শেষ আপডেট: 3rd August 2024 19:18
দ্য ওয়াল ব্যুরো: অযোধ্যায় একটি গণধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে উত্তর প্রদেশের রাজনীতির পারা চড়তে শুরু করেছে। যোগী আদিত্যনাথের পুলিশ-প্রশাসন শনিবার অভিযুক্তের বাড়ি ও বেকারি ভেঙে দিয়েছে। প্রশাসনের দাবি, দুটোই বেআইনি। বেকারিটি একটি পুকুর ভরাট করে তৈরি করা হয়েছিল। টানা বৃষ্টিকে মাটি অত্যাধিক নরম হয়ে যাওয়ায় বুলডোজারটি বসে যায়। ফলে বেকারি পুরোপুরি ভাঙা যায়নি। পুলিশ সেটি সিল করে দেয়। কিন্তু রাজনীতি চড়েছে পুরোদমে।
যোগী প্রশাসনের বুলডোডার অপারেশনকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন ইদানীং সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে থাকা বিএসপি নেত্রী মায়াবতী। রাজ্যের তিনবারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, গণধর্ষণের মতো ঘটনায় এটাই উপযুক্ত শাস্তি।
অন্যদিকে, আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের প্রশ্ন ধর্ষণকারী কে বা কারা তা প্রমাণের আগেই কী করে সাজা দেওয়া হচ্ছে। তাঁর বক্তব্য, ধর্ষণের মতো অপরাধ প্রমাণে সবচেয়ে জরুরি ডিএনএ টেস্ট। সেটা কেন করা হচ্ছে না। বুলডোজার দিয়ে ঘরবাড়ি ভেঙে দেওয়ারও প্রতিবাদ করেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
আসলে পুলিশ গণধর্ষণের ঘটনায় মঈদ খান নামে যে ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে সে সমাজবাদী পার্টির স্থানীয় নেতা বলে পরিচিত। অযোধ্যার বর্তমান সাংসদ অবধেশ প্রসাদ সমাজবাদী পার্টির প্রবীণ নেতা ও প্রাক্তন মন্ত্রী। অভিযুক্ত মঈদ খান সাংসদের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করে অবধেশ প্রসাদ শনিবার বিকালে বলেন, আমাদের দল এবং সাংসদ হিসাবে আমি ধর্ষিতার পরিবারের পাশে আছি। তারা যাতে সরকারের কাছ থেকে দ্রুত ক্ষতিপূরণের অর্থ পায় সে চেষ্টা করা হবে। দোষীদের সাজাও নিশ্চিত করে ছাড়ব। তাঁর বক্তব্য, এমন ঘৃণ্য কাজ সমর্থন করার প্রশ্ন ওঠে না। কিন্তু ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার সকলের আছে। ডিএনএ টেস্ট করালেই জানা যাবে প্রকৃত অপরাধী কে।
আসলে সমাজবাদী পার্টির একাংশ দাবি করছে অযোধ্যা তথা ফৈজাবাদ লোকসভা আসনে বিজেপি এবার হেরে যাওয়ায় নানাভাবেই বিরোধী দলকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পদ্ম শিবির ও প্রশাসন। গণধর্ষণের ঘটনায় সমাজবাদী পার্টির নেতাকে গ্রেফতার তেমনই এক অপকৌশল। দলীয় সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব সেই কারণেই আরও দাবি তুলেছেন, ডিএনএ টেস্টে ধৃত ব্যক্তি নিরপরাধ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ আধিকারিকদের সাজা দিতে হবে।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতীর এই ইস্যুতে বিজেপির পাশে দাঁড়িয়ে যাওয়া নিয়ে রাজনৈতিক মহলের অভিমত, লোকসভা ভোটে বিজেপির মতো বহুজন সমাজ পার্টি দলিত ভোটেও থাবা বসিয়েছে অখিলেশের দল। মায়াবতী তাঁর হারানো ভোট ব্যাঙ্ক ফিরে পেতে মরিয়া। বিএসপি নেত্রী মনে করছেন, উত্তর প্রদেশে বিএসপির প্রাসঙ্গিকতা ফিরে পেতে হলে সমাজবাদী পার্টির ভোট ব্যাঙ্কেই আগে থাবা বসাতে হবে।