শেষ আপডেট: 12th October 2024 08:47
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর থেকেই পাকিস্তান ও বাংলাদেশ ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা শুরু করেছে। দু-দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও প্রসারিত করার চেষ্টা শুরু হয়। তারই অঙ্গ হিসাবে পাকিস্তানি পণ্য আমাদানিতে বাড়তি সতর্কতার শর্ত তুলে নিল বাংলাদেশ।
ঢাকার পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, পাকিস্তানি পণ্য মাত্রই প্যাকেট খুলে পরীক্ষা করার যে শর্ত ছিল তা প্রত্যাহার করা হল। কোনও পণ্য নিয়ে সন্দেহ বা গোয়েন্দা রিপোর্ট থাকলে তবেই চেক করা হবে। এই নিয়ম চালু করেছিলেন শেখ হাসিনা। ২০০৯ সালে তিনি দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর এমন কঠোর শর্ত চাপান পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখতে। ভারতসহ অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে আমদানি করা পণ্যের নমুনা পরীক্ষা করা। সব প্যাকেট খুলে দেখা হয় না।
এখন সেই শর্ত বাংলাদেশে প্রত্যাহার করায় ভারত কেন চিন্তিত? নয়া দিল্লির আশঙ্কা, শর্তবিহীন বাণিজ্যের সুযোগ নিয়ে পাকিস্তান বাংলাদেশে অস্ত্র-সহ অবৈধ পণ্য পাঠানোর সুযোগ পেয়ে গেল। বিষয়টি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় হওয়ায় প্রকাশ্যে ভারত এই ব্যাপারে মুখ খুলছে না। কিন্তু ২০০১-এর অভিজ্ঞতা থেকে নয়া দিল্লির কর্তারা চিন্তিত।
সে বছর বন্দর শহর চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক বেআইনি অস্ত্র ধরা পড়েছিল। সেগুলি পার্বত্য চট্টগ্রাম হয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে পাঠানোর পরিকল্পনা ছিল। তদন্তে জানা যায় ট্রাকগুলিকে পাকিস্তানি ও চিনা অস্ত্র ছিল। সেগুলি পাকিস্তানি সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই পাঠিয়েছিল। বাংলাদেশের ক্ষমতায় তখন বিএনপি। প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
২০০৮-র ভোটে বিএনপি পরাজিত হলে ক্ষমতায় ফেরেন হাসিনা। তিনি চট্টগ্রামের ঘটনার প্রেক্ষিতে পাকিস্তানি পণ্য আমদানিতে কড়া শর্ত আরোপ করেন। পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ মূলত গার্মেন্ট শিল্পের কাঁচামাল, চিনি এবং কিছু রাসায়নিক আমদানি করে। করাচি থেকে পাকিস্তানি পণ্য প্রথমে জাহাজে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। সেখান থেকে আসে চট্টগ্রামে। আকাশপথে পণ্য পাঠালে তা প্রথমে যায় দুবাই, শারজার মতো শহরে। সেখান থেকে আসে বাংলাদেশে। ভারতের মধ্য দিয়ে পণ্য আমদানির অনুমতি নেই।
বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড পাকিস্তানি পণ্যের উপর বাধ্যতামূলক বাড়তি নজরদারীর ধারাটি প্রত্যাহার করার কারণ হিসাবে বলেছে, এর ফলে মালপত্র আরও দ্রুত আসবে। চেষ্টা হচ্ছে সরাসরি করাচি থেকে পণ্যবাহী বিমানে ঢাকা, চট্টগ্রামে পণ্য আনার। এতে বাংলাদেশের নাগরিকেরা আরও কম দানে পাকিস্তানি পণ্য কিনতে পারবেন। বাজারে টিকে থাকতে ভারতীয় পণও দাম কমাতে বাধ্য হবে।