শেষ আপডেট: 6th November 2024 19:53
দ্য ওয়াল ব্যুরো: যত কষ্টই হোক কাঁদতে পারেন না, এমন অনেকেই আছেন। গুমড়ে গুমড়ে দুঃখ পেতে থাকেন। কিন্তু এর পিছনের কারণ কী? যাঁদের অশ্রুগ্রন্থি একেবারেই শুকিয়ে গিয়েছে, যাঁরা কাঁদতে পারেন না। তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, সেই সব ব্যক্তিরা এবার থেকে আনন্দে হোক বা কষ্টে, কাঁদতে পারবেন।
বহুদিনের গবেষণার পর অবশেষে সফল হয়েছে বিজ্ঞানীরা। বিশ্বে এই প্রথম গবেষণাগারে তৈরি করা সম্ভব হল অশ্রুগ্রন্থি বা ‘টিয়ার গ্ল্যান্ডস’। গবেযণাগারে যে আধারে রেখে কোষগুলিকে পরীক্ষা করা হয় তাকে বলা হয় পেট্রি ডিশ। এখানে গবেষণাটি করা হয়েছে দীর্ঘদিন ধরে।
অশ্রুগ্রন্থি নতুন দিশা দেখাবে
বিজ্ঞানীদের মতে, মানুষের শরীরের স্টেম সেল থেকে কোষ নিয়ে কৃত্রিম ভাবে বানানো হয়েছে অশ্রুগ্রন্থি। এটি মানুষের শরীরে কীভাবে বসানো হবে? বিজ্ঞানীদের দাবি, নতুন অশ্রুগ্রন্থি প্রতিস্থাপন করলেই যে মানুষ আনন্দে, বিষাদে কাঁদতে পারেন না তিনিও কাঁদতে পারবেন।
গোটা গবেষণাপত্রটি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘সেল স্টেম সেল’-এ প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে এই গবেষণা চলছিল। বিজ্ঞানীদের একটা বড় দল এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আশা করা যাচ্ছে, এই পদ্ধতি আগামী দিনে মানুষের চোখে একেবারেই শুকিয়ে যাওয়া অশ্রুগ্রন্থিগুলির জায়গায় এটি লাগিয়ে নতুন দিশা দেখাবে।
কীভাবে করা হয়েছে এই গবেষণা?
বিজ্ঞানীরা প্রথমে মানুষের শরীর থেকে প্লুরিপোটেন্ট স্টেম সেল সংগ্রহ করেছেন। সেই কোষ থেকে তাঁরা তৈরি করেন খুবই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ল্যাক্রিমাল কোষ বা টিয়ার গ্ল্যান্ডের অণু সংস্করণ। তাঁদের মতে, এই সব সেলগুলি সংখ্যায় বেড়ে পূর্ণাঙ্গ টিয়ার গ্ল্যান্ড তৈরি করে। তাঁরা পেট্রি ডিশে যে ল্যাক্রিমাল কোষ বা টিয়ার গ্ল্যান্ডের অণু সংস্করণ তৈরি করার পর দেখেন, সেগুলি অশ্রুগ্রন্থির মতোই কাজ করছে।
অশ্রুগ্রন্থি শুকিয়ে যাওয়ার কারণ কী?
চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, মানুষের অক্ষিকোটরে চোখের মণির ঠিক উপরেই থাকে অশ্রুগ্রন্থি। এই গ্রন্থি থেকে ক্ষরণই মানুষের চোখকে সব সময় ভিজিয়ে রাখে। চোখে হঠাৎ ঢুকে যাওয়া ধুলোবালি ও নানা রকমের ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকে বাঁচিয়ে রাখে চোখের জল। চোখের ভালো থাকার জন্য দরকার লুব্রিক্যান্ট। যখন অশ্রুগ্রন্থি পর্যাপ্ত লুব্রিক্যান্ট উৎপাদন করতে পারে না তখনই ড্রাই আইজের মতো সমস্যা হয়ে থাকে।
এভাবেই অশ্রুগ্রন্থি শুকিয়ে যেতে থাকে। এই গ্রন্থি থেকে ক্ষরণ স্বাভাবিকের চেয়ে খুব বেশি বেড়ে গেলে মানুষের চোখ বেশি আর্দ্র হয়ে পড়ে। ফলে দৃষ্টি কমতে শুরু করে। আবার গ্রন্থি থেকে ক্ষরণ স্বাভাবিকের চেয়ে কমে গেলে চোখ একেবারেই শুকিয়ে যায়। চোখে যন্ত্রণা হতে থাকে।