শেষ আপডেট: 18th September 2024 14:09
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ঢোলাহাটে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট জমা দিল রাজ্য। যেহেতু এই ঘটনার তদন্তভার সিআইডিকে দেওয়া হয়, তাই সিআইডিকে তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ৩০ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করলেন বিচারপতি রাজর্ষি ভারদ্বাজ।
ঘটনার সূত্রপাত চলতি বছরের জুন মাসের ৩০ তারিখে। ওইদিন মৃত আবু সিদ্দিক হালদারের কাকা মহসিন হালদারের বাড়ি থেকে সোনার গয়না চুরি হয়৷ তিনি পুলিশে অভিযোগ জানান। পরের দিন অর্থাৎ ১ জুলাই ঢোলাহাট থানার পুলিশ মহসিন হালদার ও তাঁর ভাইপো আবু সিদ্দিককে থানায় তুলে নিয়ে যায়।
অভিযোগ, মহসিনকে দিয়ে জোর করে ভাইপোর নামে চুরির অভিযোগ লিখিয়ে নেওয়া হয়। এমনকী মহসিনের সামনেই তাঁর ভাইপো আবুকে দফায় দফায় মারধর করা হয়। ৪ জুলাই কাকদ্বীপ মহকুমা আদালত থেকে জামিন পান আবু। গুরুতর অসুস্থ আবুকে পার্কসার্কাসের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হলে ওই দিন রাতে তাঁর মৃত্য়ু হয়। পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের মারেই জখম হয়ে মৃত্যু হয়েছে আবুর।
আদালতে মামলা উঠলে পুলিশ জানায়, যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় থানার আইসি মানস চট্টোপাধ্যায় ও তদন্তকারী অফিসার রাজদীপ সরকারের বিরুদ্ধে মারধর, তোলাবাজির অভিযোগে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। থানার পুলিশ নয়, খুনের মামলার তদন্ত করছেন ডিএসপি। তাছাড়া পুলিশ যে সব তথ্য দিচ্ছে তা হাসপাতাল ও ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের।
যা শুনে বিচারপতির প্রশ্ন, "ময়নাতদন্তের ভিডিও রেকর্ডিং হলেও ম্যাজিস্ট্রেটকে রাখা হয়নি কেন? এত তাড়া কিসের ছিল? বাড়ির লোককেও কেন জানানো হয়নি?"
মৃত ছাত্রর পরিবারের আইনজীবী আদালতে বলেন, জাতীয় মানবাধিকার গাইড লাইন অনুযায়ী হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ উঠলে তিনজন ময়নাতদন্তকারী অভিজ্ঞ চিকিৎসককে নিয়ে কমিটি গড়তে হবে। তারা তিনটি পৃথক প্রতিষ্ঠান থেকে হতে হবে। এখানে সেসব কিছু মানা হয়নি। পুলিশ এফআইআর করলেও সেখানে সব ধারা প্রয়োগ করা হয়নি।
রাজ্যের তরফে দাবি করা হয়, "মাথায় রাখতে হবে এই মৃত্যু কিন্তু পুলিশের হেফাজতে হয়নি। মাত্র কয়েক ঘণ্টা সেই ধৃত থানার হেফাজতে ছিল। মৃত্যুও হয়েছে জামিনে মুক্তির পরে।"
মৃত যুবকের পরিবারের আইনজীবী আদালতে বলেন, পর্যবেক্ষণ, তথ্য প্রমাণ জোগাড় ও স্বচ্ছ তদন্তের স্বার্থে জরুরি ভিত্তিতে নথি জোগাড় করা দরকার। আর তাই দ্বিতীয় ময়না তদন্ত করা জরুরি।
এরপরই আদালত জানায়, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওই যুবকের দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করতে হবে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের গাইড লাইন মেনে নীলরতন সরকার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে আবু সিদ্দিক হালদারের দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করতে হবে বলে জানায় আদালত। পুলিশকে স্বস্তিক সেবা সদন নামের নার্সিংহোমের ভূমিকাও খতিয়ে দেখতে বলা হয়। একই সঙ্গে মৃত যুবকের ভিসেরার নমুনা (সিএফএসএল) হায়দরাবাদে পাঠাতে হবে।
সেই ময়নাতদন্তের রিপোর্টই আজ, বুধবার জমা পড়ল আদালতে।