শূন্য ডিগ্রির নীচে তাপমাত্রা, তার মধ্যে বসেই ডিপ ব্রিদিং করছেন সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়।
শেষ আপডেট: 17th April 2024 12:38
দ্য ওয়াল ব্যুরো: তাপমাত্রা হিমাঙ্কেরও চার ডিগ্রি নীচে। হাড়হিম ঠান্ডায় রক্ত অবধি যেন জমে যায়। চারদিকে বরফে ঢাকা পাহাড়। চাপ চাপ বরফের স্তরের উপর খালি গায়ে বসে ডিপ ব্রিদিং করছেন একজন সুঠাম পুরুষ। শ্বাসের গভীর ব্যায়াম শেষ করেই মাথা নীচে পা উপরে তুলে শীর্ষাসন করছেন তিনি। সেভাবেই আদুল গায়ে। এই ভিডিও তুমুল ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
এই ব্যক্তির পরিচয় জানলে চমকে উঠতে হয়। চিনে রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রধান বঙ্গসন্তান সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায় নিজে সাড়ে চার মিনিটের একটি ডকুমেন্টারি করেছেন। এই ভিডিও এখন চিনের সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল ভাইরাল হয়েছে। রীতিমতো নেটিজেনদের নাড়িয়ে দিয়েছে। এই ডকু-ছবিতে সিদ্ধার্থ দেখিয়েছেন কীভাবে সাব-জিরো তাপমাত্রায় খালি গায়ে কঠিন থেকে কঠিনতম যোগব্যায়াম করছেন তিনি। কখনও শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম, আবার কখনও শীর্ষাসন, স্ট্রেচিং। এই ডকুমেন্টারিতে সিদ্ধার্থ বলছেন, এইভাবে ব্যায়াম করলে করোনার মতো যে কোনও ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচা সম্ভব। এতে শরীরের ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।
VIDEO | Siddharth Chatterjee, the head of the #UN in China, is making waves on Chinese social media where he showcased his tough yoga and fitness exploits, including breathing exercises in sub-zero temperatures, which he says helped him to maintain physical and mental… pic.twitter.com/4q5nifvJHC
— Press Trust of India (@PTI_News) April 16, 2024
চিনা কূটনীতিক সিদ্ধার্থের কথায়, “শ্বাসপ্রশ্বাসেই প্রাণ চলছে। জীবন শুরু হয় শ্বাস দিয়ে, মৃত্যুর সময় শ্বাসই বন্ধ হয়। তাই শ্বাসের ব্যায়ামই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে।” যে কোনও রকম সংক্রমণজনিত ব্যধি থেকে বাঁচতে কী ধরনের ব্যায়াম করা জরুরি তা ধাপে ধাপে শিখিয়েছেন সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলছেন এমন যোগব্যায়াম শুধু শরীর ঠিক রাখবে তা নয়, মনকেও শান্ত ও সংযত রাখবে। শারীরিক ও মানসিক শক্তির বিকাশ হবে। এই ডকুমেন্টারির নাম দিয়েছেন, ‘’ব্রিদিং ফর গুড হেলথ।
চিনে রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রধান সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আরও একটি পরিচয় আছে. তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ছিলেন একসময়। এলিট প্যারা রেজিমেন্টের উচ্চপদস্থ অফিসার ছিলেন সিদ্ধার্থ। তিনি ছিলেন ইন্ডিয়ান পিস কিপিং ফোর্সে (IPKF)। ১৯৯৫ সালে তিনি গ্যালান্ট্রি পান।
সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পরিবার বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় চলে আসে বহু আগেই। এই বঙ্গসন্তানের মজ্জায় মিশে আছে বাঙালিয়ানা। জানিয়েছেন, ২০২০ সালে চিনে রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তার জীবনধারায় অনেক বদল আসে। একটা সময় ওবেসিটি, হাই কোলেস্টেরল, হাইপারটেনশনে, প্রি-ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন তিনি। তারপর যোগব্যায়াম শুরু করেন। শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম-সহ নানা কঠিন যোগা করে তিনি ২৫ কেজি ওজন কমান। সেইসঙ্গেই আনুষঙ্গিক সব রোগব্যাধিও কমতে শুরু করে। মনের জোর, আত্মবিশ্বাস ফিরে আসে। ৬০ বছর বয়সেও কাজের উৎসাহে কোনও ঘাটতি হয় না তাঁর।