ছেলেধরা গ্রেফতারের পরে পুলিশের সঙ্গে বচসা যাত্রীদের
শেষ আপডেট: 26 June 2024 15:30
দ্য ওয়াল ব্যুরো, উত্তর ২৪ পরগনা: বুধবার ডাউন বনগাঁ-মাঝেরহাট লোকালে ব্যাগে করে ১১ মাসের একটি শিশুকে লুকিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় এক মহিলাকে ধরে ফেলেন যাত্রীরা। তাঁদের উপস্থিত বুদ্ধিতেই পরে শিশু পাচারের অভিযোগে ওই মহিলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মহিলার নির্মমতায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছে শিশুটি। সম্প্রতি পরের পর কয়েকটি ঘটনার প্রেক্ষিতে ছেলেধরা গুজবে গণপিটুনির ঘটনা রুখতে তৎপর হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ। এবার সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কি সক্রিয় হয়ে উঠল শিশুপাচার চক্র। বনগাঁ-মাঝেরহাট লোকালের এই ঘটনায় সেই প্রশ্নই সামনে আসছে।
বুধবারের ঘটনায় এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ওই মহিলা বামনগাছি থেকে একটি বড় ব্যাগ কাঁধে নিয়ে ট্রেনে উঠেছিল। হৃদয়পুর স্টেশন পার করার পরে শিশুর কান্নার আওয়াজ শুনতে পান যাত্রীরা। তাঁরা বুঝতে পারেন ওই মহিলার কাছে থাকা ব্যাগ থেকেই কান্নার আওয়াজ ভেসে আসছে। কিন্তু মহিলাকে নির্লিপ্ত দেখে সন্দেহ হয় যাত্রীদের। তখনই তাঁরা মহিলার ব্যাগ দেখতে চান। কিন্তু মুরগি নিয়ে যাচ্ছেন বলে বারবার ওই মহিলা তাঁদের বিভ্রান্ত করতে চান। তিনি বলেন, "মহিলার কথায় বিশ্বাস না করে জোর করে তার ব্যাগ খুলতেই দেখা যায় ১১ মাসের একটি শিশু গরমে ঘেমে দম বন্ধ হয়ে মৃতপ্রায় অবস্থায় রয়েছে। বিরাটি স্টেশনে ট্রেনটি দাঁড়ানোর পরে রেলওয়ে পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে মহিলাকে আটক করে। পুলিশের বাধায় গণপিটুনির হাত থেকে রক্ষা পায় ওই মহিলা।
বারাসতের কাজিপাড়ায় শিশু খুনের ঘটনার পরে উত্তর ২৪ পরগনা জুড়ে ছেলেধরা গুজব রটেছিল। কাউকে সন্দেহজনকভাবে এলাকায় ঘোরাঘুরি করতে দেখলেই গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়ানো হয়েছে ছেলেধরা গুজব। তাই গণপিটুনি ও গুজব ছড়ানো রুখতে আসরে নামে পুলিশ। মাইক নিয়ে সতর্ক করা হয় সাধারণ মানুষকে। গণপিটুনির ঘটনায় ও গুজব ছড়ানোর অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়। এতে গণপিটুনির ঘটনা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারা গেছে বলে প্রশাসনের দাবি। কিন্তু এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শিশুপাচার চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন অনেকেই।
বনগাঁ-মাঝেরহাট লোকালের যাত্রীদের আলোচনায় কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, কে চোর আর কে নয়, তা বোঝা সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে সব সময়ে সম্ভব হয় না। কাজিপাড়ায় ১১ বছরের বালকের মৃত্যুর পর যে সমস্ত গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে, সেখানে কিছু ক্ষেত্রে হয়তো গুজব রটেছিল, কিন্তু সবক্ষেত্রে গুজব বলে উড়িয়ে দেওয়া ঠিক হচ্ছে না। পাচারকারীরা এর সুযোগ নিচ্ছে।