শেষ আপডেট: 7th August 2024 13:36
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গত কয়েকদিন ধরেই হিংসার আগুনে জ্বলছে বাংলাদেশ। অশান্তির মধ্যেই অনেকে পুরনো আক্রোশ মেটাচ্ছে বলে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন তোলা হচ্ছিল। এবার সামনে এল তেমনই একটি ঘটনা।
সোমবার দুপুরে হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পরই বাংলাদেশ জুড়ে একাধিক হামলার ঘটনা ঘটে। ওই রাতেই বাগেরহাটের রাখালগাছি ইউনিয়নের ছোট পাইকপাড়ায় ঘরে ঢুকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয় মধুদিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মৃণালকান্তি চট্টোপাধ্যায়কে (৬৫)।
গুরুতর আহত অবস্থায় বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন নিহত অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের স্ত্রী শেফালি চট্টোপাধ্যায় (৬০) ও মেয়ে ঝুমারানি চট্টোপাধ্যায়(৩৫)। বুধবার হাসপাতালের বেডে শুয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে ঝুমারানি বলেন, "আমরা তো কোনও দল করি না। শুধু শুধু আমাদের ওপর কেন হামলা? কেন আমার বৃদ্ধ বাবাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলল?"
খানিক থেমে জবাবও দিয়েছেন নিজেই। নিহত শিক্ষকের মেয়ের অভিযোগ, "জমি জমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে প্রতিবেশী হুমায়ুন শেখ ও নুরুল ইসলামের সঙ্গে আমাদের পরিবারের বিরোধ ছিল। সোমবার দুপুরে হাসিনা দেশ ছেড়ে পালাতেই ওরা বাড়ি বয়ে এসে, দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে গিয়েছিল। তখনও বুঝিনি রাতে এসে আবার হামলা করবে। বাবাকে মেরে ফেলবে! ঘর–দরজা ভেঙে সব নিয়ে গেছে। কিচ্ছুই নেই।।"
সোমবার রাতের বীভৎসতার বর্ণনা দিতে গিয়ে বারে বারে শিউড়ে উঠছিলেন ঝুমারানি। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "চোখের সামনে বাবাকে পিটিয়ে কুপিয়ে মেরে ফেলল। ঘরে আমার ছোট ছেলে ও বোন ছিল। তাদের খাটের নিচে বাক্সে লুকিয়ে রেখে বাঁচিয়েছি।"
ঘটনার পর থেকেও অভিযুক্ত হুমায়ুন শেখ ও নুরুল ইসলাম পলাতক বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আক্ষেপের সুরে সদ্য পিতৃহারা মেয়ে বলেন, "বাবাকে মেরে ফেলল চোখের সামনে। আমাদেরও মেরে ফেলতে চেয়েছিল। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছি।"
বেসরকারি সূত্রের খবর, গত কয়েকদিনের হিংসায় ১৭০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সেই তালিকায় মৃণালকান্তি চট্টোপাধ্যায়ের মতো আরও অনেকে রয়েছেন বলে দাবি স্থানীয় সূত্রের।