শেষ আপডেট: 6th November 2023 15:47
দ্য ওয়াল ব্যুরো: রবিবার সকাল তখন ৮.৩০ হবে। বাড়িতে আর কেউ নেই। বিছানার উপর পড়ে রয়েছে এক মহিলার দেহ। সারা শরীর ছুরির কোপে ক্ষতবিক্ষত। গলাও ফালাফালা করে কাটা। রক্ত গড়িয়ে বেরিয়ে এসে শুকিয়ে গেছে ততক্ষণে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে, দেহে প্রাণের চিহ্নমাত্র নেই।
মৃতার আম প্রতিমা কেএস। ঘরে ঢুকেই এই দৃশ্য দেখে চমকে উঠেছিলেন তাঁর ভাই। দিদির নিথর দেহ পড়ে রয়েছে বিছানার উপর, প্রাথমিক সেই ধাক্কা সামলে ওঠার পরেই পুলিশে খবর দিয়েছিলেন তিনি। পুলিশ এই ঘটনায় যাকে গ্রেফতার করেছে, সে ছিল প্রতিমার সদ্য প্রাক্তন ড্রাইভার। সপ্তাহখানেক আগেই তাকে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দিয়েছিলেন মহিলা। পুলিশের দাবি, জেরায় অভিযুক্ত প্রতিমাকে খুনের কথা স্বীকার করেছে। জানিয়েছে, চাকরি থেকে বের করে দেওয়ার রাগেই প্রাক্তন মালকিনকে খুন করেছে সে।
৪৫ বছরের প্রতিমা কর্নাটক সরকারের একজন কর্মী। পেশায় জিওলজিস্ট প্রতিমা বেঙ্গালুরুর সুব্রহ্মনিয়াপুরা এলাকায় থাকতেন। গত ৫ বছর ধরে তাঁর গাড়ির চালক হিসেবে কাজ করত কিরণ নামে এক যুবক। চুক্তিভিত্তিক সরকারি কর্মী ছিল সে। তবে সপ্তাহখানেক আগে তাকে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দিয়েছিলেন প্রতিমা। তার জায়গায় নতুন ড্রাইভার রেখেছিলেন। সেই রাগই পুষে রেখেছিল কিরণ। তখন থেকেই মনিবকে খুন করার ছক কষে রেখেছিল সে।
সূত্রের খবর, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অফিসেই ছিলেন প্রতিমা। তারপর ৮টা নাগাদ নতুন ড্রাইভার গাড়ি চালিয়ে তাঁকে বেঙ্গালুরুর বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে যায়। তারপর থেকে রবিবার সকাল ৮টার মধ্যে তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে অনুমান পুলিশের।
গত ১ বছরেরও বেশি সময় ধরে জিওলজিস্ট হিসাবে বেঙ্গালুরুতে কাজ করছেন প্রতিমা। কাজের জন্যই তাঁর সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল বেঙ্গালুরুর বাইরেও। তিনি অত্যন্ত কর্মঠ এবং দায়িত্ববান ছিলেন বলে দাবি করেছেন তাঁর সহকর্মীরা। এমনকী, তিনি অত্যন্ত সাহসী একজন আধিকারিক ছিলেন বলে দাবি তাঁর সহকর্মীদের। সম্প্রতি তিনি বেশ কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
কিরণকে ইতিমধ্যেই হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। শুধু চাকরি ছাড়ানোর আক্রোশ, নাকি খুনের পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।