শেষ আপডেট: 6 October 2023 21:41
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ‘রাজা ধন বিলোচ্ছেন অন্দরে, আর তা কুড়োচ্ছেন রানি।’ যোগেশচন্দ্র চৌধুরী ল’কলেজের অধ্যক্ষ মামলার শুনানি চলাকালীন শুক্রবার এই শব্দবন্ধটাই ব্যবহার করলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এভাবেই রাজবাড়ির অন্দর যে রাজার ধন বিলোনোর জায়গা নয়, পরোক্ষে সেটাই হয়তো স্মরণ করিয়ে দিলেন বিচারপতি। একইসঙ্গে মনে করালেন রাজা ধন বিলোলেও তা কুড়িয়ে নেওয়া রানিরও কাজ নয়।
বৃহস্পতিবারই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় যোগেশচন্দ্র চৌধুরী আইন মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুনন্দা ভট্টাচার্য গোয়েঙ্কা এবং ওই কলেজেরই অধ্যাপক অচিনা কুন্ডুকে পদ থেকে অপসারিত করেন। ইউজিসি নির্ধারিত যোগ্যতা তাঁদের নেই বলেই আদালতের পর্যবেক্ষণ। তাই শুক্রবার থেকেই সুনন্দা এবং অচিনা কলেজে ঢুকতে পারবেন না বলেই রায় দিয়েছিলেন। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। জানিয়ে দিয়েছিলেন, ওই দুজন যদি তাঁদের যোগ্যতা সম্পর্কে আদালতকে সন্তুষ্ট করতে পারেন, তা হলেই তাঁদের পুনর্বহাল করা হবে।
শুক্রবার কলেজের শুক্রবার অধ্যাপক অচিনা কুণ্ডুর বক্তব্য খতিয়ে দেখেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। পরে তাঁর অপসারণের নির্দেশ বহাল রাখলেন। এদিন তিনি বলেন, “এটা একটা বৃহত্তর ষড়যন্ত্র। এটা তদন্ত করে দেখতে হবে।’’ প্রয়োজনে যে সিবিআইকে তদন্তভার দিতে পারেন, সেই ইঙ্গিতও দিয়ে রাখলেন।
এদিন যোগেশচন্দ্র চৌধুরী ল' কলেজের সদ্য অপসারিত অধ্যক্ষ এবং অধ্যাপকের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ আনল রাজ্যের শিক্ষা দফতর। জানানো হয়, ২০২১, ২০২২ এবং ২০২৩ সালে পরপর তিনবছর অধ্যক্ষ সুনন্দা ভট্টাচার্য এবং অধ্যাপক অচিনা কুণ্ডুর বেতন বন্ধ এবং বিভাগীয় তদন্তের জন্য কলেজের গভর্নিং বডিকে সুপারিশ করেছিল রাজ্যের শিক্ষা দফতর। যদিও সেই সুপারিশ কার্যকর করেনি গভর্নিং বডি। আদালত নিযুক্ত স্পেশাল অফিসারের দাবি, গভর্নিং বডির সভাপতিকে সুপারিশ পত্র পাঠানো হলেও তা পৌঁছত সচিবের হাতে। সচিব ছিলেন সুনন্দা ভট্টাচার্য গোয়েনকা। মামলাকারির দাবি, ২০০০ সালে কলেজ যখন বেসরকারি থেকে সরকারি হয় সেই সময় গভর্নিং বডির সভায় মানিক ভট্টাচার্য, সুনন্দা ভট্টাচার্য গোয়েঙ্কা সহ আরও এক শিক্ষককে স্থায়ী অধ্যাপক পদে উন্নীত করা হয়। এবং সেই সময় গভর্নিং বডির সচিব ছিলেন মানিক ভট্টাচার্য এবং এই দুই অধ্যাপক ছিলেন সদস্য।
৯ অক্টোবর, সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। এই সমযের মধ্যে কলেজ সার্ভিস কমিশনের রিপোর্টও তলব করেছেন বিচারপতি।