Advertisement
Advertisement
শেষ আপডেট: 22 September 2023 12:20
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কেরল থেকে ফেরা বাংলার পরিযায়ী শ্রমিক কি নিপা ভাইরাসে (Nipah virus) আক্রান্ত? উপসর্গ দেখে কলকাতার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। স্বাস্থ্য দফতরের কড়া নজরদারিতে যুবকের চিকিৎসা শুরু হয়। তাঁর শরীর থেকে নেওয়া নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল পুণের ল্যাবে। সেই রিপোর্ট হাতে পেয়েছে স্বাস্থ্যভবন।
কেরলে নিপা ভাইরাসের (Nipah virus) সংক্রমণ বেড়েছে। প্রতি বছর এই সময়েই কেরলে নিপার সংক্রমণ বাড়ে। বাংলা থেকে অনেক শ্রমিকই কাজের জন্য কেরলে যান। পুজোর মুখে বাড়ি ফেরেন তাঁরা। ওই যুবকও কেরল থেকে ফিরেছেন সম্প্রতি। জানা গেছে, বাড়ি ফিরেই জ্বর হয় তাঁর। গায়ে ব্যথা, পা ফুলে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে ফুসফুসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে যুবককে বেলেঘাটা আইডিতে ভর্তি করা হয়।
পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি থেকে যুবকের নমুনা পরীক্ষা করে পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্ট দেখে স্বাস্থ্যভবন জানিয়েছে, আতঙ্কের কিছু নেই। যুবকের নিপা ভাইরাস টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। স্বাস্থ্যভবন জানিয়েছে,, তারা প্রথম থেকেই পরিস্থিতির উপর নজর রাখছিলেন। কিছু কিছু উপসর্গ মিলে গেলেও ওই যুবকের আর কোনও শারীরিক অবনতি হয়নি। তবে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট থাকায় তাঁর চিকিৎসা চলছে হাসপাতালে।
২০০১ সালে নিপা ভাইরাস মাথাচাড়া দিয়েছিল ভারতে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত দু’বছর ধরে করোনা আতঙ্কে নিপা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে কোনও সচেতনতাই তৈরি হয়নি। এখন ফের একবার এই সংক্রামক ভাইরাস মাথাচাড়া দিয়েছে। কেরলে ইতিমধ্যেই এই ভাইরাসের সংক্রমণে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। দেশের অন্যান্য রাজ্যেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
নিপা ভাইরাসকে (Nipah virus) বলে জুনটিক ভাইরাস (Zoonotic Virus), অর্থাৎ পশুর থেকে মানুষের শরীরে ছড়াতে পারে। এই ভাইরাসের বাহক বলা হয় বাদুড়কে। ফ্লাইং ফক্স (বৈজ্ঞানিক নাম পিটারোপাস মিডিয়াস) নামে এক ফলভোজী বাদুড় এই ভাইরাসের বাহক। বাদুড় থেকে কুকুর, বিড়াল, ছাগল, ঘোড়া বা ভেড়ার শরীরে মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়াতে পারে। আক্রান্ত পশুদের দেহের অবশিষ্টাংশ, বা মলমূত্র থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে।
করোনাভাইরাস যেমন আরএনএ (রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড) ভাইরাস, নিপাও (Nipah virus) তাই। প্যারামাইক্সোভিরিডি পরিবারের অন্তর্গত, হেনিপাভাইরাস গণের। ১৯৯৯ সালের আগে অবধি এই ভাইরাসের কথা শোনা যায়নি। ১৯৯৪ সালে অস্ট্রেলিয়ায় হেন্দ্রা ভাইরাস (HeV) ছড়িয়ে পড়ে, নিপাও অনেকটা এরই মতো। ১৯৯৮ সালে মালয়েশিয়ার একটি গ্রামে নিপা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। সেই গ্রামের নাম থেকেই ভাইরাসের এই নাম দেওয়া হয়।
নিপার কোনও চিকিৎসা নেই
নিপা ভাইরাস (Nipah virus) আক্রান্ত হলে কোনও নির্দিষ্ট ওষুধ নেই, আক্রমণ প্রতিরোধ করার মতো কোনও টিকা আবিষ্কৃত হয়নি। ফলে মৃত্যুর হার বিশ্বে গড়ে প্রায় ৭৫ শতাংশ। রোগের উপসর্গ প্রথম অবস্থায় অন্য যে কোনও ভাইরাস সংক্রমণের মতোই। জ্বর, মাথাব্যথা, বমি। কিন্তু এর পরের ধাপেই ভাইরাস তার খেলা দেখাতে শুরু করে। মাথায় পৌঁছে যায় সংক্রমণের রেশ। শুরু হয় খিঁচুনি। গলা ব্যথা, তীব্র শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকে রোগী। বাড়াবাড়ি সংক্রমণে ২৪–৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রোগী কোমা স্টেজে চলে যেতে পারেন৷ মস্তিষ্কের প্রদাহ শুরু হয়, হৃদপেশিতেও প্রদাহ হয় অনেকের। এনসেফ্যালাইটিস ও মায়োকার্ডিটিসে আক্রান্ত হয় রোগী।
আরও পড়ুন: বাংলাজুড়ে তাণ্ডব করছে ডেঙ্গি, সল্টলেকে প্রাণ গেল বৃদ্ধের
Advertisement
Advertisement