ছবিটি এআই দ্বারা নির্মিত (গার্গী দাস)
শেষ আপডেট: 1st January 2025 17:54
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ফের ডিজিটাল অ্যারেস্টের অভিযোগ বাংলায়। এবার প্রতারণার শিকার হলেন এক বৃদ্ধ। ঘটনা নদিয়ার। ওই বৃদ্ধকে প্রতারণার ফাঁদে জড়িয়ে এক কোটি টাকা হাতায় প্রতারকরা। তদন্ত নেমে ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে রানাঘাট পুলিশ জেলার সাইবার ক্রাইম বিভাগ। ঘটনার তদন্ত চলছে। এর সঙ্গে আন্তর্জাতিক প্রতারণা চক্রের যোগ রয়েছে বলেও জানতে পেরেছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।
সেপ্টেম্বর মাসে বেহালার এক ব্যক্তির কাছে ভিডিও কল আসে। ওপারের ব্যক্তি জানান, তিনি মুম্বই পুলিশের আধিকারিক। বেহালার ব্যক্তির নামে কেউ লোন নিয়েছে। সেই লোন শোধ হয়নি তাই একটি মামলা দায়ের হয়েছে। এখনই কিছু টাকা দিলে সেই কেস নিয়ে রফা হবে। ভিডিও কলে পুলিশ স্টেশন, জেল ও পুলিশ সবাইকেই দেখতে পান ব্যক্তি। ভিডিও কলে বসিয়ে রীতিমতো মামলার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে বোঝানো হয়। চাওয়া হয় বাড়ির ঠিকানাও। পুলিশের পোশার পরা ব্যক্তিরা জানান, কিছুক্ষণের মধ্যেই টাকা পাঠাতে হবে। ডিজিটাল অ্যারেস্টের শিকার হয়েছেন বুঝতে পেরে, ফোনটি রেখে তিনি বিষয়টি পুলিশকে জানান।
এমনই এক ঘটনা ঘটে, কলকাতার এক বৃদ্ধ দম্পতির সঙ্গেও। কেওআইসি করার নামে ব্যাঙ্কের লোক সেজে প্রতারণার ছক কষে প্রতারকরা। চাওয়া হয় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর ও একাধিক তথ্য। কিন্তু ওটিপি শেয়ার করার আগেই তাঁরা বুঝতে পারেন ঠকছেন ফলে বিষয়টি ব্যাঙ্কে ও পুলিশে জানান।
কিন্তু নদিয়ার কল্যাণীর এই বৃদ্ধর ক্ষেত্রে সেসব হয়নি। সাত ঘণ্টা ধরে ফোনের ওপার থেকে তাঁকে ভয় দেখানো হয়। বেহালার ব্যক্তির মতোই তাঁর হোয়াটসঅ্যাপেও একটি ভিডিও কল আসে। এক্ষেত্রেও মুম্বই পুলিশের আধিকারিক হিসেবে পরিচয় দেওয়া হয়। জানানো হয়, কোনও গুরুতর অপরাধে নাম জড়িয়েছে বৃদ্ধর। ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে বলা হয়। ঘাবড়ে গিয়ে ওই বিত্তশালী বৃদ্ধ প্রায় এক কোটি টাকা ট্রান্সফার করেন প্রতারকদের অ্যাকাউন্টে। পরে বুঝতে পারেন প্রতারিত হয়েছেন, জানান থানায়।
পুলিশ তদন্তে নেমে হরিয়ানা, গুজরাত ও দিল্লির যোগ পায়। প্রায় এক মাস ধরে সেসব রাজ্যে অভিযান চালিয়ে ১৩ জনকে খুঁজে বের করে ও তাদের গ্রেফতার করা হয়। দুবাই ও কলম্বিয়ার যোগসূত্র খুঁজে পান তদন্তকারী আধিকারিকরা। ধৃত ১৩ জন আন্তর্জাতিক সাইবার প্রতারণা চক্রের অংশ হিসেবে কাজ করত বলে জানা গেছে।
১৩ জনের মধ্যে কয়েকজনকে গুজরাত থেকে বাংলায় ট্রানজিট রিমান্ডে আনা হয়। তাদের জেরা করে তদন্তে জট ছাড়াতে চাইছেন আধিকারিকরা। এক সঙ্গে আরও কেউ জড়িয়ে আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এমন প্রতারণা আর কার সঙ্গে ধৃতরা করেছে, তাও জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।