শেষ আপডেট: 6th May 2024 16:32
দ্য ওয়াল ব্যুরো: চাঁদে মাটির নীচে স্তরে স্তরে জমে আছে বরফ। জলের ধারা বইছে। এতদিন যা ভাবা হয়েছিল তার পাঁচ থেকে আট গুণ বেশি জল আছে চাঁদে। আইআইটি কানপুর, ইউনিভার্সিটি অফ সাদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া, জেট প্রপালশন ল্যাব এবং আইআইটি (আইএসএম) ধানবাদের গবেষকরা বড় দাবি করেছেন, চাঁদে মাটির নীচে জলের বিরাট ভাণ্ডার আছে। নতুন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে চন্দ্রপৃষ্ঠের প্রায় দুই থেকে চার মিটার নীচে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি বরফ রয়েছে।
ইসরোর মতে, চাঁদের উত্তর মেরুতে দক্ষিণ মেরুর তুলনায় দ্বিগুণ বরফ রয়েছে। এমনকী ড্রিল করে সেই বরফ নাকি বের করাও সম্ভব। পৃথিবীতে জলের সঞ্চয়ে টান পড়লে পৃথিবীর আত্মজা জল সাপ্লাই দিতে পারবে এক সময়।
বহু কোটি বছর আগে চাঁদের বিশাল বিশাল আগ্নেয়গিরিগুলো ছিল জীবন্ত। তাদের জ্বালামুখ থেকে অসম্ভব গরম লাভাস্রোত (যার অন্যতম উপাদান- ‘ম্যাগমা’) বেরিয়ে এসেছিল। ম্যাগমা বেরিয়ে আসে পৃথিবী ও চাঁদের ম্যান্টল থেকে। সেই ম্যাগমার মধ্যেই ছিল কাচের টুকরোর মতো পদার্থ। যাকে বলা হয়, ‘ভলক্যানিক গ্লাসেস’। চাঁদের প্রায় গোটা পিঠ জুড়ে এখনও ছড়িয়ে রয়েছে সেই কাচের টুকরোগুলি। প্রচুর পরিমাণে। প্রায় সাড়ে ৪ দশক আগে নাসার দু’টি মহাকাশযান ‘অ্যাপোলো-১৫’ ও ‘অ্যাপোলো-১৭’ চাঁদের পিঠ থেকে কুড়িয়ে এনেছিল সেই ম্যাগমায় মিশে থাকা কাচের টুকরোগুলো। তখনই বিজ্ঞানীরা দেখেছিলেন, সেই ‘ভলক্যানিক গ্লাসেস’ টুকরোগুলো একেবারে ভিজে চুপচুপে হয়ে রয়েছে। তাঁদের ধারণা হয়েছিল, চাঁদের পিঠের কোনও কোনও অংশ, যেখানে জল এখনও আছে।
এতদিন মনে করা হত চাঁদের দক্ষিণ মেরুর অন্ধকার পিঠে জল জমে থাকলেও থাকতে পারে। এই আবিষ্কারের পরে সেই ধারণা বদলে গেছে। সোলার সারফেস অর্থাৎ চাঁদের যে পিঠে সূর্যের আলো পড়ে সেখানেও জল আছে বলে দাবি ইসরোর।
১৯৬৯ সালে নাসার অ্যাপোলো মিশনে জানা গিয়েছিল চাঁদের পিঠ একেবারে রুক্ষ, শুষ্ক। জলের ছিটেফোঁটাও থাকতে পারে না। পরবর্তীতে ‘নাসার লুনার ক্রেটার অবজারভেশন অ্যান্ড সেন্সিং স্যাটেলাইট’ জানান দিয়েছিল, শুষ্ক নয় চাঁদের পিঠ, বরং বরফ জমে আছে চাঁদের মেরুতে। এরপরে নাসার একাধিক চন্দ্র-অভিযানে সে প্রমাণ মিলেছে। ক্যাসিনি মিশন, ডিপ ইমপ্যাক্ট কমেট মিশনে মহাকাশবিজ্ঞানীরা একই কথা বলেছিলেন। ইসরোর প্রথম চন্দ্রযাত্রা তথা চন্দ্রযান-১ মিশন সফল না হলেও, মহাকাশবিজ্ঞানীরা বলেছিলেন চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে বরফ জমে আছে সেটা ধরা পড়েছিল চন্দ্রযান-১ এর অরবিটারে। গবেষকদের দাবি, পৃথিবীতে যত জল রয়েছে, চাঁদের ম্যান্টলে থাকা জলের পরিমাণ তার চেয়ে কোনও অংশে কম হবে না।