শেষ আপডেট: 10th July 2024 17:32
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মোবাইল ইন্টারনেটের যুগে হারিয়ে যাওয়া পুতুল নাচ ফিরে এল বৈঁচিগ্রামের রথের মেলায়। একটা সময় গ্রাম বাংলার লোকসংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে ছিল যাত্রা, পুতুল নাচ, কবিগান। রামায়ণ-মহাভারত-সহ পুরানের নানা গল্প পুতুলনাচের মাধ্যমে তুলে ধরা হত। এতে যেমন বিনোদনের উপাদান থাকত, তেমনই হত লোকশিক্ষাও। গ্রামে গ্রামে পুতুল নাচের মঞ্চ বাঁধা হলেই মন উড়ু উড়ু।
সন্ধ্যা হলেই মঞ্চের সামনে পাতা আসনে বসে পড়ত ৮ থেকে ৮০। তারপরেই কালকেতু-ফুল্লরা, বেহুলা-লখিন্দর, হিরণ্যকশিপু-কংসের দুনিয়ায় হারিয়ে যাওয়ার পালা। এখন আর সেই দিন নেই। এখন মানুষের হাতে হাতে মোবাইল ফোন। সেখানে হরেক বিনোদনের উপাদান হাতের কাছেই। ব্রাত্য হতে হতে পুতুল নাচ এখন শুধুই স্মৃতিতে। সেই হারানো পুতুল নাচই ফিরল বৈঁচিগ্রামের রথের মেলায়। দেখুন সেই ছবি।
বহুদিন আগে কালীপদ দাঁ বৈঁচি গ্রামের রথের সূচনা করেছিলেন। আগে পিতলের ৯ চূড়ার রথ থাকলেও পরবর্তীতে তা চুরি হয়ে যায় । বর্তমানে লোহার রথ তৈরি করা হয়েছে। তবে এই রথে জগন্নাথ বলরাম ও সুভদ্রার দেখা পাওয়া যায় না দেখা মেলে দাঁ বাড়ির কুল দেবতা রাজ রাজেশ্বরীর। যা বর্তমানে দাঁ বাড়ির রথের মেলা নামে পরিচিত।
এই মেলাতেই নদিয়ার হাঁসখালি বগুলা থেকে পুতুল নাচের একটি দল এসেছে। রথের দিন থেকে শুরু হয়েছে পুতুল নাচ। চলবে উল্টোরথ পর্যন্ত। রীতিমতো ভিড় জমছে প্যান্ডেলের সামনে।
গ্রামের মানুষ অনেকদিন পর পুতুল নাচ দেখে খুব খুশি। ছেলেবেলায় ফিরে গিয়েছেন অনেক প্রবীণ বাসিন্দাই। আগে এই পুতুল নাচ ছিল বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম। সেই স্মৃতিচারণায় মেতে ওঠেন অনেকেই।
আগে কাঠের পুতুলে নাচ হতো। কিন্তু অনেক ব্যয় সাপেক্ষ হওয়ায় এখন তারের পুতুল নাচানো হয়। জানাচ্ছেন এই শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা।
শিল্পীদের আক্ষেপ ঘরে ঘরে টিভি-মোবাইল ফোন নিয়ে মানুষ ব্যস্ত হয়ে পড়ায় আগের মতো আর পুতুল নাচের জনপ্রিয়তা নেই। তবু ভালবাসাতেই তাঁরা টিকিয়ে রেখেছেন পুতুলনাচের দল।
প্রতিবছরই বসে এই রথের মেলা। হরেক জিনিসের পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। আলোর মালায় সাজে মেলা চত্বর। ভিড় জমে মানুষের।
অহল্যার শাপমোচন, রূপবান ও রহিম বাদশার মতো নানা পৌরাণিক কাহিনী একসময় মঞ্চস্থ হত। দিন বদলালেও পুতুল নাচের মঞ্চ এখনও দখল করে রেখেছেন সেই পৌরাণিক চরিত্ররাই।