শেষ আপডেট: 27th April 2023 04:11
দ্য ওয়াল ব্যুরো, জলপাইগুড়ি: ২০১০ সালে নেওয়া ঋণ এখনও শোধ হয়নি। প্রায় ১৩ বছর ধরে ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া মাত্র ২৩ হাজার টাকা ঋণের বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছেন ময়নাগুড়ির (Mainaguri) বিজেপি বিধায়ক (Debtor BJP MLA) কৌশিক রায়। শেষে গত মঙ্গলবার ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ তাঁকে নোটিস পাঠায়। আর এরপরই স্বামীর সম্মান বাঁচাতে সোজা ব্যাঙ্কে ছোটেন তাঁর স্ত্রী সোনি রায়। গিয়ে গা থেকে একের পর এক গয়না (jewelleries) খুলে ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের হাতে তুলে দেন তিনি। এমন আচরণে স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে পড়ে যান ওই ব্যাঙ্কের ম্যানেজার। ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার নাটকের পর নাটক চলল ময়নাগুড়ির চুকানিপাড়া কৃষি উন্নয়ন সমিতি লিমিটেড ব্যাঙ্কে।
পরে এই ঘটনা নিয়ে সোনি রায় বলেন, "আমার কাছে আমার স্বামীর সম্মান সবচেয়ে বড়। সোনার চেন বেচে দিলে কোনওদিন হয়তো নতুন করে গড়তে পারব। কিন্তু, সম্মান গেলে আর ফিরে আসবে না। সেসব ভেবেই বুধবার সকালে মঙ্গলসূত্র ও হাতের বালা খুলে ব্যাঙ্কের ম্যানেজারের টেবিলে তুলে দিয়েছিলাম।" যদিও সেই গয়না নিতে অস্বীকার করেন ব্যাঙ্ক ম্যানেজার নিধির মণ্ডল। তিনি বলেন, 'এভাবে সোনাদানা নেওয়া যায় না। ব্যাঙ্কের এমন নিয়ম নেই।' এরপরেই যদিও সোনি রায় অন্য এক জায়গায় নিজের গয়না বন্ধক রেখে ২৩ হাজার টাকার সুদ ও আসল-সহ ২৯,৪৭৫ টাকা নগদ ব্যাঙ্কে জমা দেন। ঋণ শোধ হওয়ায় পর কৌশিক রায়ের লোন অ্যাকাউন্ট ক্লোজ করেন ব্যাঙ্ক ম্যানেজার।
বিধায়কের স্ত্রী আরও বলেন যে, 'আমার স্বামী যে সময় ঋণ নিয়েছিলেন, তখনও তিনি স্কুল শিক্ষকের চাকরি পাননি। একটা ছোটখাটো বাঁশের ব্যবসা করতেন। সেই ব্যবসা বাড়ানোর জন্যই ২০১০ সালে ঋণ নেন। ভেবেছিলেন ব্যবসায় কিছুটা উন্নতি হলেই সেই টাকা মিটিয়ে দেবেন। কিন্তু এরপর আরও বড় বিপদ নেমে আসে পরিবারে। গুরুতর দুর্ঘটনার কবলে পড়ে আমাদের ছেলে। কিছুদিনের জন্য কোমাতেও ছিল। সেই কারণেই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঋণ শোধ করতে পারেননি। আর ক'দিনের মধ্যেই ওই ঋণ শোধ করে দিত। কিন্তু আমার স্বামী যেহেতু একজন বিজেপি নেতা ও বিধায়ক, তাই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই ঋণের নোটিসটি সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে বাইরে ভাইরাল করা হল।
এদিকে প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে ব্যাঙ্কের ঋণ পরিশোধ না করার অভিযোগ রয়েছে প্রায় একশজনের নামে, সেখানে কেন শুধু বিজেপি বিধায়ককে পাঠানো নোটিসটাই ভাইরাল হল? এই ঘটনার পিছনে ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন বিধায়ক কৌশিক রায়ের স্ত্রী। ঘটনায় মুখ খুলেছেন বিজেপি বিধায়ক নিজেও। তিনি বলেন, 'আমি বিজেপি করি বলে রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার হলাম। ঋণ খেলাপি প্রায় একশজন রয়েছেন। তারপরও শুধু আমার নামেই নোটিস ভাইরাল হল। এটাকে চক্রান্ত ছাড়া আর কীই বা বলা যায়!'
সপ্তাহান্তে ফের বাড়ছে গরম, বৃষ্টির কী হবে? পূর্বাভাস শোনাল আবহাওয়া দফতর