শেষ আপডেট: 24th July 2024 15:02
দ্য ওয়াল ব্যুরো: একদফা বিক্ষোভ পর্বের পর ফের বিধানসভায় শুরু হল অধিবেশন।
অধিবেশন শুরু হতেই নিট কেলেঙ্কারি নিয়ে বিধানসভায় প্রস্তাব আনল শাসকদল তৃণমূল। অন্যদিকে বাংলার শিক্ষা দুর্নীতির প্রসঙ্গ তুলে ধরল বিজেপি। এই প্রসঙ্গে জেলবন্দি রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তাঁর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ টেনে আনেন বিজেপি বিধায়ক দীপক বর্মন। একই সঙ্গে নিট নিয়ে রাজ্যের আনা প্রস্তাবকে অবৈধ বলে দাবি করেন বিজেপি বিধায়ক বিশ্বনাথ কারক।
প্রসঙ্গত নিট কেলেঙ্কারি সামনে আসতেই রাজ্যের হাতে পরীক্ষার ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। ব্রাত্য তখনই জানিয়েছিলেন, "রাজ্যের হাত থেকে সব ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। এটা তার ঐতিহাসিক প্রতিক্রিয়া। ফলে দেশের লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ প্রশ্নচিহ্নের মুখে। আমরা মনে করি, ২০১৬-১৭ র আগে যেমন রাজ্যের হাতে জয়েন্টের পরীক্ষার দায়িত্ব ছিল তেমন ফিরিয়ে দেওয়া হোক। স্বচ্ছতার সঙ্গে রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রাস বোর্ড এটা করতে পারবে।"
এদিন বিধানসভায় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নিট নিয়ে গন্ডগোলের দুটো ধাপ বা স্তর আছে। একটা গ্রেস, আরেকটা নাম্বার জালিয়াতি। ৭২০ পেয়ে এবার প্রথম হয়েছে ৬৭ জন। বিগত বছরে এই নাম্বার পেয়েছিল ১,২,৩ জন। ১৫৬৩ জন পরীক্ষায় সমস্যা কেন্দ্র জানিয়েছে শীর্ষ আদালতে। কাকে কত গ্রেস দেওয়া হয়েছে, কারা পেয়েছে সেটা পরিষ্কার নয়। ৫৯০ নাম্বার পেয়েছেন এবার ৩৫ হাজার জন।এবারের প্রশ্ন কিন্তু সোজা হয়নি। ২০২০ সালে কিছুটা হলেও প্রশ্ন সোজা ছিল। তখনও এত জন এই নাম্বার পায়নি।
ব্রাত্যর কথায়, "আজ হিমশৈলর চূড়া বললাম। এর গভীরতা ও ঘণত্ব অনেক বেশি। পাটনায় কিছু গ্রেফতার হল। তদন্তে দেখা গেল অর্থের বিনিময়ে একটা চক্র চলছিল। চাপে পড়ে এনটিএ তার ডিজিকে সরাল। কিন্তু রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট চেয়ারম্যান আজও বসে আছেন।" মোদীকে কটাক্ষ করে ব্রাত্য আরও বলেন, "গোটা দেশে একজন চুপ করে আছেন নিট নিয়ে। তিনি হলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী।"
এরপরই বিরোধী বিধায়কদের আপত্তি প্রসঙ্গে ব্রাত্যর পাল্টা প্রশ্ন, "এবার বলুন কেন পরীক্ষা কেন্দ্রের থেকে নিয়ে নেওয়া হবে না? কেন বিধানসভায় আলোচনা হবে না?"
এই সময়ই রাজ্যের নিয়োগ দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, "অপার খাটের তলায় ৬১ কোটি দেখেছে বাংলা!" বিজেপি বিধায়ক দীপক বর্মন ও বিশ্বনাথ কারকরা বলেন, "বাংলার হাতে রাজ্যের ডাক্তারি পড়ুয়াদের প্রশ্নপত্র তৈরির ভার দিলে পরিস্থিতি আরও শোচনীয় হবে।"
প্রসঙ্গত ২০২২ সালের ২২ নভেম্বর গভীর রাতের রাজ্যের তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী তথা প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছিল ইডি। পরে পার্থর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দুটি ফ্ল্যাট থেকে নগদ ৫১ কোটি-সহ প্রচুর সোনা ও বিদেশি মুদ্রা বাজেয়াপ্ত করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য-সহ শিক্ষা দফতরের একাধিক কর্তাকেও গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ওই প্রসঙ্গ টেনে এনে রাজ্যকে পাল্টা চাপে রাখার চেষ্টা করেন বিজেপি বিধায়করা।