শেষ আপডেট: 13th September 2024 20:05
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আরজি কর হাসপাতালে তরুণী পড়ুয়া-চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার ঠিক চারদিনের মাথায় অর্থাৎ ১৩ অগস্ট এই মামলার তদন্তভার নিয়েছিল সিবিআই। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশেই পুলিশের হাত থেকে তদন্ত সরেছিল সিবিআইয়ের হাতে। ততদিনে পুলিশি তদন্তে গ্রেফতার হয়েছে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়। তার পরে সিবিআই তদন্তের একমাস কেটে গেল। আজ ১৩ সেপ্টেম্বর। এই ক'দিনে আরজি কর মামলায় অন্য কোনও অপরাধীকে ধরা দূরের কথা, নতুন কোনও বিশেষ তথ্যও সামনে আসেনি। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, এই একমাসে তারা কী কী করেছে। কবেই বা ফাইল করবে চার্জশিট।
দায়িত্ব পাওয়ার পরের দিনই দিল্লি থেকে সিবিআইয়ের বিশেষ টিম এসে পৌঁছয় কলকাতায়। টালা থানা থেকে তদন্তের সব নথি সংগ্রহ করে, কয়েকটি ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে পুরোদমে তদন্ত শুরু করে তারা।
একটি দল ফরেন্সিক নমুনা সংগ্রহে পৌঁছয় আরজি করের সেই সেমিনার হলে। আরজি করের আর্টিফিসিয়াল ম্যাপ তৈরি করে।
অন্য দল পৌঁছে যায় নির্যাতিতা তরুণীর সোদপুরের বাড়িতে। ঘটনার দিন ঠিক কী হয়েছিল, পুলিশ তাঁদের কী কী বলেছিল, জানতে চায় নির্যাতিতার বাবা-মার কাছে।
অন্যদিকে, মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে হেফাজতে পাওয়ার পরেই তার মেডিক্যাল টেস্ট করার জন্য এসএসকেএমে নিয়ে যায় সিবিআই। সব পরীক্ষা করার পরে নিয়ে যাওয়া হয় সিজিও কমপ্লেক্সে। তার মোবাইল রেকর্ড ও টাওয়ার লোকেশন খতিয়ে দেখাও শুরু হয়।
১৫ অগস্ট প্রথম সিজিও কমপ্লেক্সে ডাক পড়ে আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের। সেই সঙ্গে ডাকা হয় আরজি করের আরও দুই আধিকারিককে।
আরজি কর তদন্তে সিবিআই টিমে যোগ দেন দুঁদে অফিসার সীমা পাহুজা! হাথরস-কাণ্ডেও তদন্ত করেছিলেন তিনি। আশা বাড়ে, দ্রুতই তদন্তের সমাধান হতে চলেছে।
আরজি করের ধর্ষণ-খুনের মামলার তদন্ত করতে গিয়ে সন্দীপ ঘোষকে একটানা জেরা চলতে থাকে, আর ততই সামনে আসতে থাকে আরজি করের একের পর এক আর্থিক দুর্নীতি-সহ বহু অভিযোগ। সেই সবেরই তদন্তভার সিবিআই-কে নিতে নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।
অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়, অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং আরজি কর হাসপাতালের আরও চার জনের পলিগ্রাফ টেস্ট করে সিবিআই। এ জন্য দিল্লি থেকে আসে বিশেষ দল।
২৫ অগস্ট সাতসকালে সন্দীপ ঘোষের বাড়িতে পৌঁছয় সিবিআই। এক ঘণ্টারও বেশি সময় অফিসারের দাঁড় করিয়ে রেখে তার পরে দরজা খোলেন সন্দীপ। সারাদিন ধরে চলে তল্লাশি। এছাড়াও কেষ্টপুর থেকে বেলগাছিয়া, টালা, হাওড়া, সাঁকরাইল-- বিভিন্ন জায়গায় একাধিক সন্দীপ-ঘনিষ্ঠর বাড়ি চলে তল্লাশি।
২ সেপ্টেম্বর সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করে সিবিআই। সিজিও কমপ্লেক্সে গিয়ে তাঁর মেডিক্যাল টেস্ট করেন চিকিৎসকরা। তার পর থেকেই সন্দীপ ঘোষের, তাঁর স্ত্রী সঙ্গীতা ঘোষের এবং একাধিক আত্মীয়স্বজনের একের পর এক অবৈধ সম্পত্তির হদিস মিলতে থাকে।
৯ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর তদন্তের প্রথম স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেয় সিবিআই। কোন পথে তারা তদন্ত করেছে, কী কী খতিয়ে দেখেছে এবং আগামী দিনে তদন্ত কোন পথে এগোতে চায়, কী কী করবে-- সেসব তথ্য পেশ করে বিচারপতির কাছে। দ্বিতীয় স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা পরবর্তী শুনানির দিন, ১৭ সেপ্টেম্বর।
১৩ সেপ্টেম্বর, তদন্তের এত মাসের মাথায় অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের নার্কো পরীক্ষার অনুমতি চায় সিবিআই, কিন্তু সে অনুমতি খারিজ হয়ে যায় আদালতে।