শেষ আপডেট: 11th July 2023 06:35
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মণিপুর (Manipur) নিয়ে মামলায় সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) মঙ্গলবার ফের রাজ্য সরকার এবং মামলাকারীদের বক্তব্য শুনবে। সোমবারই প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলে দিয়েছেন, আদালত আইন-শৃঙ্খলার বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না। শান্তি ফেরাতে কোনও পক্ষ নির্দিষ্ট প্রস্তাব দিলে আদালত তা সরকারকে খতিয়ে দেখার পরামর্শ দেবে।
তবে হলফনামায় বিস্ময়কর তথ্য হল এখনও পর্যন্ত পুলিশ-সেনা-আধাসেনার অভিযানে ১৮১জনকে গ্রেফতার করা হলেও ১১০জনই জামিনে মুক্ত। কী করে এতজন ধৃত ব্যক্তি জামিন পেল তার কোনও ব্যাখ্যা হলফনামায় নেই। মঙ্গলবারের শুনানিতে সেই প্রসঙ্গ আসতে পারে। কোনও কোনও মহলের দাবি, চাপের মুখে বহু দুষ্কৃতীকে মুক্তি দিয়েছে প্রশাসন।
হলফনামায় রাজ্য সরকার জানিয়েছে, ইম্ফল উপত্যকা এবং পার্বত্য মণিপুর রাজ্যের দুই অংশেই বহু মানুষ খুন হয়েছেন। ইম্ফল উপত্যকায় মূলত সংখ্যাগুরু মেইতেই সম্প্রদায়ের বাস। অন্যদিকে, জনজাতি কুকিরা বসবাস করে পার্বত্য মণিপুরে। মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, চলতি জাতি দাঙ্গার মূল কেন্দ্র চূড়াইচাঁদপুর এবং বিষ্ণুপুরে নিহত হয়েছেন যথাক্রমে ২৬ এবং ১৮ জন। এই এলাকায় কুকিদের বাস তুলনামূলকভাবে বেশি।
আবার মেইতেইদের বসবাসের এলাকা ইম্ফল পূর্ব ও পশ্চিমে মারা গিয়েছেন ২৯ জন করে মোট ৫৮ জন। কুকি অধ্যুষিত কাকচিং এবং মেইতেইদের বসবাসের এলাকা কাংপোকপিতে মারা গিয়েছেন যথাক্রমে ২১ জন ও ৮ জন। তবে পুলিশ-সেনা-আধাসেনার অভিযানে কত জঙ্গি নিহত-আহত হয়েছে, বাহিনীর জওয়ানদের হতাহতের পরিসংখ্যান হলফনামায় নেই।
মুখ্যসচিবের পেশ করা রিপোর্টে ৪ জুলাই পর্যন্ত ঘটনার পরিসংখ্যান আছে। ৩ মে জাতি দাঙ্গা শুরু হয়েছিল। রিপোর্ট অনুযায়ী, গুলি, বোমা, ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যার পাশাপাশি বহু মানুষকে পুড়িয়ে খুন করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, হামলার পরও ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা থেকে স্পষ্ট মানুষকে এলাকা ছাড়া করা উভয়পক্ষের আসল লক্ষ্য। যে কারণে মাত্র দু মাসে ৫০৫৩টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ঘরছাড়া মানুষের সংখ্যা প্রায় ৫৫ হাজার।
মুখ্যসচিব হলফনামায় বলেছেন শান্তি প্রতিষ্ঠায় বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে রাজ্য জুড়ে তৈরি হওয়া অসংখ্য বাঙ্কার। দু-পক্ষই হামলার জন্য বাঙ্কার তৈরি করে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তৈরি থাকছে। নিরাপত্তা বাহিনী সেগুলি ভেঙে দিলেও নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, দিন দুই আগে মণিপুরের রাজ্যপাল অনসূয়া উইকি এই ব্যাপারে রাজ্যবাসীর প্রতি আর্জি জানিয়ে বলেছেন, তারা নিজেরাই যেন বাঙ্কার ভেঙে দেয়। এছাড়া নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন মহিলারা। একাধিক ঘটনায় বাহিনীকে অভিযান স্থগিত রেখে ফিরে যেতে হয়েছে মহিলারা মানব প্রাচীর গড়ে তোলায়।