শেষ আপডেট: 21st March 2019 18:30
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ঋণের ভারে মুখ থুবড়ে পড়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমান পরিবহণ সংস্থা জেট এয়ারওয়েজ। বকেয়া বেতন না পেয়ে এই বিমান সংস্থার অধিকাংশ পাইলট ও ইঞ্জিনিয়ারদের অবস্থা তথৈবচ। ‘‘বেতন পাচ্ছি না। সংসার খরচ চালাতে মায়ের গয়না বন্ধক দিতে হয়েছে। আমাদের বেতনের ব্যবস্থা করুন’’ জেট এয়ারওয়েজের এক পাইলটের কাতর আবেদন এমনই। তাঁদের বকেয়া বেতন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মিটিয়ে দেওয়ার জন্য সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী সুরেশ প্রভুকে চিঠিও লিখছেন জেট এয়ারওয়েজের পাইলটরা। এই মুহূর্তে বাজারে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকার দেনা জেট এয়ারওেজের। যার জেরে বিমানের ভাড়া মেটাতে না পেরে গত কয়েকদিনে একের পর এক বিমান বসিয়ে দিয়েছে তারা। এই মুহূর্তে দেশে জেট এয়ারওয়েজের মাত্র ৪১টি বিমান চলছে। গত তিন মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না সংস্থার পাইলট ও ইঞ্জিনিয়াররা। ৩১ মার্চের মধ্যে তাঁদের বকেয়া বেতন মিটিয়ে না দেওয়া হলে ১ এপ্রিল থেকে তাঁরা বিমান চালাবেন না বলে হুমকিও দিয়েছিলেন দিন কয়েক আগে। ‘‘আমরাও সাধারণ মানুষ। এই চাপটা আর নিতে পারছি না। কতটা আর সহ্য করে নেওয়া যায়, আমাদেরও পরিবার রয়েছে। আমরা দ্রুত এই সমস্যার সমাধান চাইছি,’’ সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন বোয়িং ৭৭৭ জেটের কম্যান্ডার ক্যাপ্টেন করণ চোপরা। পাইলটের কথায়, আগে প্রতি দিন জেট এয়ারওয়েজের ৪৫০ বিমান আকাশে উড়ত। আর্থিক সঙ্কটে জেরবার হওয়ার পর এখন এয়ারওয়েজের বিমান চলছে ১৫০টি। বকেয়া বেতন না পেলেও শুধুমাত্র যাত্রী দুর্ভোগের কথা মাথায় রেখেই বিমান চালিয়ে যাচ্ছেন পাইলটরা। ‘‘১,১০০ জন পাইলট ঠিক করেছেন বেতন হাতে না পেলে ১ এপ্রিল থেকে বিমান চালানো বন্ধ করে দেবেন। আমার বেতন যেমন চাই, সংস্থার তরফে একটা সুস্পষ্ট বিবৃতিও চাই। আমাদের দিনের পর দিন অন্ধাকারে রাখা হচ্ছে,’ দাবি আরও এক পাইলট ক্যাপ্টেন অসিম ভালিয়ানির। তাঁর কথায়, সংস্থা ঝাঁপ ফেললে অন্তত ১,৫০০ পাইলট চাকরি খোয়াবেন। বাজারে এত সংখ্যক পাইলটের অন্য চাকরির বন্দোবস্ত করাটা খুব একটা সহজ কাজ হবে না।’ বিমান সংস্থা সূত্রে খবর, আর্থিক সঙ্কটের জেরে ইতিমধ্যেই শতাধিক পাইলট সংস্থা ছেড়ে চলে গিয়েছেন। গোটা বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও সুরেশ প্রভুকে চিঠি দিয়েছে, জেট এয়ারওয়েজের পাইলটদের সংগঠন ন্যাশনাল অ্যাভিয়েটর্স গিল্ড (এনএজি বা ‘নাগ’) । চিঠিতে বলা হয়েছে, সংস্থার অন্য কর্মীরা নিয়মিত বেতন পেলেও বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে শুধু পাইলট ও ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে। এমন চলতে থাকলে আগামী দিনে জেট এয়ারওয়েজের অবস্থা আরও খারাপ হবে বলেই জানিয়েছেন তাঁরা।