শেষ আপডেট: 23rd February 2024 16:33
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ৬ মার্চ বারাসতে সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর সফর পর্যন্ত সন্দেশখালি বিতর্ক জিইয়ে রাখতে শুভেন্দু অধিকারীরা যে খুবই কৌশলবদ্ধ ভাবে পা ফেলছেন তা এতক্ষণে পরিষ্কার। সন্দেশখালিতে বিজেপির কিছু হলেও সংগঠন রয়েছে। স্থানীয় মানুষের অসন্তোষকে পুঁজি করে বিক্ষোভ ধর্না অব্যহত রাখতে রোজই বিজেপির কোনও না কোনও নেতা সেখানে যাচ্ছেন। তবে শুক্রবার তাৎপর্যপূর্ণ ভাবেই বেশ কিছু ঘটনা সন্দেশখালির ঘটনায় যেন ভিন্ন মাত্রা জুড়ে দিল।
এদিন সকালে সন্দেশখালির শেখ শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা অজিত মাইতির বাড়িতে ভাঙচুর চালায় গ্রামবাসীরা। তাঁর বিরুদ্ধেও জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে গ্রামের মানুষের। শাহজাহানের ভাই শেখ সিরাজুদ্দিনের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ক্ষোভ উগরে দিচ্ছিলেন সন্দেশখালির মানুষ। প্রায় চল্লিশ বিঘা চাষের জমিতে সমুদ্রের জল ঢুকিয়ে সিরাজুদ্দিন ভেরি বানিয়েছেন বলে অভিযোগ। এদিন তাঁর ভেড়ির আলাঘর পুড়িয়ে দেন বিক্ষুব্ধ জনতা। তারপর দুপুর গড়াতেই দেখা গেল, সন্দেশখালির রাস্তায় পুলিশের গাড়ির সামনে গাছের গুঁড়ি ফেলে দেয় গ্রামবাসীরা।
এই সব ঘটনাপ্রবাহ বাংলার অনেক মানুষেরই বেশ চেনা ঠেকছে। তাঁদের মতে, সন্দেশখালিকে এবার নন্দীগ্রাম বানানোর চেষ্টা শুরু হয়েছে। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের অন্যতম নেতা ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সন্দেশখালির ঘটনা নিয়েও শুভেন্দু গোড়া থেকে সক্রিয়। শাসক দলের অভিযোগ, শুভেন্দুরাই ষড়যন্ত্র করে সন্দেশখালিতে অস্থিরতা জিইয়ে রাখছে।
চব্বিশ ঘণ্টার ব্যবধানে এদিন ফের সন্দেশখালিতে গিয়েছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। তিনি সন্দেশখালিতে ঢুকতেই রাস্তার দুপাশের বাড়ি থেকে মহিলারা বেরিয়ে আসেন। গ্রামের মানুষ শেখ শাহজাহান ও সিরাজুদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে শুরু করে। রাজীব কুমার তাঁদের সতর্ক করে বলেন, আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। পুলিশের উপর ভরসা রাখুন। আইজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকারও সেখানে ছিলেন। তাঁকে গ্রামবাসীদের অভিযোগের বিষয়টি দেখতে বলেন রাজীব।
তবে ডিজি সেখান থেকে বেরিয়ে আসার পর সন্দেশখালিতে ধরপাকড় শুরু হয়। প্রায় কুড়ি জনকে আটক করে পুলিশ। এরই প্রতিবাদে রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে শুরু হয় বিক্ষোভ।
এমনিতে নন্দীগ্রাম ও সন্দেশখালির বিতর্কের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। নন্দীগ্রামে চাষের জমি জোর করে অধিগ্রহণ করতে চেয়েছিল সরকার। সন্দেশখালিতে সেই পরিস্থিতি নেই। সেখানে গ্রামবাসীদের শাসক দলের এক জন বা দুজন নেতার বিরুদ্ধে। অর্থাৎ দুটি জায়গায় অসন্তোষের কার্যকারণে মৌলিক ফারাক রয়েছে। তা ছাড়া নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময়ে তৎকালীন শাসক দলের যে ভূমিকা ছিল, বর্তমান সরকারের সেই ভূমিকা দেখা যায়নি। বরং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার কোনও হঠকারী পদক্ষেপ না করে সাবধানে পা ফেলতে চাইছেন।
প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চাইছে প্রশাসন। এখন দেখার সন্দেশখালি কোন দিকে মো়ড় নেয়।