শেষ আপডেট: 13th March 2025 17:05
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাঙালির বসন্তোৎসব পর্যটন মানচিত্রের একমাত্র গন্তব্য শান্তিনিকেতন। সেখানেই পড়ল 'উৎসব সবার' স্লোগানের প্রচারক তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকারের ব্যানার। বসন্তোৎসব বা দোল এবং পৌষ মেলার গন্ধ বাতাসে ভাসলেই বাঙালি ছোটে শান্তিনিকেতনে। আর শহুরে আধুনিকাদের কাছে শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের থেকেও বড় আকর্ষণ হল খোয়াইয়ের সোনাঝুরি হাট। যেখানে রাবীন্দ্রিক সংস্কৃতি, গ্রামবাংলার শিল্প ও আদিবাসীদের গয়না শিল্পের মিলমিশে এক আজব দুনিয়ার চিচিং ফাঁক হয়ে যায়। কলকাতার সেইসব 'শিল্প-সংস্কৃতিমনস্ক'দের ভিড়ে গমগম করে ওঠে গোটা শান্তিনিকেতন ও সোনাঝুরি হাট। কিন্তু, এবার এখানেই পড়তে চলেছে নিষেধাজ্ঞার কাঁটাতারের বেড়া। যা নিয়ে বিরোধী দল বিজেপি রাজনীতি করতে উঠেপড়ে লাগলেও, অনেকেই সরকারি এই নিষেধাজ্ঞার তারিফ করেছেন।
সোনাঝুরি হাটে লাগানো একটি ব্যানারের ছবি ভাইরাল হওয়ার পরই এ নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। শাসকদল তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তুলে বিজেপি অভিযোগ করেছে যে, ওরা সোনাঝুরি হাটে দোল উৎসব পালনে বাধা দিচ্ছে। অন্যদিকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের দাবি, এলাকার সবুজায়ন বাঁচাতে এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। ব্যানারে লেখা রয়েছে, সংরক্ষিত বনাঞ্চল। এখানে রং খেলা, গাড়ি পার্কিং করা, ভিডিওগ্রাফি ও ড্রোন ক্যামেরা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধি। তলায় ছোট করে লেখা আদেশানুসারে।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, এটা কেবলমাত্র একটি ঘটনা নয়। বাংলার সরকারের তুষ্টিকরণ রাজনীতির অঙ্গ। এ বছরেই প্রথম হোলি পালনের জন্য প্রতিটি থানায় মিটিং করা হয়েছে। কারণ এবারে হোলি ও রমজান মাসের জুম্মা বার একইদিন শুক্রবারে পড়েছে। পুলিশ প্রকাশ্যে বলে বেড়াচ্ছে হোলি পালন করা যাবে না। রং ছুড়লে গ্রেফতারের হুমকি দিচ্ছে মমতার পুলিশ।
আরও একটি দৃষ্টান্ত দিয়ে শুভেন্দু বলেন, বোলপুরের এক শীর্ষ পুলিশ অফিসার বলে দিয়েছেন শান্তিনিকেতনের বসন্তোৎসব যেন সকাল ১০টার মধ্যে সেরে ফেলা হয়। কারণ, ওইদিন শুক্রবার। বিরোধী নেতার অভিযোগ, পুলিশ-প্রশাসন ও রাজ্য সরকার বিভাজনের রাজনীতি করছে। ওরা এক সম্প্রদায়কে খুশি করার চেষ্টায় লেগেছে।
শুভেন্দুর অভিযোগ প্রসঙ্গে বাংলার বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা বলেন, বসন্তোৎসবে কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি। সোনাঝুরি নিয়ে বিজেপি রাজনীতি করছে। সাধারণ মানুষের কাছে বন বিভাগের অনুরোধ তাঁরা যেন বনাঞ্চলকে রক্ষা করেন। প্রকৃতিকে বাঁচান। কোনও বাধানিষেধ নেই। যদি কেউ রং খেলতে চান, তাঁরা খেলতেই পারেন। বিজেপির রাজনীতি ছাড়া করার কিছু নেই বলে ওরা এরকম করছে। জেলা বন অফিসারের কাছে একটি রিপোর্ট তলব করা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী বীরবাহা।