শেষ আপডেট: 31st January 2025 12:47
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পুরুলিয়া-ঝাড়খণ্ড সীমান্তে থাকা রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারকে ঘিরে সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য!
বর্ষশেষে রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলে ঢুকে পড়ে টানা ১০ দিন বনে বাদড়ে দৌড়ে আস্ত বন দফতরকে নাকানিচোবানি খাইয়েছিল বাঘিনি জিনাত। তার পরে পরেই ফের ঝাড়খণ্ড পুরুলিয়া সীমান্তে বাঘের উপস্থিতি ঘিরে বছরের শুরু থেকেই পুরুলিয়া, বাঁকুড়া এবং ঝাড়গ্রামের একাংশ বনাঞ্চলে বাঘের আতঙ্ক বেড়েছে। গত সপ্তাহেও দেখা মিলেছে তার পায়ের ছাপ। যার জেরে দিনের বেলাতেও জঙ্গলে ঢোকার সাহস দেখাচ্ছেন না সংশ্লিষ্ট এলাকার গ্রামবাসীরা।
এমন আবহে বাংলায় ঘন ঘন বাঘের আগমন ঘিরে সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। ঝাড়খণ্ডের পালামৌ টাইগার রিজার্ভের সহ অধিকর্তা প্রজেসকান্ত জেনার দাবি, "বাংলা সীমান্তে থাকা এই বাঘটি পালামৌ টাইগার রিজার্ভ থেকেই গিয়েছে।"
যা থেকে বন কর্তারা মনে করছেন, বাঘের পুরনো করিডর আবার নতুন করে খুলে গেল। কারণ, বন দফতরের ট্র্যাপ ক্যামেরার ছবি থেকে জানা যাচ্ছে এই বাঘটি পালমৌ থেকে ছত্তিসগড় হয়ে বাংলার সীমান্তে প্রবেশ করেছে। দীর্ঘ ৭০০ কিমি এই পথ একসময় বাঘের করিডর হিসেবে পরিচিত ছিল। পরে বনাঞ্চল কমে যাওয়ায় সেই পথ লুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। নতুন করে জঙ্গলের বিস্তারের জেরে আবার সেই পুরনো করিডর নতুন করে খুলে গেল বলে মনে করা হচ্ছে।
বস্তুত, জিনাত বিদায়ের পর শুধু একটি বাঘ নয়, গত এক মাসে অন্তত দুটি বাঘ নতুন করে জঙ্গল মহলের বিভিন্ন এলাকায় নিজেদের উপস্থিতির জানান দিয়েছে। বন কর্তাদের মতে, আগামীদিনে আরও ঘন ঘন বাংলার জঙ্গলে দেখা যাবে বাঘের উপস্থিতি। রসিকতার সুরে এক বনকর্তা বলছেন, "শেষ এক দশকে আমরা যেভাবে বনাঞ্চল বৃদ্ধি করেছি, তাতে এরপর বাংলায় বাঘের ডেইলি প্যাসেঞ্জারি শুরু হতে পারে!"
প্রসঙ্গত, একসময় কাঠ পাচারকারীদের দৌরাত্ম্য এবং প্রচণ্ড গরমে জঙ্গলে আগুন ধরে যাওয়ার ঘটনায় জঙ্গলমহলের বনাঞ্চল অনেকখানি খালি হয়ে গিয়েছিল। এরপরই গত কয়েক বছরে বন দফতরের তরফে রাজ্যে জঙ্গলবৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হয়। যার নিটফল, শাল, অর্জুনের ঘন বনাঞ্চল এখন জঙ্গলমহল জুড়ে। শুধু জঙ্গলের ঘনত্ব বেড়েছে তাই নয়, ইদানীং সেখানে বন্য জীবজন্তুর সংখ্যাও বেড়েছে। ফরেস্ট সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ রাজ্যে শতকরা .৭ শতাংশ বনাঞ্চল বৃদ্ধি পেয়েছে।
বনকর্তাদের কথায়, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রামের এই ঘন জঙ্গলের মধ্যে রয়েছে ছোট ছোট জলাশয়ও। গভীর জঙ্গল আর জল হল বাঘের জন্য আদর্শ জায়গা। ফলে হাতির পর এবার বছর বছর বাঘ-বাঘিনির আগমনও বাড়বে। নতুন করিডর খুলে যাওয়ায় এই প্রবণতা আরও বাড়বে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।