শেষ আপডেট: 14th January 2025 17:00
দ্য ওয়াল ব্যুরো: এভাবে রাজ্যের ঐতিহ্যকে নষ্ট হতে দেওয়া যায় না। ট্রামকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। মঙ্গলবার ট্রাম সংক্রান্ত মামলায় স্পষ্ট নির্দেশ কলাকা হাইকোর্টের।
আদালত এও বলেছে, ট্রামলাইন বুজিয়ে ফেলার কাজ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। আদালতের নির্দেশ পালন হচ্ছে কিনা, এবিষয়ে নিশ্চিত হতে রাজ্যকে ছবি-সহ রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, "ট্রাম রাজ্যের ঐতিহ্য। তা তুলে দেওয়া খুব সহজ কাজ। কিন্তু রাজ্যকে ট্রাম বাঁচাতে উদ্যোগ নিতে হবে। বহু দেশে ট্রাম চলে। কোথাও কোথাও রাস্তার একেবারে মাঝখান দিয়ে।" এ ব্যাপারে রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন আছে বলেও মনে করে আদালত।
শহরের দু জায়গা থেকে ট্রাম লাইন বুজিয়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে যথাযথ পদক্ষেপের নির্দেশের পাশাপাশি আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ, "উপর তলার হাত না থাকলে এই ভাবে ট্রাম লাইন বুজিয়ে ফেলা যায় না!"
বস্তুত, তথ্য বলছে, একসময় কলকাতায় গমগম করে ট্রাম চলত ২৭-২৮টি রুটে। বছর ১৫ আগেও এক ডজন রুটে সচল ছিল ট্রাম। ট্রামের টিংটিং ঘণ্টিতে, কাঠের সিটে, শেষ আসনে বসে খাওয়া বাদামভাজার খোলসে যে কত সুখদুঃখ-হাসিকান্না জমে আছে, তার ইয়ত্তা নেই। দেড় শতক ধরে শহরের নস্টালজিয়া বহন করা সেই ট্রাম নিয়েই ইদানিং অভিযোগের অন্ত নেই।
প্রায়ই অভিযোগ ওঠে, ট্রামলাইনের জন্য দুর্ঘটনা ঘটার। জনসংখ্যার তুলনায় রাস্তা অনেক কম। সময়ের সঙ্গে মানুষের ব্যস্ততাও যেন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। ফলে কালো ধোঁয়া উড়িয়ে, জোরালো শব্দ করে, গাঁকগাঁক করে ছুটে চলা গতির যুগে বড্ড বেমানান ট্রাম। তার শ্লথ গতি, বড়সড় চেহারা, নিজের পথে নিজের মতো দূষণহীন চলা-- এসবই যেন বড় বিড়ম্বনার কারণ।
তাই শেষমেশ ট্রামকে বিদায় জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তা নিয়েই হাইকোর্টে গড়িয়েছিল মামলা। তাতেই হাইকোর্ট জানিয়ে দিল, ট্রামকে এভাবে তুলে ফেলা যাবে না। বাঁচিয়ে রাখতে হবে শহরের এই ঐতিহ্যকে। তবে রাজ্যের তরফে এদিন আদালতে দাবি করা হয়, ট্রাম লাইন বুজিয়ে ফেলার কোনও নির্দেশ রাজ্যের পরিবহন দফতরের তরফে দেওয়া হয়নি।