শেষ আপডেট: 6th July 2024 20:57
দ্য ওয়াল ব্যুরো: হাথরাসের মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় স্বঘোষিত ধর্মগুরু নারায়ণ সাকার হরি ওরফে 'ভোলে বাবা'র সহযোগী হিসেবে পরিচিত দেবপ্রকাশ মধুকরকে শুক্রবার দিল্লি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁকে জেরা করেই বিস্ফোরক তথ্য হাতে পেয়ে তারা। তদন্তে উঠে এসেছে, 'ভোলে বাবা'র সঙ্গে একাধিক রাজনৈতিক দলের যোগ ছিল। এমনকী তাদের থেকে টাকাও পেত তাঁর সংস্থা! তাই এখন এই ধর্মগুরুর সংগঠনের আর্থিক লেনদেনের ওপর নজর দিয়েছে পুলিশ।
দুর্ঘটনার পর থেকেই স্বঘোষিত এই ধর্মগুরু 'নিখোঁজ'। যদিও এক সর্বভারতীয় সংবাদসংস্থাকে তিনি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। তাতে ঘটনা সম্পর্কে দুঃখপ্রকাশও করেছেন। কিন্তু যেহেতু তাঁর বিরুদ্ধে সরাসরি কোনও অভিযোগ ছিল না, তাই তাঁকে গ্রেফতার করারও খুব একটা তাগিদ দেখায়নি পুলিশ। তবে ইতিমধ্যে ওই ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে পাটনা আদালতে। পুলিশ দেবপ্রকাশ ছাড়া ঘটনার সঙ্গে জড়িত কয়েক জনকে গ্রেফতারও করেছে। এবার এই 'রাজনৈতিক যোগ'-এর বিষয়টি সামনে আসায় নড়েচড়ে বসেছে তারা।
পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে, দেবপ্রকাশের মূল কাজ ছিল 'ভোলে বাবা'র সংগঠন যে যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে তা পরিচালনার জন্য তহবিল সংগ্রহ করা। সেই সূত্রেই একাধিক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগ ছিল তাঁর। পদপিষ্টের ঘটনার আগে পর্যন্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের থেকে তাদের সংগঠনে টাকা দেওয়া হয়েছে বলেই অনুমান পুলিশের। সেই প্রেক্ষিতেই দেবপ্রকাশের নামে বিগত কয়েক মাসে যে সব আর্থিক লেনদেন হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি তাঁর কল রেকর্ডিং সংক্রান্ত তথ্যও সংগ্রহ করেছে পুলিশ।
উত্তরপ্রদেশ সরকার ইতিমধ্যে উচ্চ পর্যায়ের এক কমিটি গঠন করে দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখা শুরু করেছে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ নিজে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, দোষীদের রেয়াত করা হবে না। তাহলে এই ঘটনায় সামনে আসার পর কি 'ভোলে বাবা' গ্রেফতার হবেন? এই ইস্যুতে অবশ্য পুলিশের বক্তব্য, ঘটনার তদন্ত সবে শুরু হয়েছে এবং সেই প্রেক্ষিতেই গ্রেফতারি হবে। প্রয়োজন পড়লে স্বঘোষিত সেই ধর্মগুরুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।
যদিও সেদিনের ঘটনায় জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি অনেকের মধ্যে এখনও ভোলে বাবার প্রতি গভীর বিশ্বাস দেখা গিয়েছে। হাসপাতালের বেডে শুয়ে যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতেও অনেককে বলতে শোনা গিয়েছে, "ভোলে বাবা (সুজর পাল সিং) আছেন, উনিই আমাদের রক্ষা করবেন।" ঘটনার পরই সৎসঙ্গের আয়োজক কমিটির দুই মহিলা স্বেচ্ছাসেবক-সহ ছ'জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। শুক্রবার প্রধান অভিযুক্ত দেবপ্রকাশ মধুকর গ্রেফতার হন। ধৃতকে শনিবার আদালতে হাজির করানো হলে তাঁকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।