আহত ইউক্রেনীয় সৈন্যকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ভভচানস্কে। (ছবিঃ রয়টার্স)
শেষ আপডেট: 13th May 2024 20:27
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আমেরিকার সংসদে বিপুল অঙ্কের আর্থিক সাহায্যের বিল পাশ হয়েছে। অত্যাধুনিক মার্কিন সমরাস্ত্র এসে পৌঁছবে কিছুদিনের মধ্যেই। এদিকে ইউক্রেনের দুর্ভোগের যেন কমতি নেই। উলটে সব আশঙ্কাকে সত্যি করে ইউক্রেনের পূর্ব সীমান্ত জুড়ে আচমকা আক্রমণ চালিয়েছে রাশিয়ার বাহিনী। মস্কোর কর্তারা বলছেন, ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভের উপকণ্ঠে ভভচানস্ক নামক একটি ছোট শহর দখলে এনেছে রাশিয়া। পাল্টা ইউক্রেনের সেনাকর্তারা দাবি করেছেন, খারকিভের পতন এখনও দেরি আছে, চরম লড়াই চলছে শহরের বাইরে।
যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই রুশ হামলার অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল খারকিভ। রাশিয়ার সীমান্ত থেকে মাত্র তিরিশ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত খারকিভ কিভের পরেই ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম খবর, পাশাপাশি ইউক্রেনের অন্যতম সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ও উচ্চশিক্ষার কেন্দ্র। অথচ লাগাতার যুদ্ধে শহরের প্রায় তিনভাগই ধ্বংসস্তুপে পরিণত। দলে দলে বাসিন্দারা শহর ছেড়ে সরে গিয়েছেন পশ্চিমে। কিন্তু তারপরেও এক বিরাট জনসংখ্যা এখনও রয়ে গিয়েছেন খারকিভে। ইউক্রেনের কাছে অতএব খারকিভকে বাঁচানো কৌশলগত দিক দিয়ে মহাগুরুত্বপূর্ণ। কিভের তরফে দফায় দফায় বাহিনী পাঠানো হচ্ছে খারকিভ অঞ্চলে। কিন্তু একইসঙ্গে ইউক্রেনের কর্তারা জানাচ্ছেন, সংখ্যায়, অস্ত্রে, আকাশ থেকে বোমাবর্ষণে সবেতেই এগিয়ে রয়েছে রুশ বাহিনী। পশ্চিমী সাহায্য না পেলে ইউক্রেনের পক্ষে বেশিদিন বিশ্বের অন্যতম মহাশক্তিধর বাহিনীকে ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব নয়।
ইতিমধ্যেই খারকিভ থেকে আবারও বাসিন্দাদের চলে যাওয়ার ঢল নেমেছে। ইউক্রেনের বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, রাশিয়া প্রায় পাঁচ ব্যাটেলিয়ন সৈন্যের এক বিরাট বাহিনীকে এই আক্রমণে নামিয়েছে। এতে যে কাজ হয়েছে, মানছেন ইউক্রেনীয় কর্তারাও।
খারকিভ থেকে ভভচানস্কের দূরত্ব প্রায় ৭৪ কিলোমিটার। সেই অর্থে ভভচানস্কের কোনও সামরিক গুরুত্ব নেই। তাও নিরন্তর বোমাবর্ষণ চলছে শহরের ওপর। খারকিভের প্রশাসনিক প্রধান ওলেহ সাইনিয়েহুবভ জানিয়েছেন, রাশিয়া ইচ্ছে করে ছোটোখাটো শহর আক্রমণ করে নিজেদের ফ্রন্টলাইনকে ছড়িয়ে ফেলছে, যাতে ইউক্রেনের বাহিনী আরও সমস্যায় পড়ে। তবে সংবাদসংস্থা রয়টার্সের খবর, আপাতত ইউক্রেন রুশ বাহিনীকে ভভচানস্কে আটকে রাখতে পারলেও, লড়াই অচিরেই নতুন কোনও শহরের দিকে সরে যেতে পারে। প্রায় ৬০০০ স্থানীয় বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এদিকে সংবাদসংস্থা বিবিসিকে নাম গোপন রেখে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর কর্তারা বলছেন, এই অতর্কিত হামলার জন্য কোনওভাবে প্রস্তুতই ছিল না খারকিভ। কিছু জায়গায় রুশ বাহিনী কার্যত বিনা বাধাতে ঢুকে পড়েছে। জনৈক স্থানীয় বাসিন্দা কনস্ত্যানতিন তিমশেঙ্কো যেমন বিবিসিকে বলেছেন, 'মাত্র আধ কিলোমিটার দূরে অটোমেটিক অস্ত্র নিয়ে লড়াই চলছে। এদিকে ট্যাঙ্ক এগিয়ে আসছে শহরের দিকে। আমি ভাবতে পারিনি হঠাৎ এরকমটা হবে। বাধ্য হয়ে আপাতত সরে যাচ্ছি পশ্চিম দিকে।'