শেষ আপডেট: 29th February 2024 20:31
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ব্যান্ডেল স্টেশনে রেখে গিয়েছিল ছেলে। মাস দুয়েক পরে পুলিশ, প্রশাসন, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে বাড়ি ফিরলেন বৃদ্ধা। সাত বছরের নাতনিকে খুঁজে পেতেই ঠিকানা পাওয়া গেল বৃদ্ধার পরিবারের।
বেশ অনেক দিন ধরে ব্যান্ডেল স্টেশনের সাত নম্বর প্লাটফর্মে এক বৃদ্ধাকে পড়ে থাকতে দেখেন নবদ্বীপ থেকে যাতায়াত করা ট্রেনের এক নিত্যযাত্রী। যা তিনি সুকুমার উপাধ্যায় নামে এক পুলিশ কর্মীকে জানান। সুকুমারবাবু পুলিশের চাকরির পাশাপাশি বহু অসহায় ভবঘুরে মানুষকে ঘরে ফেরাতে সাহায্য করেন। ভালোবেসে মানুষের পাশে দাঁড়ান চন্দননগর পুলিশের ওই কনস্টেবল। তা জেনেই সুকুমারবাবুর কাছে বৃদ্ধার খবর দেন ট্রেনযাত্রী।
খবর পেতেই একদিন ডিউটি শেষ করে রাতে বাইক চালিয়ে ব্যান্ডেল স্টেশনে পৌঁছন সুকুমারবাবু। বৃদ্ধাকে খুঁজে পেয়ে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন তিনি। বৃদ্ধা জানান, তাঁর নাম রিনা পাল। বাড়ি দুর্গাপুরের ফরিদপুরে। দিন পাঁচেক বৃদ্ধাকে জল বিস্কুট খাবার দিয়ে আসেন সুকুমারবাবু। নানান কথাবার্তায় বৃদ্ধার বাড়ির ঠিকানা জানার চেষ্টা করেন তিনি। তবে মনে করে উঠতে পারেননি রিনাদেবী। তবে ছেলে তাঁকে স্টেশনে রেখে আর যে নিতে আসেনি তা ভুলতে পারেননি তিনি।
এদিকে ছেলের ঠিকানা বলতে না পারলেও বৃদ্ধা জানান, তাঁর এক নাতনি আছে। নাম তাঁর মিষ্টু। বেনাচিতির একটি স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে সে। সুকুমার দুর্গাপুরে তার সহকর্মীদের কাছে বৃদ্ধার ছবি পাঠিয়ে খোঁজ খবর নিতে বলেন। এরপর বেনাচিতিতে বারোটি স্কুল খুঁজে বৃদ্ধার নাতনির খোঁজ মেলে। সেই সূত্রে বৃদ্ধার ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ হয়।
হুগলি জেলা প্রশাসন থেকে বৃদ্ধার খবর পেয়ে তাঁকে চিকিৎসার জন্য চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ব্যান্ডেল থেকে বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করতে সাহায্য করে প্রশাসন। একইসঙ্গে হুগলি জেলা সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার দফতরের তরফে বৃদ্ধার বাড়ি এবং তাঁর ছেলের খোঁজ চলতে থাকে।
বৃহস্পতিবার সুকুমার চুঁচুড়া আদালতে ডিউটিতে ছিলেন। সেখানেই সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অফিসে গিয়ে জানান, বৃদ্ধার বাড়ির খোঁজ তিনি পেয়েছেন। এরপর অতিরিক্ত জেলা শাসক (উন্নয়ন) অমিতেন্দু পাল বৃদ্ধাকে বাড়ি ফেরানোর জন্য নির্দেশ দেন। এরপরই পুলিশ কর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে বৃদ্ধা বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। এদিন বিকালে দুর্গাপুরে পরিবারের কাছে ফিরে যান বৃদ্ধা।