শেষ আপডেট: 27th June 2024 17:04
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব বর্ধমান: চারপাশের অব্যবস্থায় বীতশ্রদ্ধ মুখ্যমন্ত্রী। দফায় দফায় নবান্নে বৈঠক ডেকে সে কথা জানিয়েও দিচ্ছেন তিনি। ব্যবস্থা নিতে চেয়ে তাঁর উদ্যোগে থরহরিকম্প প্রশাসন ও তাঁর দলে। এমনই আবহে নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে বোমা ফাটালেন বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশচন্দ্র সরকার। বললেন, "কাজ করা ভীষণ কঠিন। যেখানেই হাত দিতে যাওয়া হবে ছোবল খেতে হবে।"
বর্ধমান শহরের বিদ্যার্থী ভবন উচ্চ বিদ্যালয়ে জল প্রকল্প উদ্বোধন করতে গিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে এবং পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, "কাগজে দেখি পুলিশ খুব সক্রিয়, বালি চোরদের ধরছে, ছবি দেখতে চাইলে আমি দেখাতে পারি যেখান থেকে আমাদের জল উঠছে তার চারপাশে নৌকাগুলো ঘুরছে আর মেশিনে বালি তুলছে। এরকম যদি ছ'মাস চলে তাহলে তিনশো কোটি টাকা ব্যয়ে অম্রুত প্রকল্পের গ্যালারি ভেঙে পড়বে। আর জল উঠবে না। প্রতিবন্ধকতা বাঁধা আছে সব জায়গাতেই।"
পরেশবাবুর কথায়, "বেআইনি নির্মাণ একজন সাধারণ মানুষ করতে পারে না। তিনতলা থেকে চারতলা এমনি করতে পারে না। নিশ্চয় মদত আছে। হয় তার টাকার জন্য পারে। না হয় কারও মদত আছে। পুকুর ভরাট খুব লাভজনক ব্যবসা।একটা পাঁচ কাটা ছ-কাটা পুকুর যদি ভরাট করতে পারে তাহলে এক কোটি টাকার সম্পত্তি। কোনও রকমে ভরাট করতে পারলেই হল। অথচ ডোবাটা থেকে তার কিছু রিটার্ন নাই। যাঁরা পারে, তাদের কাছেই ভিড়। তারা বেআইনি নির্মাণ করিয়ে দিতে পারে, বেআইনিভাবে পুকুর ভরাট করিয়ে দিতে পারে, সরকারি জমি দখল করিয়ে দিতে পারে, রাস্তাঘাট হাঁটার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। শুধু একটাই কারণ সবকিছুই দুর্নীতিতে ভরে গেছে। সুন্দরভাবে জিটি রোডের পাশে সুন্দর করে পাথরের ফুটপাত তৈরি করা হল, কিন্তু সব ফুটপাত বন্ধ। ফুটপাত জুড়ে চলছে রান্না খাওয়া-দাওয়া থাকা, আর ধরতে গেলেই বলছে পেটে লাথি মারছে।"
সব কিছুতেই কারোর না কারোর লোকের মদত আছে বলেও দাবি করেন বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশচন্দ্র সরকার। তিনি বলেন, "জেলখানা মোড় হয়ে বর্ধমান ইউনিভার্সিটির হোস্টেল মোড় পর্যন্ত গেলে দেখা যাবে দু'পাশে দোকান বসে গেছে। এরা কারা! এরা কেউ বর্ধমানের লোক নয়, বাইরে থেকে এনে টাকার বিনিময়ে তাদের বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদের বসার কারণেই যানজট হচ্ছে, সাধারণ মানুষ অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন। তাদের ধরতে গেলে এক একটা কেউটে সাপের বাচ্চা।কেউ বলে আমার পিছনে অমুক কাকা আছে, আমার পিছনে অমুক দাদা আছে, অমুক মামা আছে, সবার পিছনেই একটা না একটা লোক আছে, আমার পিছনে কেউ নেই। কাজ করা ভীষণ কঠিন যেখানেই হাত দিতে যাওয়া হবে ছোবল খেতে হবে।"
তিনি বলেন, "ছিল জি প্লাস ফোর। একতলা বাড়িয়ে ফাইভ হয়ে গেল। একতলা বেড়ে গেল। পাঁচ-ছ'টা ফ্ল্যাট বেশি হয়ে গেল। ধরতে গেলে এমন সব লোকের নাম বলছে। আইন ভঙ্গকারীদের হিসেবে চিহ্নিত হলেও যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। মুখ্যমন্ত্রী কড়া হয়েছেন। আমরা একটা রূপরেখা তৈরি করে অন্যায় যা হয়েছে তার প্রতিবিধান করার চেষ্টা করব।"
তবে জেলা বিজেপির সভাপতি অভিজিৎ তা বলেন, "শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দল আর সব জায়গাতেই। আর ভাগ নিয়ে সমস্যা। তাই উনি এসব বলছেন।"