শেষ আপডেট: 30th December 2024 17:29
দ্য ওয়াল ব্যুরো: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অবশেষে মুখ খুললেন অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কলকাতায় ইডির বিশেষ আদালতে শুরু হয়েছে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া।
প্রায় ২৯ মাস পর সম্প্রতি জেলমুক্তি ঘটেছে অর্পিতার। সোমবার অন্য অভিযুক্তদের মতো আদালতে হাজির হয়েছিলেন অর্পিতাও। তবে কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র এদিন নতুন করে অসুস্থ হয়ে পড়ায় চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি।
দুপুরে আদালত থেকে বেরনোর সময় অর্পিতা বলেন, "বিচারপ্রক্রিয়ার প্রতি আস্থা আছে। আশা রাখছি, আমি যোগ্য বিচার পাব।"
অর্পিতা জামিন পেলেও পার্থ অবশ্য এখনও জেলবন্দি। এদিন আদালত থেকে বেরনোর সময় পার্থ বলেন, "আমি নির্দোষ। আমাকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তবু যাঁরা এখনও আমার পাশে রয়েছেন তাঁদের সকলকে ধন্যবাদ।" নববর্ষের জন্য অগ্রিম শুভেচ্ছাও জানান পার্থ। নিজের বিধানসভা কেন্দ্র বেহালা পশ্চিমের বাসিন্দাদের কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
তবে জেলবন্দি থাকাকালীন অর্পিতা নিজেই আদালতে দাবি করেছিলেন, মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যারে নির্দেশেই তাঁর ফ্ল্যাটে অনেকেই টাকা রেখে যেতেন। তিনি সেবিষয়ে কিছু জানেন না। নিজেকে বারেবারে নির্দোষ বলেও দাবি করেছেন তিনি। তবে পার্থ বা অর্পিতাকে এদিনও পরস্পরের দিকে কোনও কথা বলতে দেখা যায়নি। যা নিয়েও বিভিন্ন মহলে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। বস্তুত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলার সূত্র ধরেই প্রকাশ্যে এসেছিল 'অপার প্রেমের কাহিনী'!
২০২২ সালের ২২ জুলাই। নিয়োগ দুর্নীতির দায়ে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছিল ইডি। পার্থকে জেরার সূত্রেই তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে দু'দফায় প্রায় ৫১ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করেছিলেন তদন্তকারীরা। রাশি রাশি নগদ টাকার সেই ছবি দেখে বাংলা তো বটেই হতভম্ব হয়ে গিয়েছিল তামাম দুনিয়া।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে পরে আরও একাধিক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ধৃতদের মধ্যে কয়েকজন জামিনে মুক্ত। মোট ৫৪ জনের নামে অভিযোগ রয়েছে।
নিয়োগ মামলায় জামিনে মুক্ত কুন্তল ঘোষ, তাপস মণ্ডলরাও এদিন আদালতে হাজির হয়েছিলেন। তাপস বলেন, "আমি অসুস্থ। তবু আদালতকে সম্মান করি, তাই সশরীরে উপস্থিত হয়েছি।" আদালতের প্রতি আস্থা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কুন্তলও।
এদিকে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়োগ মামলার চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া শেষ করার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিমকোর্ট। কিন্তু সোমবার ৩০ ডিসেম্বরও চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া শেষ করা গেল না। আদালত সূত্রের খবর, শুনানির পরবর্তী দিন হিসেবে ২ জানুয়ারি নির্ধারিত করা হয়েছে। ওই দিন চার্জ গঠন হয় কিনা, সেটাই দেখার।