মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শেষ আপডেট: 16th May 2024 20:56
দ্য ওয়াল ব্যুরো: হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরিহারা হয়েছিলেন ২৫ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী। মামলা গড়িয়েছিল সুপ্রিমকোর্টে। হাইকোর্টের নির্দেশে আপাতত স্থগিতাদেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
চাকরিহারাদের তালিকায় মেদিনীপুরের সংখ্যাটা বেশ বেশি এবং তাঁরা মুখ খুললে কে বা কারা বিপদে পড়তে পারেন, বৃহস্পতিবার সেই সম্পর্কে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করতে শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
নিয়োগ দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে এদিন তমলুকের সভা থেকে মমতা বলেন, “মেদিনীপুরে কিন্তু সংখ্যাটা বেশি। এই ২৬ হাজার ছেলেমেয়ে মুখ খুলছে না, পাছে সত্যিটা বেরিয়ে পড়ে। কার কাছ থেকে কে কত নিয়েছেন, তাঁরা যদি একবার বলে দেন!"
এরপরই সরাসরি চাকরিহারাদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, "কিচ্ছু না চুপচাপ আমাকে বলে দেবেন, আমি আপনাদের কারও ক্ষতি করতে দেব না। আপনাদের জেলায় চাকরিখেকো বাঘ রয়েছে।”
মমতা সরাসরি কারও নাম করেননি। তবে এর আগেই 'গদ্দার' সম্বোধন করে তাঁকে বলতে শোনা যায়, "যখন শিক্ষকদের চাকরি গেল, তার আগেই বাবুমশাই বললেন, বোমা ফাটাব। তারপরই ২৬ হাজার ছেলেমেয়ের চাকরি ছাঁটাই হল।"
প্রসঙ্গত, হাইকোর্টের ওই রায়ের ৪৮ ঘণ্টা আগে মালদহের সভা থেকে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “আগামী সপ্তাহের শুরুতেই বোমা ফাটবে, তৃণমূল বেসামাল হয়ে যাবে।”
যা থেকে অনেকের মতে, মমতা সরাসরি শুভেন্দুকে নিশানা করেছেন। কারণ, নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসার পর তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ ছিল, পূর্ব মেদিনীপুরে টাকার বিনিময়ে চাকরি বিক্রি করেছিলেন শুভেন্দুও। যদিও সেই সময় শুভেন্দু তৃণমূলের আনা অভিযোগ উড়িয়ে প্রমাণের চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন।
তমলুকে এবারে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিচারপতি থাকাকালীন নিয়োগ মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন অভিজিৎ। এর আগেও নাম না করে তাঁকে 'চাকরি খেকো বাঘ' বলে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল নেত্রী।
ফলে এদিনের সভা থেকে একদিকে নিয়োগ দুর্নীতির জন্য শুভেন্দুকে এবং পাইকারিহারে যোগ্য-অযোগ্যদের চাকরি ছাঁটাইয়ের রায়ের জন্য হাইকোর্টের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কেই তৃণমূল নেত্রী নিশানা করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে মুখ্যমন্ত্রীর এদিনের মন্তব্য নিয়ে শুভেন্দু বা বিজেপি প্রার্থী অভিজিতের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও জানা যায়নি। তবে চাকরিহারাদের উদ্দেশে প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে মমতার দেওয়া বার্তা নিয়ে দুই মেদিনীপুরে তো বটেই নতুন করে শোরগোল তৈরি হয়েছে রাজ্যজুড়ে। বিষয়টি নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে চাকরিহারাদের মধ্যেও।