শেষ আপডেট: 6th October 2023 14:49
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পাহাড় মানেই একদিকে যেমন দার্জিলিং, গ্যাংটক, আবার অন্যপ্রান্তে হিমাচলের মানালি কিংবা মুসোরি-নৈনিতাল সহ উত্তরাখণ্ড। কিন্তু গত এক বছর ধরেই পাহাড় ভ্রমণ যেন বিশবাঁও জলে। চলতি বছরের জুলাই মাসে বিয়াস নদীর তাণ্ডবে বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছিল মানালি। এরও আগে উত্তরাখণ্ডে মেঘভাঙা বৃষ্টির দাপট। আর এবার হড়পা বানে বিপর্যস্ত সিকিম। এর আঁচ পড়েছে উত্তরবঙ্গের পর্যটনেও। তাহলে পুজোয় পাহাড় ভ্রমণের বিকল্প গন্তব্য কোথায়? ভাবাচ্ছে পর্যটকদের, চিন্তায় ট্যুর অপারেটররা।
সিকিমের লোনক হ্রদ ফেটে তিস্তায় আসা হড়পা বানের জেরে বহু জায়গায় জাতীয় সড়ক কার্যত মুছে গিয়েছে৷ প্রাণহানি, দুর্ভোগ, যোগাযোগ-বিচ্ছিন্নতা সহ সিকিমের দুর্যোগে এ বার পর্যটন নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন মাথাচাড়া দিয়েছে। পুজোয় ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা মোটামুটি অনেকদিন আগে থেকেই শুরু করে দেয় বাঙালি। আর এবছর পাহাড়ে ভ্রমণের জন্য হিমাচল কিংবা উত্তরাখণ্ডের প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনার পর সিকিম ও উত্তরবঙ্গকেই পছন্দের তালিকায় প্রথমে রেখেছিলেন পর্যটকরা। পুজোর ঠিক দু’সপ্তাহ আগেই সেই পরিকল্পনায় জল ঢেলে দিল মেঘ ভাঙা বৃষ্টি আর হড়পা বান। এদিকে হোটেল থেকে গাড়ি— সব বুকিং সারা। কিন্তু রাস্তা সারিয়ে রাতারাতি সিকিমে যাওয়া সম্ভব হবে কি? পর্যটকদের থাকার মতো পরিস্থিতিতে সপ্তাহ খানেকের মধ্যে কি ফিরতে পারবে উত্তর-পূর্বের এই পাহাড়ি রাজ্য? বিভিন্ন প্রশ্ন দানা বাঁধছে সকলের মনে।
উত্তর সিকিমের বিস্তীর্ণ অঞ্চল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই এই পুজোতে লাচেন, লাচুং-এ ঘুরতে যাওয়ার আশা নেই বললেই চলে। কিন্তু উত্তর সিকিম ছাড়াও পশ্চিম সিকিমের পেলিং, রাবাংলা, গ্যাংটক সহ সিকিমের আরও অন্যান্য অঞ্চলেও পর্যটকদের ট্যুর প্ল্যানে থাকে। তবে কি সেই সব জায়গাতে ঘোরার পরিকল্পনাও বাতিল করতে হবে? সিকিম প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত পর্যটকেরা যেন সেখানে বেড়াতে না যান। ছাঙ্গু লেক এবং নাথু লা-র পারমিট অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। বর্তমানে সিকিমে যাতায়াতের তিনটি রাস্তা রয়েছে। দু’টি কালিম্পং হয়ে, অন্যটি দার্জিলিং থেকে জোড়থাং হয়ে। তবে এই রাস্তায় ছোট গাড়িই চলাচল করতে পারে। সেটির অবস্থাও তেমন ভালো নয়। সে পথ দিয়ে ফেরার জন্য দ্বিগুণ ভাড়া হাঁকছেন অনেক চালক।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে সিকিমের পাশাপাশি গোটা পাহাড়ের পর্যটনেই প্রভাব পড়ছে। আপাতত ট্রাভেল এজেন্টদের কাছে ফোন করে কেউ বুকিং বাতিল করতে চাইছেন, কেউ গন্তব্য বদলাতে আবেদন জানাচ্ছেন। তবে অনেকেই আবার আর কিছুদিন দেখে নিতে আগ্রহী। ইতিমধ্যে রাস্তা সারানোর কাজ শুরু হয়েছে পুরোদমে। ট্যুর অপারেটরদের আশা, পুজোর আগে যে ভাবেই হোক যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি করে ফেলা যাবে। তাঁদের মতে, পুজোর এখনও বাকি রয়েছে। তাই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কাজ হতে থাকলে সব ঠিক হয়ে যাওয়ার আশা রয়েছে।