছিলেন, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পদে বসাতে তিনি সমর্থন জানাবেন।
অথচ একবছরও ঘুরল না। সেই অভিজিৎকে সোমবার চরম অস্বস্তিতে পড়তে হল লালবাজারের অদূরে। যাঁর কথাকে আশ্রয় করে সরকার বিরোধী অসন্তোষ গনগনে হয়ে উঠেছিল, তাঁকে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে-বিক্ষোভে ঢুকতেই দেওয়া হল না। কলকাতার পুলিশ কমিশনারের পদ থেকে বিনীত গোয়েলের ইস্তফা দাবি করে জুনিয়র ডাক্তাররা প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন। অভিজিৎ সেখানে যেতেই গো ব্যাক স্লোগান তুলতে শুরু করেন তাঁরা।
ঘটনা হল, মঙ্গলবার এ নিয়ে আবার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বামেরা। এক সময়ে অভিজিতের মধ্যে যাঁরা সম্ভাবনা দেখেছিলেন, এমনকি অভিজিৎ দাবি করেছিলেন, তাঁকে যাদবপুর লোকসভা আসনটি অফার করেছিল সিপিএম, সেই দলেরই যুব নেতা সৃজন ভট্টাচার্য এদিন বলেন, “জুনিয়র ডাক্তাররা ওনাকে ঢুকতে না দিয়ে ঠিক করেছেন। ওঁদের আন্দোলন ছিল অরাজনৈতিক। উনি রাজনীতি করতে গেছিলেন কেন?
এবার লোকসভা ভোটে তমলুক আসনে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তমলুক আসনটি শুভেন্দু অধিকারীর প্রায় ভদ্রাসনের মতো। অনেকেই মনে করেন, অভিজিৎ জেতেননি। জিতেছেন শুভেন্দুই।
বিজেপি সূত্রে খবর, ইদানীং শুভেন্দু যে অভিজিতের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন তা নয়। দলের সাংগঠনিক বিষয়আশয়েও তাঁর বিশেষ ভূমিকা নেই। এমনকি তমলুক-নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর সব কর্মসূচিতে যে অভিজিৎ ডাক পান তাও নয়। পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, অভিজিতের উত্থানটা হয়েছিল সাপ-লুডো খেলার মতই। বর্তমানটাও সেরকম। বিশেষ করে সোমবার লালবাজারের অদূরের ছবিটা তাৎপর্যবহ।
এ ব্যাপারে মঙ্গলবার বাংলার এক আরএসএস নেতা বলেন, এই কারণেই ওনাকে বলা হয়েছিল যে উনি প্রথমে সঙ্ঘ পরিবারের সামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত হোন। তাতে ওনার গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়তে পারত। কিন্তু উনি শুরু থেকেই সংসদীয় রাজনীতিতে নেমে পড়ার ব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন। পরিষ্কার করে বলতে গেলে, লোকসভা ভোটে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা ছিল তাঁর। তা ছাড়া রাজ্য বিজেপি নেতারাও সেই মর্মে সুপারিশ করেছিল দিল্লিতে। এখন বোঝা যাচ্ছে, সামাজিক কাজের মধ্যে দিয়ে রাজনীতিতে এলে হয়তো ভাল করতেন।