শেষ আপডেট: 16th July 2024 13:50
দ্য ওয়াল ব্যুরো, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: কুলতলির দুষ্কৃতী সাদ্দাম ও তার ভাই সইরুলের খোঁজে তল্লাশি জোরদার করল পুলিশ। খাটের নীচের সুড়ঙ্গ ধরেই দুই ভাই গা ঢাকা দিয়েছে বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান। কারণ এই সুড়ঙ্গ গিয়ে মিশেছে মাতলার খালে। এই খাল ধরে সুন্দরবনের জলে জঙ্গলে গা ঢাকা দেওয়া স্থানীয় মানুষের কাছে তেমন সমস্যা নয়।
তবে রাতভর কুলতলির দুই নম্বর জ্বালাবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পয়তারহাট গ্রামে অভিযান চালিয়ে নকল সোনার কারবারের অনেকটাই এখন পুলিশের কাছে পরিষ্কার। পুলিশসূত্রে জানা গেছে, সাদ্দাম বা সইরুল নয়, এই কারবারের মাথায় রয়েছে ছাকেত ও বোটো নামের দুই ব্যক্তি। তাদের অধীনে কাজ করত দুই ভাই এবং ছাকেতের ছেলে শাহজাহান। এই তিনজনই মূলত পরিচালনা করত গোটা কারবার। শুধু তারা নয়, এই প্রতারণা চক্রের সঙ্গে গ্রামের আরও বহু মানুষ জড়িয়ে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। সোমবার সাদ্দাম ধরা পড়লে চক্রের বাকিরাও যে রেহাই পাবে না তা বুঝতে পেরেছিল দুষ্কৃতীরা।
তাই সোমবার সাদ্দামকে ধরতে গ্রামে ঢুকতেই প্রবল বাধার মুখে পড়ে পুলিশ। অভিযোগ, সাদ্দামকে ছিনিয়ে নিতে মারধর করা হয় পুলিশকে। সাদ্দামের ভাই সইরুল পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। তারপর থেকেই বেপাত্তা দুই ভাই। তাদের স্ত্রীদের আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। তারপরেই শুরু হয় সাদ্দামের বাড়িতে তল্লাশি। সাদ্দামের খাট সরাতেই মেলে ৩০ ফুটের বাঁধানো সুড়ঙ্গ। যেই সুড়ঙ্গ গিয়ে শেষ হয়েছে মাতলা নদীতে।
গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পারে, শুধু নকল সোনা নয়, বহুমূল্য মূর্তিরও কারবার চালাত এই দলটি। কারবার চলত জাল নোটেরও। পুলিশসূত্রে জানা গেছে, কম দামে সোনা বিক্রির টোপ দিয়ে চক্রের লোকজন এই পয়তারহাট গ্রামে ডেকে নিয়ে আসত ক্রেতাদের। তারপর চলত দরদস্তুর। লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে নকল সোনা গছিয়ে দেওয়া হত ক্রেতাদের। শুধু তাই নয় নিজেদের ডেরায় ঢুকিয়ে লুঠপাট ও খুন করারও অভিযোগ রয়েছে সাদ্দাম ও তার দলবলের বিরুদ্ধে। প্রায় ১৫ বছর ধরে চলত এই কারবার। এখন পুলিশের তল্লাশি শুরুর পরেই গা ঢাকা দিয়েছে এই চক্রের লোকজন।
এই গ্রাম থেকে কুলতলি থানার দূরত্ব বেশি নয়। কী করে ১৫ বছর ধরে পুলিশের নজরে এই কারবার চলল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় মানুষদের একাংশ।