শেষ আপডেট: 21st June 2024 16:49
দ্য ওয়াল ব্যুরো: নবদ্বীপের বর। ব্রাজিলের কনে। সিনেমা বা রূপকথার গল্প নয়। জলজ্যান্ত এক প্রেমের কাহিনি। ১৫ হাজার কিমি দূরত্বের ভাসমান সেই প্রেম বাস্তবের জমিতে সংসার পাততে চলেছে আগামী শুক্রবার, ২৮ জুন। এই জন্যই বলে প্রেমের সীমান্ত কোনও কাঁটাতারে বাঁধা যায় না। তার গতি অবাধ, বাধাহীন। প্রেমের নিজস্ব ভাষা থাকে, যা দেশকালেরও অতীত। যেমনটা ঘটেছে এই দুজনের ক্ষেত্রে। পাত্রপাত্রীর বাড়ির লোকও সেই অসাধ্য সাধন করে নিয়েছেন সহজেই। গুগল ট্রান্সলেটরে অনুবাদের সাহায্য নিয়ে দেদার কথা চলছে দুপক্ষে।
নবদ্বীপের বাসিন্দা হলেও কাজের সূত্রে গুজরাতের সুরাতে বাস করেন বঙ্গসন্তান কার্তিক মণ্ডল। চার বছর আগে সোশ্যাল মিডিয়ার ঘটকালিতে তাঁদের পরিচয় হয়। ম্যানুয়েলা আলভেজ দা সিলভা নামে ওই যুবতী প্রেমিক কার্তিকের টানে ১৫ হাজার কিমি দূরত্ব পাড়ি দিয়ে চলে আসেন হবু বরের দেশের বাড়িতে।
কার্তিকের বাড়িতে এখন বিয়ের তোড়জোড় চলছে জোরদার। প্যান্ডেল বাঁধার কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। বাঙালি পরিবারের সঙ্গে মানিয়ে-গুছিয়ে নিয়ে ম্যানুয়েলা পরছেন শাড়ি। খাওয়ার অভ্যাস করছেন বাঙালি খাবারের। বিয়েও হবে বাঙালি আচার-অনুষ্ঠান মেনে।
এত কিছুর মধ্যেও বাদ সাধছে ভাষা। গলার কাঁটার মতো বিঁধে আছে বর-কনের পরিবারের মধ্যে। কার্তিকের পরিবারের সদস্যরা জানালেন, তাই তাঁরা একটি সমাধানসূত্রও বের করে নিয়েছেন। গুগল ট্রান্সলেট অ্যাপ ব্যবহার করে হবু কনের সঙ্গে কথা বলছেন তাঁরা।
কীভাবে? তাঁরা ট্রান্সলেটরে বাংলা ভাষায় মনের কথা লিখছেন প্রথমে। তারপর কনের জন্য ইংরেজিতে অনুবাদ করে নিচ্ছেন। ম্যানুয়েলার বাবা-মাকেও বিয়েতে আসার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে একইভাবে। তাঁরাও মেয়ে-জামাইকে আশীর্বাদ করতে নবদ্বীপে আসছেন। নিজের চোখে সাক্ষী হতে চান সাতপাকে কী করে বাঁধা পড়ে তাঁদের মেয়ে।
ম্যানুয়েলা আলভেজ দা সিলভা বলেন, তিনি শাড়ি পরতে ভালোবাসেন। শুধু তাই নয়, বাঙালি মেয়েদের মতোই শাড়ি পরেন ব্রাজিল কন্যা। বাঙালি খাবারও তাঁর পছন্দ। আপাতত তাই খাচ্ছেন, তবে ঝালমশলা ছাড়া। শুধু মণ্ডল পরিবারই নয়, গোটা এলাকা এই বিয়েকে কেন্দ্র করে উত্তেজনায় টগবগ করে ফুটছে। কারণ এই প্রথম পেলের দেশের কোনও মেয়েকে বিশ্বকাপ জেতার মতোই ঘরে তুলতে চলেছেন পাড়ার কার্তিক।