শেষ আপডেট: 18th March 2024 15:46
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ফলাফল জানাই ছিল। কারণ, বিরোধী পক্ষ ছিলই না বলা চলে। ফলে রাশিয়ার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভ্লাদিমির পুতিনের জয় এবং পঞ্চমবার দেশটির প্রেসিডেন্ট হওয়া ছিল সময়ের অপেক্ষা। তবে ৮৭ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে ক্ষমতা দখল করবেন এমনটা কেউই ভাবেননি। পুতিনের ঘনিষ্ঠতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির নিকোলাই খারিতোনভ। তাঁর ঝুলিতে পড়েছে মাত্র চার শতাংশ ভোট। বাকি দুই প্রার্থী আরও কম। গত শনিবার থেকে তিনদিন ধরে ভোট নেওয়া হয়েছে রাশিয়ায়।
আমেরিকা সহ পশ্চিমি দুনিয়া আগেই এই নির্বাচন প্রহসন এবং পুতিনের স্বেচ্ছাচার বলে মন্তব্য করেছিল। ভোটের ফল প্রকাশের পর তাদের সেই অভিযোগ আগও জোরালো হয়েছে। যদিও দেশে বিরোধী দলগুলি কার্যত নীরব। মনে করা হচ্ছে পুতিনের ভয়েই তারা এই অবস্থান নিতে বাধ্য হয়েছেন। বেশিরভাগ সংবাদমাধ্যমও অবাধ, স্বচ্ছ নির্বাচনের সার্টিফিকেট দিয়েছে প্রেসিডেন্টকে। এবারের জয়ের সুবাদে রাশিয়ার দুশো বছরের ইতিহাসে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকার রেকর্ড গড়তে চলেছেন পুতিন। ১৯৯৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রেসিডেন্ট অথবা প্রাইম মিনিস্টার হিসাবে ক্ষমতা ভোগ করে আসছেন তিনি।
পুতিনের প্রতিপক্ষ বলতে ছিল সদ্য প্রয়াত অ্যালেক্সেই নাভালনির দল। জেলে বন্দি থাকা থাকাকালীন অবস্থায় গতমাসে আচমকাই মারা যান ৫২ বছর বয়সি রাশিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় বিরোধী নেতা এবং পুতিনের কঠোর সমালোচক নাভালনি। তাঁর অবর্তমানে বাস্তবে নাভালনির দলের লড়াইও প্রতীকি হয়ে দাঁড়ায়। নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া বার্লিনে রুশ দূতাবাসে ভোট দিয়েছেন। ভোটদানের পর তিনি বলেন, ‘আমি ব্যালট পেপারে আমার প্রয়াত স্বামীর নাম লিখে এসেছি।’
শুধু ইউনিয়া নন, এবারের ভোটে বিরোধীদের অনেকেই ব্যালটকে প্রতিবাদপত্র হিসাবে ব্যবহার করেছেন। পুতিন তাদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ব্যালট নষ্টকারী ভোটারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বিশ্ব জুড়ে রাশিয়ার ভোটের নিন্দামন্দ নিয়ে পুতিন কান না দিয়ে দাবি করেছেন, ‘আমাদের নির্বাচন গোটা বিশ্বের কাছে ভোট গণতন্ত্রের আদর্শ হিসাবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’
এবারের নির্বাচনে রাশিয়া অধিকৃত ইউক্রেনেও ভোট নেওয়া হয়। সেখানকার বাসিন্দাদের উৎসাহ দিয়ে বাড়তি সময় বরাদ্দ ছিল। তাতেও স্থানীয় বাসিন্দারা যথেষ্ট আগ্রহ না দেখানোয় সেনা বাহিনী ব্যালট বাক্স নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট নেওয়ার ব্যবস্থা করে।
ইউক্রেন নিয়েই ন্যাটো-সহ রুশ-বিরোধী পশ্চিমি দুনিয়ার তৎপরতা নিয়ে হুঁশিয়ারির সুরে বলেছেন, এই সংঘাত পৃথিবীকে তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেবে।
অন্যদিকে, জার্মানি রাশিয়ার ভোটকে ‘সাজানো নির্বাচন’ বলে অভিহিত করেছে। ব্রিটেনের বিদেশ মন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন রাশিয়া অধিকৃত ইউক্রেনে নির্বাচনকে অবৈধ বলেছেন। অন্যদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কির মতে, স্বৈর শাসকের ক্ষমতায় থাকা নিশ্চিত করতেই এই প্রহসনের ভোটের আয়োজন করা হয়েছিল।