শেষ আপডেট: 20th March 2025 07:35
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আট দিনের জন্য মহাকাশে গিয়ে ফিরেছেন ন'মাস পর। তবে এখনই শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে উদ্বেগমুক্ত নন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোর।
আপাতত আগামী ৪৫ দিন তাঁদের ঠিকানা হিউস্টন জনসন স্পেস সেন্টার। সেখানেই কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে তাঁদের। সুনীতাদের সঙ্গে রাখা হয়েছে অপর দুই মহাকাশচারী নিক হগ এবং রুশ নভশ্চর আলেকজান্ডার গর্বুনভকে। সুনীতাদের ফেরাতে কিছু দিন আগে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে গিয়েছিলেন তাঁরা। ফলে তাঁদের নিভৃতবাসের সময় অনেকটা কম হতে পারে।
দীর্ঘ সময় নিভৃতবাসে রাখার কারণ কী?
নাসার তরফে বলা হচ্ছে, এই প্রথমবার মহাকাশ যাননি সুনীতা বা উইলমোর কেউই। দীর্ঘদিন মহাকাশে থাকা, স্পেসওয়াক করার রেকর্ড রয়েছে তাঁদের। তবে, ৮ দিনের জন্য গিয়ে ৯ মাস আটকে থাকার ঘটনা এবারেই প্রথম।
আসলে দীর্ঘদিন মহাকাশে থাকার কারণে শারীরিক নানা জটিলতার সৃষ্টি হয় মহাকাশচারীদের। সুনীতারাও ব্যতিক্রম নন। তাই এতদিন মহাকাশে থাকার কারণে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে পারবেন না তাঁরা। পাশাপাশি মহাকাশ থেকে নতুন রোগ নিয়ে আশার আশঙ্কা থাকে, অন্যদিকে পৃথিবীর জীবাণুতেও সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাঁদের। তাই কোয়োরেন্টিনই একমাত্র উপায়।
কী কী সমস্যার মুখে পড়তে পারেন মহাকাশচারীরা?
‘বেবি ফিট’ সমস্যা: দীর্ঘদিন মহাকাশে থাকলে পদচারণার অভাবে পায়ের তলার শক্ত চামড়া নরম হয়ে যায়। ফলে পৃথিবীতে ফিরে হাঁটতে গিয়ে ব্যথা অনুভব করতে পারেন মহাকাশচারীরা। সাধারণত কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়া: নাসার তথ্য অনুযায়ী, প্রতিমাসে মহাকাশচারীদের ওজন বহনকারী হাড় প্রায় ১% ঘনত্ব হারায়, যা অনেক ক্ষেত্রে স্থায়ী ক্ষতির কারণ হতে পারে।
রক্তচাপের পরিবর্তন ও দৃষ্টিশক্তির সমস্যা: মহাকর্ষের অভাবে রক্তপ্রবাহের স্বাভাবিক গতিবিধি বদলে যায়, রক্ত জমাট বাঁধার সম্ভাবনাও থাকে। এমনকি চোখের আকৃতি পরিবর্তিত হয়ে দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
বিপজ্জনক রেডিয়েশন: পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ও চৌম্বকীয় ক্ষেত্র মানব দেহকে রক্ষা করে, কিন্তু মহাকাশে এ ধরনের প্রতিরক্ষা নেই। ফলে মহাকাশচারীরা উচ্চমাত্রার রেডিয়েশনের মুখে পড়েন, যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই সুনীতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোর পৃথিবীতে ফিরলেও, দীর্ঘদিনের মহাকাশ যাত্রার প্রভাবগুলি কাটিয়ে উঠতে বিশেষ চিকিৎসার প্রয়োজন। তাই এই কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা।