শেষ আপডেট: 7th September 2024 15:57
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আরজি করে নির্যাতিতা ডাক্তারি ছাত্রী খুনের প্রতিবাদে আন্দোলিত সমাজ। বিচারের দাবিতে নিত্য নতুন প্রতিবাদ সংগঠিত হচ্ছে। এ ব্যাপারে এবার মুখ খুললেন গত মে মাসে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ আনা রাজভবনের সেই নির্যাতিতা প্রাক্তন অস্থায়ী কর্মী।
একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নির্যাতিতা তরুণী বলেন, "দেখে ভাল লাগছে, আরজি করের নির্যাতিতার বিচার চেয়ে এত লক্ষ মানুষ পথে নামছেেন। মেয়েটি বিচার পাক, আমিও চাই। কিন্তু একই সঙ্গে আক্ষেপ হচ্ছে, নিজের জন্য। আমিও তো নির্যাতনের শিকার। আমার হয়ে কেন সে সময় কেউ পাশে দাঁড়ালেন না?"
খানিক থেমে জবাবও দিয়েছেন নিজেই। তাঁর কথায়,"হতে পারে উনি রাজ্যপাল। সাংবিধানিক পদে আছেন। তাই ওনার বিরুদ্ধে তদন্তও হল না। কিন্তু চাইলে মানুষ তো আমারও পাশে দাঁড়াতে পারতো।"
সে সময় চাকরিতে স্থায়ীভাবে নিযুক্ত করার প্রলোভন দেখিয়ে রাজ্যপাল তাঁর শ্লীলতাহানি করেছেন বলে হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ করেছিলেন তিনি। লোকসভা ভোট পর্বে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য-রাজ্য়নীতিতে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। বোসের বিরুদ্ধে সরব হয় তৃণমূল। প্রাথমিকভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া না দিলেও পরে তাঁর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ নিয়ে ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নোংরা রাজনীতি করছেন’ বলে দাবি করেন রাজ্যপাল। তোপ দেগে বলেন, এই দিদিগিরি তিনি মানবেন না।
পাল্টা হিসেবে এই প্রসঙ্গে সে সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "বাবারে আমাকে আর রাজভবনে ডাকলে যাচ্ছি না, রাজভবনের দরকার হলে রাস্তায় বসে কথা বলে আসব!"
নিজের বিরুদ্ধে ওঠা যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উড়িয়ে রাজভবনে সেদিনের ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখানোর ব্যবস্থা করেছিলেন রাজ্যপাল বোস। পাল্টা হিসেবে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপালকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন, "সাহস থাকলে চেম্বারের ফুটেজ দেখান। বাইরের ফুটেজ দেখিয়ে কী হবে?"
ওই ঘটনার পর শাসকদলের নব নির্বাচিত বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজভবনে শপথবাক্য পাঠ করতেও যাননি। তা নিয়েও অনেক জল ঘোলা হয়েছিল।
এবার আরজি করের প্রতিবাদের আবহে নিজের মনের ক্ষোভ সামনে আনলেন রাজভবনের প্রাক্তন সেই অস্থায়ী কর্মী। ইতিমধ্যে বিচার চেয়ে সুপ্রিমকোর্টের দ্বারস্থও হয়েছেন তিনি। চিঠি পাঠিয়েছেন দেশের রাষ্ট্রপতির কাছেও। নির্যাতিতার কথায়, "আমিও তো একটা মেয়ে। আমার অসম্মান করা হল। অথচ যিনি করলেন তিনি প্রভাবশালী বলে তাঁর বিরুদ্ধে সমাজ চুপ থাকবে, এটা মেনে নিতেও কষ্ট হচ্ছে।"