শেষ আপডেট: 12th April 2024 14:47
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাঙালির কাছে যেমন পয়লা বৈশাখের গুরুত্ব অপরিসীম। তেমনই পাঞ্জাবেও এই সময় হয় ফসল কাটার উৎসব বৈশাখী। এ বছর আগামিকাল, ১৩ এপ্রিল উত্তর ভারতীয় রাজ্য পাঞ্জাবে ধুমধামের সঙ্গে পালিত হতে চলেছে বৈশাখী উৎসব। শুধু পাঞ্জাব নয়, পৃথিবীর যে প্রান্তসীমায় শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ আছেন, সেখানেই ভক্তি ও নিষ্ঠা সহকারে পালিত হয় এই ফসল ঘরে তোলার এই উৎসব। বৈশাখীর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে পাঞ্জাবের শিখ ধর্ম, সংস্কৃতি এবং ঐতিহাসিক পরাম্পরা।
বৈশাখী হল ফসলের উৎসব। শস্যশ্যামলা কৃষিপ্রধান রাজ্য পাঞ্জাবে একসময় রবি মরশুমের শস্য উঠত এই সময়। তাই সুপ্রাচীনকাল থেকে শিখরা এই উৎসব পালন করে আসছেন। ধর্ম ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য একসুতোয় জড়িয়ে রয়েছে এই উৎসবে। প্রধানত সংসারে সুখ ও সমৃদ্ধির জন্য পালন করা হয় বৈশাখী। পাঞ্জাবের পাশাপাশি হরিয়ানাতেও একইভাবে পালিত হয় এই উৎসব।
সূর্য সিদ্ধান্ত মতে এটা দিনপঞ্জিকার প্রথম মাসের প্রথম দিন। জেনে নেওয়া যাক, কেন, কীভাবে দিনটি পালিত হয় এবং কী তার গুরুত্ব।
রবি শস্যের উৎপাদন এবং নতুন ফসল কাটার আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে ওঠেন কৃষকরা। চৈত্রের অবসানে পঞ্জিকামতে বৈশাখের প্রথমদিনে তাই ঘরে ঘরে, দাওয়ায় দাওয়ায় নেচে ওঠে খুশির হাওয়া। বন্ধু হও, স্বজন হও, যেখানে যে কেহ রও...এর মতো পাড়া-প্রতিবেশী এবং আত্মীয়-বন্ধু-স্বজনরা খুশিতে মেতে ওঠেন। এই উপলক্ষে বিভিন্ন জায়গায় মেলা বসে। সেখানে পাঞ্জাবি লোকসঙ্গীত, লোকনৃত্য, বাজনা, তলোয়ার-লাঠি খেলা প্রদর্শিত হয়।
শিখ সম্প্রদায়ের কাছে এই দিনটির ভিন্ন মহত্ব আছে। বৈশাখী হল শিখদের নতুন বর্ষের সূচনা। ১৬৯৯ সালে বৈশাখীর দিনে শিখদের শেষ গুরু গোবিন্দ সিং খালসা পন্থের প্রবর্তন করেছিলেন। মোঘলদের অত্যাচারের হাত থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করার জন্য এই যোদ্ধাপন্থার সূচনা করেন তিনি। জ্যোতিষমতে বৈশাখী হল, সূর্য এইদিনে মেষরাশিতে প্রবেশ করে। আর তাতেই সূর্যসিদ্ধান্ত অনুযায়ী নববর্ষের সূচনা হয়।
যেহেতু এই উৎসব মূলত কৃষিভিত্তিক, তাই লোক সংস্কৃতিই এই উৎসবের মূল অঙ্গ। পাঞ্জাবে ঢাক-ঢোল সহ নাচগানের আসর বসে। সকালে গুরুদ্বারে গিয়ে পুজোপাঠ এবং আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের মধ্যে নানান সুস্বাদু খাবার রান্না করে বিনিময় এই উৎসবের প্রাচীন ধারা। গুরুদ্বারগুলিতে সারাদিন ধরে চলে ভজন-কীর্তন। কৃষকরা গোলা ভরা ফসলের জন্য গুরু আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন।