শেষ আপডেট: 5th January 2025 17:35
দ্য ওয়াল ব্যুরো: নতুন ক্লাসে বন্ধুরা ভর্তি হয়ে গিয়েছে। এদিকে বাবার কাছে ছেলেকে ভর্তি করার টাকা নেই। কী হবে তাহলে? আর পড়াশোনা করতে পারবে না? চরম হতাশায়, আত্মঘাতী হল ক্লাস নাইনের ছাত্রী।
ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলা থানা এলাকায়। স্থানীয়দের কথায়, মেয়েটির নাম নাসিমা মোল্লা। বছর ১৪-র ছাত্রী সারেঙ্গাবাদ ইটখোলা হাই স্কুলে পড়াশোনা করত।
ঘটনার দিনই সকালে স্কুলে নবম ও দশম শ্রেণিতে ভর্তির প্রক্রিয়া চলছিল। নাসিমার ক্লাসের বন্ধুরা শনিবারই দশম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তার কাছে ভর্তির টাকা ছিল না। টাকা ছিল না।
বাবাকে জানালেও রিকশাচালক ইসমাইল মোল্লার হাতও তখন ফাঁকা। মেয়েকে আশ্বাস দিয়ে বলেন, একটা দিন যেন অপেক্ষা করে। তাতেই আতঙ্ক দানা বাঁধে নাসিমার মনে। তবে কি সে আর পড়াশোনা করতেই পারবে না। দুঃখে ঘরে ঢুকে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার মতো চরম পথ বেছে নেয় সে।
দুপুরের দিকে নাসিমার পরিবারের সবাই নিজেদের মতো করে ব্যস্ত ছিলেন। সেই সুযোগে কখন যে ঘরে ঢুকে তাঁদের মেয়ে বিষ খেয়েছে টের পাননি।
অনেক পরে মেয়ের কোনও সাড়া না পেয়ে ঘরে ঢুকে তাঁরা দেখেন, মেয়েকে অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে। তড়িঘড়ি ওই অবস্থায় নাসিমাকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি। চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই রাতে মৃত্যু হয় তার।
পড়াশোনায় ভাল ছিল নাসিমা। সকলকে সমীহ করে চলা, আচার-আচরণ সব দিক থেকে পাড়ার মানুষরা তাকে পছন্দ করত। সেই মেয়েই যে এরকম চরম পদক্ষেপ নিয়ে ফেলবে কেউ ভাবতেই পারছে না।
নাসিমার দাদা আক্রম মোল্লা বলেন, 'বোন ক্লাস নাইন থেকে টেনে ভর্তির জন্য টাকা চেয়েছিল। আমাদের অভাবের সংসার। বাবার কাছে সেই সময় টাকা ছিল না। বলেছিল, এক দিন অপেক্ষা করতে। কিন্তু বোন অভিমানে বিষ খেয়ে নিল'।
জানা যাচ্ছে, ক্লাস নাইন থেকে টেনে ভর্তির জন্য সাড়ে ৫০০ টাকা লাগে। স্কুল কর্তৃপক্ষ চাইলেই ওই ফি মুকুবও করতে পারত। বেঁচে যেতে পারত একটা জীবন। প্রশ্ন উঠছে এ ব্যাপারে।
পুলিশ জানিয়েছে, নাসিমার দেহ ইতিমধ্যেই ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে।