শেষ আপডেট: 16th January 2025 21:47
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় সাসপেন্ড হওয়া ১২ জন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হল। ডেপুটি সিএমওএইচের অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। কোতোয়ালি থানায় করা এই এফআইআর-এ গাফিলতিতে মৃত্যুর ধারায় আরও কয়েকজনের নাম থাকতে পারে বলেও জানা যাচ্ছে।
প্রসূতি মৃত্যু-কাণ্ডে সিআইডি তদন্তের পাশাপাশি সরকার কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে, বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে সে অবস্থান স্পষ্ট করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ১২ জন চিকিৎসককে সাসপেন্ডের কথাও ঘোষণা করেন তিনি। নাম করে করে প্রত্যেকের গাফিলতি চিহ্নিত করেন নবান্নের বৈঠকে।
পাশাপাশি তিনি এদিন এও বলেন, যে ওষুধের ডেট পেরিয়ে যাচ্ছে কিনা বা তা ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা, তা সবসময় মনিটর করা হয়। যে স্যালাইন কাঠগড়ায়, তা এখনও অন্য একাধিক রাজ্যে চলছে বলেও দাবি করেন তিনি।
মমতা বলেন, 'মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ওই বিভাগের আরএমও ডক্টর সোমেন দাসকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। সিআইডি এর পরে বাকি তদন্ত করবে। সেই সঙ্গে ডক্টর দিলীপ কুমার পাল, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ডক্টর হিমাদ্রী নায়েক, ডক্টর মহম্মদ আলাউদ্দিন, ডক্টর জয়ন্ত কুমার রাউত (এমএসভিপি), ডক্টর পল্লবী ব্যানার্জী (সিনিয়র আরএমও), ডক্টর মৌমিতা মণ্ডল (পিজিটি) ডক্টর ভাগ্যশ্রী কুণ্ডু (পিজিটি), ডক্টর সুশান্ত মণ্ডল (ফার্স্ট ইয়ার পিজিটি), ডক্টর পূজা সাহা (ফার্স্ট ইয়ার পিজিটি), ডক্টর মনীশ কুমার (ফার্স্ট ইয়ার পিজিটি), ডক্টর জাগৃতি ঘোষ (সেকেন্ড ইয়ার পিজিটি), সবাইকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, 'যাঁরা সেদিন দায়িত্বে ছিলেন, যাঁদের জন্য এই কাণ্ড হয়েছে, তাঁদের রাখা যাবে না। তাঁদের হাতে অন্য রোগীরও ক্ষতি হতে পারে। সেই ঝুঁকি নেওয়া যাবে না।' মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'মানুষের জবাব চাওয়ার অধিকার আছে। যেখানে অন্যায় হয়, সেখানে কথা উঠবেই। আমরা যেমন চিকিৎসকদের প্রতি সহানুভূতিশীল, তেমনি মানুষের দিকটাও দেখতে হবে। তাই তদন্তের সমস্ত রিপোর্ট খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।'
মুখ্যসচিব রিপোর্ট পড়ে এদিন বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেন, সার্জারির সময়ে সিনিয়র চিকিৎসকদের তরফে যে যে বিষয় মেনে চলার কথা ছিল, তার অনেকটাই মানা হয়নি বলে জানা গেছে। মুখ্যসচিব জানান, দুটি রিপোর্টেই মেদিনীপুরে চিকিৎসকদের গাফিলতির তথ্য উঠে এসেছে। সেদিন আরএমও এবং কল ডিউটিতে যে ডাক্তাররা ছিলেন তাঁরা ওটিতে দেখতে যাননি। চিকিৎসক সৌমেন দাসকে ডাকা হলেও তিনি একবার দেখেই চলে গিয়েছিলেন। জুনিয়র ডাক্তারদের নিয়ে অপারেশন করা হয়েছিলয অ্যানাস্থেসিয়া সিনিয়র ডাক্তারদের দিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। সেটাও পিজিটিকে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ পুরো প্রক্রিয়ায় গাফিলতি ছিল। এমনকী রোগীর বাড়ির লোককে দিয়ে জোর করে মুচলেখাও লেখানো হয়েছিল।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন চিকিৎসকদের একাংশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, ৮ ঘণ্টা যে ডিউটি আওয়ার রয়েছে চিকিৎসকদের, তা অনেকেই পালন করেন না। সেই সময়ের মধ্যেই তাঁরা বেসরকারি জায়গায় চিকিৎসা চালান। এটা বরদাস্ত করা হবে না বলে জানান তিনি।