শেষ আপডেট: 5 October 2023 08:08
দ্য ওয়াল ব্যুরো: টানা বৃষ্টি ও ধসের জেরে লণ্ডভণ্ড অবস্থা উত্তরবঙ্গে। বিধ্বস্ত কালিম্পং ও দার্জিলিংয়ের মতো বাঙালির অন্যতম প্রিয় দুই পর্যটনকেন্দ্রও। পরিস্থিতি এতটাই ভয়ঙ্কর হয়েছে যে, এই দুই পাহাড় থেকে সরানো হল প্রায় ১,৮০০ জনকে। সূত্রের খবর, দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ের অন্তত ১৫টি জায়গায় ধস নেমেছে। যেহেতু এখনও বৃষ্টি কমেনি, তাই আরও ধস নামার আশঙ্কা রয়েছে। ইতিমধ্যে কালিম্পং জেলায় দশটি ক্যাম্প খোলা হয়েছে। এছাড়াও, ওই জেলার বিপজ্জনক এলাকাগুলি থেকে সরানো হয়েছে প্রায় ১,৬০০ জনকে।
দার্জিলিংয়েও বেশ কয়েকটি জায়গায় ক্যাম্প খোলা হয়েছে। ঘরবাড়ি ছেড়ে এসে সেখানেও আশ্রয় নিয়েছেন বহু সাধারণ মানুষ। টানা বৃষ্টি ও ধসের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জাতীয় সড়ক, গ্রামীণ রাস্তা ও প্রচুর বাড়িঘর। দুই জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, বুধবার পর্যন্ত দার্জিলিং ও কালিম্পং—দুই পাহাড়ে বৃষ্টি ও ধসের জেরে ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা আড়াই হাজার পার করে গিয়েছে। এইমুহূর্তে শিলিগুড়ি-কালিম্পং সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। বন্ধ রাখা হয়েছে সেবক-রংপো রেল প্রকল্পের কাজও। এই ভয়াবহ দুর্যোগে যেভাবে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা বিপর্যস্ত হয়েছে, যে আরও বড় দুর্যোগের আশঙ্কায় রয়েছে পাহারবাসী।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, মঙ্গল থেকে বুধবার বিকেল পর্যন্ত কালিম্পংয়ে বৃষ্টি হয়েছে ১২৮ মিলিমিটার। টানা বৃষ্টির জেরে একাধিক জায়গায় ধস নেমেছে। কোথাও কোথাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে জাতীয় সড়ক। এদিকে সিকিমে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে তিস্তা। ১৯ মাইল, মল্লির মতো এলাকাগুলিতে জাতীয় সড়কের উপর দিয়ে বইছে তিস্তা। লাভা, পেডং, কালিম্পং-১ ও গোরুবাথানের মতো অন্তত ১০টি জায়গায় ভয়াবহ পাহাড়ি ধস নেমেছে। এদিকে রেল প্রকল্পের কাজ চলাকালীন তিস্তার পাড়ে ধসের জেরে রংপোয় আটকে পড়েন চার শ্রমিক। কোথাও কোথাও ধসের জেরে সেতুও ভেঙেছে।
অন্যদিকে বাঙালির প্রিয় দার্জিলিংও ভয়াবহ বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে। গত ২৪ ঘণ্টায় দার্জিলিংয়ের সেন্ট জোসেফ কলেজ ও রাজভবন চত্বরে বৃষ্টি হয়েছে ১২০.৬ এবং ১৩৪.৬ মিলিমিটার। তবে এখানে মূল এলাকায় ধসের দাপট কিছুটা কম। সুখিয়াপোখরি, কার্শিয়াংয়ের মতো কয়েকটি জায়গায় ধস নেমেছে বুধবার। এর ফলে কিছু গ্রামীণ রাস্তাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোথাও কোথাও যান চলাচল একমুখী করে দেওয়া হয়েছে। তবে শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিংগামী ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়ক এখনও স্বাভাবিক রয়েছে। এরমধ্যেই আজ, বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গ পরিদর্শনে যাচ্ছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি যেসব এলাকায় অ্যালার্ট জারি হয়েছে, সেখানেও যেতে পারেন তিনি।