শেষ আপডেট: 23rd October 2024 17:39
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পৃথিবীতে কেউ জন্ম নিলে তার মৃত্যু আবশ্যিক। মৃত্যুর পরের মুহূর্তে মানুষের মস্তিস্কে, শরীরে ঠিক কী ঘটে, তা নিয়ে অনেক গবেষণাই করেছেন বিজ্ঞানীরা। তবে পৃথিবীতে এমন অনেক ঘটনা ঘটে, যা বিজ্ঞান দিয়েও প্রমাণ করা যায় না। যেগুলিকে ‘সত্যি’ বলে মেনে নেওয়া দায় হয়ে যায়। বহু গবেষণায় এমনটা প্রকাশ পেয়েছে, মৃত্যুর পরেও মানুষের মস্তিস্কে ঘটতে থাকে অনেক কিছু। সাত মিনিট পর্যন্ত সেই মৃত ব্যক্তি তার জীবনের সবচেয়ে ভাল মুহূর্তগুলোর কথা ভাবতে থাকে। কিন্তু বেঁচে ফিরতে পারে না।
একথাই ভুল প্রমাণ হল। মরে যাওয়ার ২৪ মিনিট পরে আবারও জীবিত হয়ে গেলেন এক ঘটনা। শুনে অবিশ্বাস্য মনে হলেও, এমনই একটি ঘটনা সামনে এসেছে। মিররের-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লরেন কানাডে নামে এক মহিলা ২৪ মিনিটের জন্য মারা গিয়েছিলেন। তারপরে তিনি বেঁচে ফেরেন।
সেই মহিলার মতে, তিনি মারা গিয়েছিলেন, কিন্তু মৃত্যুর মাত্র ২৪ মিনিট পরে তিনি আবার জীবিত হয়েছেন। তিনি এও জানান যে, মৃত্যুর পরে তিনি এমন কিছু দেখেছিলেন, যা কেউ বিশ্বাস করতে পারবে না। মহিলার নাম লরেন কানাডে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় লরেন জীবিত হওয়ার পর এক অবাক করা গল্প সবার সঙ্গে শেয়ার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, একদিন হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। তখন বাড়িতেই ছিলেন লরেন। কয়েক মিনিট পর ডাক্তার তার বাড়িতে এসে তাকে পরীক্ষা করেন। তারপর তারা তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
আদৌ কি লরেন মারা গিয়েছিলেন?
এবার প্রশ্ন উঠতেই পারে, ডাক্তার কি ঠিক ছিলেন? আদৌ কি লরেন মারা গিয়েছিলেন? উত্তর হল হ্যাঁ। ডাক্তারের মতে, তিনি শ্বাস নিচ্ছিলেন না। কিন্তু প্রায় ২৪ মিনিট পর একটি অলৌকিক ঘটনা ঘটে। তাতে ডাক্তারও হতবাক হয়ে যান। লরেন হঠাৎই শ্বাস নিতে শুরু করেন।
এরপর তাঁকে আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রথমেই পরীক্ষা করা হয় লরেনের মস্তিস্ক। তারপরে দেখা যায় তাঁর মস্তিষ্কের কোনও রকম ক্ষতি হয়নি। তা দেখে চিকিৎসকরাও অবাক হন। তবে জীবিত হওয়ার পরে তিনি দুই দিন কোমায় ছিলেন। এমনকি পুরনো কথাও মনে পড়ছিল না তাঁর।
এমন কেন হয়েছে?
চিকিৎসকদের মতে, ‘মৃত’ ঘোষণা করার পরে আবার জেগে ওঠার মতো এই ঘটনাকে বলা হয় ল্যাজারাস সিনড্রোম। এবার মনে প্রশ্ন আসতেই পারে কী এই ল্যাজারাস সিনড্রোম? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরী অব মেডিসিন এবং ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব হেলথ-এর তথ্য অনুযায়ী, কার্ডিও পালমোনারি রিসাসিটেশন বা সিপিআর দেওয়া শেষ করার পর দেহের সঞ্চালন প্রক্রিয়া আবার নিজে থেকেই ফিরে আসে। তবে এমন ঘটনা খুবই কম দেখা যায়। শরীরে রিটার্ন অব স্পনটেনিয়াস সার্কুলেশন ঘটা কে ল্যাজারাস সিনড্রোম বলা হয়।
এই নামের জন্ম কোথা থেকে?
এই ল্যাজারাস সিনড্রোম নামটি নেওয়া হয়েছিল বাইবেলে বর্ণিত ল্যাজারাস নামে এক ব্যক্তির কাহিনি থেকে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে প্রথম ১৯৮২ সালে এই ধরণের ঘটনা সম্পর্কে প্রথম জানা যায়। এর পর ১৯৯৩ সালে এই ঘটনাগুলিকে ল্যাজারাস সিনড্রোম নাম দেওয়া হয়। এর পিছনে একটি কারণও রয়েছে। মনে করা হয়, ল্যাজারাসকে তার মৃত্যুর চার দিন পর তাকে জীবিত করেছিলেন যিশু খ্রিস্ট। তাই চিকিৎসা বিজ্ঞানে এর নাম রাখা হয়েছে ল্যাজারাস সিনড্রোম।