শেষ আপডেট: 11th April 2025 12:48
দ্য ওয়াল ব্যুরো: রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লা মারা গেলেন। বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। ভাঙড়ের বাকড়ি গ্রামে নিজের বাড়িতেই শুক্রবার সকালে জীবনাবসান হয় তাঁর। বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন দীর্ঘদিন ধরেই। সক্রিয় রাজনীতি থেকেও দূরেই ছিলেন। অবশেষে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন। ‘চাষার ব্যাটা’র মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ রাজনৈতিক মহল।
রাজনৈতিক মঞ্চে রেজ্জাক মোল্লার আবির্ভাব হয়েছিল ১৯৭৭ সালে, বামফ্রন্টের উত্থানের সময়। ক্যানিং পূর্ব কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত হয়ে যাত্রা শুরু করেন রেজ্জাক মোল্লা। টানা ২০১১ সাল পর্যন্ত ওই একই কেন্দ্রের বিধায়ক হিসেবে বহাল ছিলেন তিনি। রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকারের পতনের সময়েও এই আসনটি তাঁর দখলেই ছিল—বামেরা একের পর এক আসন হারালেও, রেজ্জাকের গড় অটুট ছিল।
দীর্ঘ রাজনৈতিক কেরিয়ারে তিনি রাজ্য মন্ত্রিসভায় ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরের দায়িত্বও সামলেছেন। তবে ২০১৪ সালে এক নাটকীয় মোড় নেয় তাঁর রাজনৈতিক পথচলা। সিপিএম রাজ্য কমিটি তাঁকে দলবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে বহিষ্কার করে। দলচ্যুত হওয়ার পরে তিনি নিজেই একটি নতুন রাজনৈতিক দল তৈরি করেন—‘ভারতীয় ন্যায়বিচার পার্টি’। নিজেকে পরিচয় দেন 'চাষার ব্যাটা' বলে।
তবে খুব বেশিদিন নিজের দল নিয়ে এগোননি রেজ্জাক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৬ সালে তৃণমূলে যোগ দেন এবং ভাঙড় কেন্দ্র থেকে দলের টিকিটে বিধায়ক নির্বাচিত হন। সেই সরকারের আমলে খাদ্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের দায়িত্বও পান।
এদিন রেজ্জাকের মৃত্যুর খবর পেয়ে এক্স হ্যান্ডেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, লেখেন, 'একসময় অন্য ধারার রাজনীতি করলেও, মা-মাটি-মানুষের সরকারে তাঁর মিলিত হয়ে যাওয়া ছিল সহজ ও স্বাভাবিক।'
আমার সহকর্মী, আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা’র প্রয়াণে আমি শোকাহত ও মর্মাহত। তিনি রাজ্য মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মী ছিলেন। তাঁকে আমি শ্রদ্ধা করতাম, সম্মান করতাম।
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) April 11, 2025
বাংলার গ্রামজীবন, কৃষি-অর্থনীতি ও ভূমি-সংস্কার বিষয়ে তাঁর জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা ছিল সুবিদিত। তাই একসময় অন্য ধারার রাজনীতি করলেও,…
তবে ২০২১ সালের নির্বাচনে বয়সজনিত কারণে তাঁকে আর প্রার্থী করেনি তৃণমূল। দলের সঙ্গে কিছুটা দূরত্বও তৈরি হয় তখন থেকেই। শরীরের অবস্থা দ্রুত অবনতি হওয়ায় তিনি ধীরে ধীরে রাজনীতি থেকে সরে আসেন। ছিলেন কার্যত গৃহবন্দি। যদিও সক্রিয় রাজনীতিতে তাঁকে আর দেখা না গেলেও, বিভিন্ন রাজনৈতিক ইস্যুতে তাঁর মন্তব্য মাঝেমধ্যেই আলোচনার জন্ম দিয়েছে।