শেষ আপডেট: 12th July 2024 18:44
দ্য ওয়াল ব্যুরো, উত্তর দিনাজপুর: আবারও সেই চোপড়া। সালিশি সভায় যুগলের উপর অকথ্য নির্যাতনের ভাইরাল ভিডিওয় সপ্তাহ দুয়েক আগে তোলপাড় হয়েছিল গোটা রাজ্য। এবার সেখানেই পুলিশ বারণ করে আসার পরেও গভীর রাতে মন্দিরে নিয়ে গিয়ে বিয়ে দেওয়া হল নাবালক-নাবালিকার। সাক্ষী থাকল গোটা গ্রাম।
দু-সপ্তাহ আগে চোপড়ায় মধ্যযুগীয় বর্বরতার ছবি সামনে আসে। সালিশি সভায় মারধরের ভাইরাল ভিডিও নিয়ে উত্তাল হয় জাতীয় রাজনীতি। অভিযোগ ওঠে, সমান্তরাল ভাবে গ্রাম্য মাতব্বরদের আইন চলে চোপড়ায়। মূল অভিযুক্ত জেসিবি গ্রেফতারের পর চোপড়ার বিধায়কের কথাতেও খানিকটা স্পষ্ট হয় সেই অভিযোগ। স্বাভাবিক ভাবেই চরম অস্বস্তিতে পরে রাজ্যের শাসকদল। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই চোপড়াতেই আবারো প্রশাসনকে, আইনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে নাবালক নাবালিকার বিয়ে দিল তাদের পরিবার।
চোপড়া ব্লকের হেদলাগছ এলাকার হনুমানগছ গ্রামে বৃহস্পতিবার বছর ১৫-র এক নাবালিকার বাড়িতে ধুমধাম করে বসেছিল বিয়ের আসর। ভোজসভায় ডাকা হয়েছিল গোটা গ্রামের মানুষকে। সংবাদমাধ্যমের কাছে সেই খবর পেয়ে দুপুরেই পুলিশকে নিয়ে ওই বাড়িতে পৌঁছে যান চোপড়ার বিডিও। বিয়ে বন্ধ করতে নির্দেশ দেয়। আয়োজন স্থগিত বলে তখনকার মতো জানিয়ে দেন পরিবারের লোক। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রশাসনের লোকজন চলে আসতেই আবার ক্লাস নাইনের ছাত্রীর সঙ্গে মাধ্যমিক উত্তীর্ণ ছাত্রের বিয়ের তোড়জোড় শুরু হয়। ছাত্রীর এক কাকিমা জানান, গভীর রাতে গ্রামবাসীরা এককাট্টা হয়ে এলাকার মন্দিরে দুই নাবালক নাবালিকার বিয়ে দেয়। তবে তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন না বলেও জানান।
জেলা শিশু সুরক্ষা দফতরের দাবি, জেলা চাইল্ড লাইনের হেল্পলাইন নম্বর, স্থানীয় থানা, বিডিও অফিস, সর্বত্রই রয়েছে। চাইল্ড ম্যারেজ অ্যাক্ট ২০০৬ অনুযায়ী দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তির জন্য সাজার বিধানও রয়েছে। তাই নাবালিকা বিয়ের খবর শুনে ঘটনাস্থলে যাওয়ার পরেও কেন পিছিয়ে আসতে হল প্রশাসনকে,সেই প্রশ্ন উঠছেই।
উত্তর দিনাজপুরের জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক অসিতরঞ্জন দাস বলেন, "প্রশাসনের নির্দেশ সত্ত্বেও বিয়ে বন্ধ না হলে সাজা আছে। সেক্ষেত্রে যাঁরা বিয়েতে রান্না করেছেন, কিংবা পুরোহিত যিনি বিয়ে দিচ্ছেন, তিনিও সাজার আওতায়।" চোপড়ার হনুমানগছ গ্রামে নাবালিকা বিয়ের ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।