শেষ আপডেট: 7th August 2024 19:49
দ্য ওয়াল ব্যুরো, উত্তর ২৪ পরগনা: এক সময়ে খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডের অভিযুক্ত মৌলানা ইউসুফ ওরফে আবু বক্কর আস্তানা গেড়েছিল এই বসিরহাটে। রাজমিস্ত্রি সেজে জেএমবি জঙ্গিগোষ্ঠীর এই নেতা গা ঢাকা দিয়েছিল বসিরহাটের সীমান্ত গ্রামে। ৩ নম্বর কলোনির ভাড়াবাড়ি ছিল তাঁর গোপন ডেরা। পরে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সেখান থেকে ইউসুফকে গ্রেফতার করে। খোলা সীমান্ত দিয়ে এর আগেও জঙ্গি নেতাদের আনাগোনা সাক্ষী থেকেছে সীমান্ত গ্রামের বাসিন্দারা। বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতিতে জঙ্গি বা বিচ্ছিন্নতাবাদীরা এদেশে আস্তানা গড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন গ্রামবাসী।
দু'পা এগোলেই বাংলাদেশ। জং দেওয়া খুঁটি থাকলেও নেই, কাঁটাতারে। গ্রামের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, অন্ধকারে হলেই ওপার থেকে লোকজন এপারে আনাগোনা করে। ওপরে বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখন অশান্ত। এমন অবস্থায় অবৈধ অনুপ্রবেশ নিয়ে চিন্তায় ঘুম উড়েছে ঘোজাডাঙার দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দাদের। পরিবার সন্তানদের নিয়ে ভীষণই আতঙ্কে রয়েছে তাঁরা।
বসিরহাটে ১৯২ কিলোমিটার সীমান্তে জল ও স্থল দুই পথ রয়েছে। গোটা এলাকার কয়েকটি জায়গায় লোহার খুঁটি পোঁতা থাকলেও তা কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা নয়। গ্রামবাসীদের আশঙ্কা, ওপার বাংলার দিকে থেকে রাতের অন্ধকারে বাংলাদেশ থেকে দুষ্কৃতীরা দক্ষিণপাড়ায় ঢাকা দিতে পারে।
ঘোজাডাঙ্গার দক্ষিণপাড়া থেকে ইটিন্ডা পানিতর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সীমান্ত কাঁটাবিহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দফতর ভারত-বাংলাদেশ সীমানা বরাবর কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল। বাসিন্দাদের দাবি, রাজ্য সরকারের জমিজটের কারণে বেশ কিছু জায়গায় কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই দেশের সুরক্ষায় ফাঁক থেকে গেছে।
দক্ষিণপাড়া গ্রামের অপরপ্রান্তে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার লক্ষ্মীদাড়ি সীমান্ত। পায়ে হেঁটে পৌঁছাতে সময় লাগে মাত্র পাঁচ মিনিট। সেখানে নেই বেড়া। তাই দেশের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা।
তাঁরা বলেন, "এক সময়ে সীমান্তে বেড়া খুবই মজবুত ছিল। আমরা নিশ্চিন্তে বসবাস করছিলাম। বেশ কয়েক বছর হল রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তারগুলি ছিঁড়ে পড়ে যায়। তারপর থেকে ওপার থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশ বাড়তে থাকে গ্রামে।"
বাসিন্দাদের দাবি, "অশান্ত বাংলাদেশ থেকে দুষ্কৃতীরা যেকোনও সময়ে ঢুকে যেতে পারে। তাই অবিলম্বে বেড়া দেওয়ার ব্যবস্থা করুক সরকার। গ্রামবাসীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করুক।"