শেষ আপডেট: 15th January 2024 19:03
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পৌষের শেষ রবিবার জাঁকিয়ে ঠাণ্ডা পড়েছিল কলকাতায়। শীত পড়লে এমনিই অন্যরকম দেখতে হয়ে যায়, আলিপুর এলাকা। হাতে হাতে কমলালেবু আর বাহারি সোয়েটার গায়ে চিড়িয়াখানার বাইরে লম্বা লাইন, সে বড় মনোরম ছবি। রবিবার সেই ভিড়টা একটু এদিকেও এসেছিল। কালীঘাট লাগোয়া আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের দিকে। কারণ, কথা ছিল হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গাড়িটি আসবে। সঙ্গে উত্তম কুমারের গাড়িটাও।
বাংলায় স্বাধীনোত্তর সময়ে এই দুয়ের জুটি কিংবদন্তি হয়ে রয়েছে। যেন উত্তম কুমারের জন্যই তৈরি হয়েছিল হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের অমন কণ্ঠস্বর। বা উল্টোটা। হেমন্তর গানে লিপ দেবেন বলেই উত্তমের নায়ক হওয়া।
আলিপুর সেন্ট্রাল জেল এখন মিউজিয়াম হয়ে গিয়েছে। বন্দিরা আর নেই। রবিবার দুপুরে সেখানেই পুরনো গাড়ির মেলা বসেছিল। আলিপুর জেল মিউজিয়াম এবং ক্লাসিক ড্রাইভার্স ক্লাব মিলে আয়োজন করেছিল এই ভিনটেজ কার শো। সযত্নে বাঁচিয়ে রাখা একের পর এক দাঁড় করানো ভিনটেজ গাড়ি। কোনওটি জার্মান মেক তো কোনওটি মার্কিনি। সেই সঙ্গে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার বেশ কিছু বাইক।
প্রত্যেকটি গাড়ির রয়েছে নিজস্ব ইতিহাস, নিজস্ব গল্প। সেই গল্প শোনানোর জন্য আদুরে শীতের দুপুরে তাদের কিপাররাও ছিলেন মেলায়। তবে এই প্রদর্শনীর মূল আকর্ষণ ছিল হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের ব্যবহার করা বিখ্যাত গাড়িটি। ১৯৪৮ সালে তৈরি প্লেমাউথ। গাড়িটিকে ভালবেসে ‘নীলু’ বলে ডাকতেন গায়ক হেমন্ত কুমার। এখন সেই গাড়ির মালিক হলেন স্বপনকুমার লাহিড়ী।
উত্তম কুমারের নিজের গাড়িটি এই শোতে আসেনি ঠিকই। কিন্তু এমন একটি গাড়ি ছিল, যেটি ‘শুধু একটি বছর’ ছবিতে উত্তম কুমারকে ড্রাইভ করতে দেখা গিয়েছিল। ১৯৩৫ সালে তৈরি ফোর্ড ১০ ট্যুরার। এই গাড়িটি বর্তমান মালিক রণজিৎ গুপ্ত। জানা গিয়েছে, সেই সময়ে কলকাতা শহরে এরকম আটটি গাড়ি এসেছিল।
মোট ৭৫টি ভিনটেজ গাড়ি ও মোটর সাইকেল উপস্থিত ছিল রবিবারের এই প্রদর্শনীতে। ক্লাসিক ড্রাইভার্স ক্লাবের এই প্রদর্শনীতে ঢোকার জন্য আলাদা কোনও টিকিটের ব্যবস্থা ছিল না। মিউজিয়ামে ঢোকার জন্য টিকিট কাটলেই সাধারণ মানুষ পেয়ে যাচ্ছিলেন এই প্রদর্শনী দেখার সুযোগও। ছুটির দুপুরে সারি সারি পুরনো আমলের গাড়ির এবং বাইকের উপস্থিতিতে আলিপুর মিউজিয়াম চত্বর যেন হয়ে গিয়েছিল একটুকরো পুরনো কলকাতা।